E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আজ বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস

রাঙ্গাবালীতে চিকিৎসা সেবা নিয়তি নির্ভর!

২০১৮ এপ্রিল ০৭ ১৭:২৭:১০
রাঙ্গাবালীতে চিকিৎসা সেবা নিয়তি নির্ভর!

সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) : নদী আর সাগর বেষ্টিত জনপদ। প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। কেবল ঝাড়ফুঁক তাদের ভরসা। অ্যাম্বুলেন্স তো দূরের কথা রিকশাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কিংবা একজন এমবিবিএস ডাক্তার পর্যন্ত নেই। লোকজন নিয়তির ওপর নির্ভর করে বেঁচে আছে। এই একুশ শতকেও আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে তারা বঞ্চিত। এ অবস্থা পটুয়াখালী জেলার সর্বদক্ষিণে অবস্থিত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাঙ্গাবালী উপজেলার। 

এটির উত্তরে আগুনমুখা, পশ্চিমে রামনাবাদ, পূর্বে তেঁতুলিয়া নদী ও দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। ২০১২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এই উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হয়। দীর্ঘ ছয় বছর অতিবাহিত হলেও স্বাস্থ্যসেবা থেকে আজও বঞ্চিত এই জনপদের মানুষ। এই জনপদের মানুষের এখন সময়ের দাবি- দ্রুত এই উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হোক।

কোড়ালিয়া গ্রামের আল আমিন হিরণ বলেন, ‘এমন উপজেলায় বাস করি, যেখানে একজন এমবিবিএস ডাক্তারও নেই। আর হাসপাতাল তো অনেক দূরের কথা। এখানকার লোকজন এখনো আদিকালের হেকিম-কবিরাজের ঝাড়ফুঁক ও ক্যানভাসারের তাবিজ-কবজের ওপর ভরসা করে।’

স্লুইস বাজার এলাকার একে আজাদ সাথী বলেন, ‘আমাদের এলাকাটা খুবই দুর্গম জনপদ হিসেবে পরিচিত। নদী কেন্দ্রিক যোগাযোগ। আমাদের উপজেলায় হাসপাতাল না থাকায় অসুস্থ রোগীদের পার্শ্ববর্তী উপজেলা কিংবা জেলায় নদীপথে নিতে হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯১ সালে রাঙ্গাবালী, ছোটবাইশদিয়া ও চরমোন্তাজে একটি করে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হলেও বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নে আজও হয়নি। চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নে একটি আরডি (রুরাল ডিসপেনসারি) থাকায় সেখানে কোনো স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি। এ কেন্দ্রগুলোতে চলছে নামমাত্র চিকিৎসা । নেই কোনো এমবিবিএস ডাক্তার। এমনকি স্ত্রোপচারের বা প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই।

সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল কর্মকর্তা ও পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা নিয়োগ থাকলেও মুমূর্ষু রোগীর চিকিৎসা সেবা দেয়া তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। এছাড়া সরকার কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করলেও সেখানে তেমন সেবা মিলছে না। আজ বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে শুক্রবার সকালে সরেজমিন স্থানীয় কয়েকজন লোকের সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হয়।

তারা বলেন, এই উপজেলার লোকজনের ভয়াল নদী পাড়ি দিয়ে দেশের যে কোনো প্রান্তে যেতে হয়। একজন মুমূর্ষু রোগীকে জেলা সদরে নিতে সময়ও লেগে যায় প্রায় ৫-৬ ঘণ্টা। তাও অনেক সময় খেয়া কিংবা লঞ্চ সময় মতো না পেলে দুর্ভোগের আর কোনো শেষ থাকে না।

এ ব্যাপারে পটুয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. শাহ মোজাহিদুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ‘রাঙ্গাবালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য ইতোমধ্যে কাগজপত্র জমা দিয়েছি। বিচ্ছিন্ন এই জনপদে অন্তত ৫০ শয্যাবিশিষ্ট একটা হাসপাতাল নির্মাণ করা-জনগণের প্রাণের দাবি। হাসপাতালের জন্য দ্রুত জমি অধিগ্রহণ হবে।

(এসডি/এসপি/এপ্রিল ০৭, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test