E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রাণীনগরে আ. লীগ নেতাকে হত্যা চেষ্টা, গ্রেফতার ২ 

২০১৮ এপ্রিল ১৯ ১৮:০৫:৪৪
রাণীনগরে আ. লীগ নেতাকে হত্যা চেষ্টা, গ্রেফতার ২ 

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগরে ক্ষমতাসীন দলের এক নেতাকে পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক হত্যার চেষ্টায় ছুরিকাঘাত করে এলোপাতারি লাঠিপেটা করেছে সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী দল। এসময় তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে সংঘবদ্ধ ৭/৮ জন সন্ত্রাসীদের মধ্যে ৫ জন পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও ঘটনার মূলহোতা নব্য আওয়ামীলীগারসহ তিন জনকে গ্রামবাসী আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশকে খবর দেয়। 

খবর পেয়ে রাণীনগর থানাপুলিশ জনরোসের কবল থেকে গণপিটুনিতে গুরুত্বর আহত অবস্থায় তিন সন্ত্রাসীকে উদ্ধার করে প্রথমে রাণীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। পরে মূলহোতা শহিদুল ইসলামের অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। অপর দুই সন্ত্রাসীকে পুলিশ পাহাড়ায় চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার বিকেলে মামলা দায়েরের পর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

ছুরিকাহত ওই আওয়ামীলীগ নেতাকে হত্যার চেষ্টার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবিতে প্রায় ৪/৫ শ’ লোকজন থানার প্রধান ফটকে দাঁড়িয়ে ঘন্টাব্যাপী অবস্থান নেয়। রাণীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের মুখোমুখি করার আশ্বাস দিলে তারা বাড়িতে ফিরে যায়। এই ঘটনায় রাণীনগর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার মিরাট ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ধনপাড়া গ্রামের আলহাজ্ব ইব্রাহীম শাহ্র ছেলে জিয়াউর রহমান জিয়া (৩৯) প্রতিদিনের মত পার্শ্ববর্তী বান্দাইখাড়া বাজারে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বুধবার দিনগত রাত অনুমানিক ৯টার দিকে নিজ বাড়ির সন্নিকটে পৌঁছা মাত্রই পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা চিহ্নিত ৭/৮ জন সন্ত্রাসী জিয়াকে লক্ষ্য করে প্রথমে চোখে-মুখে বালু ছিটিয়ে দিয়ে ছুরিকাঘাত করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতারি কোপাতে থাকে। তার আত্মচিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পিছু হটার চেষ্টা করে। এক পর্যায় সমস্ত গ্রামবাসী এক যোগে সন্ত্রাসীদের ঘিরে বেধর গণপিটুনি শুরু করে। গণপিটুনি থেকে রেহায় পাওয়ার জন্য এই ঘটনার মূলহোতা মিরাট ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কালিকাপুর গ্রামের সংখ্যালঘু হিন্দুদের মন্দির ও প্রতিমা ভাঙ্গার হোতা শহিদুল ইসলাম পুকুরের পানিতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করলেও গণধোলাই থেকে শেষ পর্যন্ত রেহায় পায়নি।

এদিকে জিয়াউর রহমান নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই ঘটনায় ধনপাড়া গ্রামবাসীরা রাতভর অজানা আতংকে কাটায়। এব্যাপারে জিয়ার বাবা ইব্রাহীম শাহ্ বাদি হয়ে রাণীনগর থানায় ঘটনার মূলহোতা শহিদুল ইসলামের ভাগিনা আত্রাই উপজেলার বড়কালিকাপুর গ্রামের মৃত আজিমুদ্দিনের ছেলে স্বপন হোসেন এবং একই গ্রামের নিরঞ্জন মহন্তের ছেলে প্রসেনজিৎ মহন্তসহ অজ্ঞাতনামা ৬/৭ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ দুই জনকে গ্রেফতার দেখালেও ঘটনার মূলহোতা শহিদুল ইসলাম গুরুত্বর আহত অবস্থায় বগুড়ায় চিকিৎসাধীন থাকলেও রহস্যজনক কারণে পুলিশ তার ব্যাপারে মুখ খুলছে না বা তাকে গ্রেফতারের কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেনা। এমনকি মামলাতে তার নাম না থাকায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

আহত আওয়ামীলীগ নেতা জিয়াউর রহমানের ছোট ভাই জুবায়ের হোসেন জানান, সন্ত্রাসী শহিদুল আওয়ামীলীগের একজন হাইব্রিড নেতা। তার পৃষ্ঠপোষকের নির্দেশেই পুলিশ তাকে ধরার সাহস পাচ্ছেনা। আমার ভাই রাজনীতি করলেও ব্যক্তি জীবনে সে খুব সাদা-মাটা মানুষ। আমরা ব্যবসা করেই জীবন-জীবিকা নির্বাহ করি। হঠাৎ করে শহিদুলের নেতৃত্বে আমার ভাইকে কেন হত্যার চেষ্টা করা হলো? আমি এর সঠিক তদন্ত ও বিচার চাই। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ তিন জনকে থানায় আনলেও শহিদুলকে কেন এখন পর্যন্ত গ্রেফতার দেখানো হলো না? শুরুতেই এই মামলা নিয়ে আমার আশংকা রয়েছে। প্রকৃত দোষীরা কি পাড় পেয়ে যাবে?

মিরাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জানান, আমার যুগ্ন সম্পাদক জিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যেই আটককৃতরা এই হামলা চালিয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

রাণীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ এএসএম সিদ্দিকুর রহমান জানান, জিয়াকে হত্যার চেষ্টা এটা পরিকল্পিত। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ঘটনার সত্যতা পায়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গণধোলাইয়ের শিকার তিন জনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তিন জনের অবস্থায় গুরুত্বর। এঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। আপাততঃ দুই জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রকৃত জড়িতদে

(বিএম/এসপি/এপ্রিল ১৯, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test