E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নির্মাণের সাত দিনেই ভেঙে গেল গোবিন্দাসীর রাস্তা!

২০১৮ এপ্রিল ১৮ ১৮:৪৫:৫০
নির্মাণের সাত দিনেই ভেঙে গেল গোবিন্দাসীর রাস্তা!

রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের গোবিন্দাসী বাজার থেকে গোবিন্দাসী স্কুলরোড পর্যন্ত  প্রায় দশ লাখ টাকা ব্যায়ে নির্মিত ১৩১ মিটার সড়কটি নির্মাণের সাত দিনেই ভেঙ্গে পড়েছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি উদ্বোধনের আগেই ভেঙ্গে ও দেবে যাওয়ায় অর্থ আত্মসাৎসহ কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। এছাড়াও উপজেলায় কোটেশনের মাধ্যমে চলমান বিপুল অংকের কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা।

সরেজমিনে জানা যায়, গোবান্দাসী বাজার থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব-ভূঞাপুর সড়কে যাতায়তের জন্য বিকল্প কোন ব্যবস্থা নেই। যাতায়তের জন্য গোবিন্দাসী উচ্চ বিদ্যালয়ের স্কুল মাঠটিই একমাত্র ভরসা। বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠি মাঠ ব্যবহার করে যাতায়তের ফলে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ যেমন ব্যহত হয় তেমনি বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয় যাতায়াতকারীদের।

এর ফলে ১৫-১৬ অর্থ বছরে জনগণের দাবি ও জনগুরত্ব বিবেচনা করে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে উপজেলা প্রসাশন। হাট-বাজার ইজারার ১৫ শতাংশ অর্থ থেকে তা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কোটেশেনের মাধ্যমে কাজ দেয়া হয় পছন্দের ঠিকাদারকে। কিন্তু কাজ শেষ না করেই বিল তুলে নেয় ঠিকাদার। তবে রাস্তাটি থেকে যায় যাতায়াতের অনুপোযোগী।

সম্প্রতি আবার সড়কটি যাতায়াত উপযোগী করতে ১৭-১৮ অর্থ বছরে একটি সংস্কার প্রাক্কলন তৈরি করে স্থানীয় সরকারের উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ। কোটেশনের মাধ্যমে কাজ দেয়া হয় শহিদুল এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। গত ২৯ মার্চ দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী অনিক সাহার স্বাক্ষরিত একটি অনুমতি পত্র প্রদান করা হয় ঠিকাদারকে। কাজের মধ্যে ছিলো ১৫ মিটার গাইড ওয়াল সংস্কার, ৮৯ মিটার মাটি দিয়ে গর্ত ভরাট, ১৩১ মিটার দৈর্ঘ ৩ মিটার প্রস্থ ও ৬ ইঞ্চি পুরু সিসি ঢালাই এবং ২ ফুট গভীরতায় এজিং।

স্থানীয়রা জানান, ঠিকাদারের নাম ব্যবহার করলেও মূলত কাজটি করেছেন সম্পন্ন করেছেন গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু। তিনি কাজ সম্পন্ন করতে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে নজিরবহীন অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন। টাকা লোপাট করতে গাইড ওয়াল সংস্কার করা হয়নি।

গাইড ওয়াল সংলগ্ন গর্তে ফেলা হয়নি কোন মাটিই। রাস্তার প্রস্থ তিন মিটারের স্থলে করা হয়েছে পৌনে তিন মিটার। ৬ ইঞ্চি পুরু সিসি ঢালাইয়ের স্থলে করা হয়েছে মাত্র ২ ইঞ্চি। দুই ফিট গভীর এজিং এর স্থলে করা হয়েছে ১ ফুট। এর ফলে কাজ শেষ করার সাতদিনের মাথায় ভেঙ্গে ও দেবে গেছে সড়কটি।

এ বিষয়ে মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু বলেন, নিজে ঠিকাদার অস্বীকার করে বলেন, ঠিকাদারী কাজে একটু উনিশ-বিশ হয়। কাজটা শুরু হয়েছে পূর্বের চেয়ারম্যানের সময়। গাইড ওয়াল ভেঙ্গে যাওয়া ও সড়ক দেবে যাবার ঘটনায় নি¤œমানের কাজ দায়ী নয়। প্রকৌশল বিভাগের প্রাক্কলন ক্রটি ও তদারকির অভাবের জন্যই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা প্রকৌশলী অনিক সাহার সাথে যোগাযোগ করা হয়ে হলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজী হননি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঝোটন চন্দ বলেন, ঘটনাটি জেনে সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। এখনো বিল প্রদান করা হয়নি । প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথাও জানালেন তিনি।

(আরকেপি/এসপি/এপ্রিল ১৮, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test