E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শেরপুরে হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন 

২০১৮ এপ্রিল ২৭ ১৬:৫০:১০
শেরপুরে হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন 

সোহেল রানা, শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুরে কৃষক নছিমদ্দিন হত্যা মামলার রায়ে ১৯ আসামীর মধ্যে শরাফত আলী (৫০) নামে একজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদ- দিয়েছে আদালত। 

২৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকেলে জনাকীর্ণ আদালতে জেলা ও দায়রা জজ এম. এ. নূর এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আনসার আলী (৫০) ও রফিকুল ইসলাম (৪০) নামে দ্ইুজনের ৫ বছর করে এবং হুসেন আলী (৪৫) ও নুরল ইসলাম (৪০) নামে আরও দুইজনের ৭ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ঘোষণা করা হয়েছে। সাজাপ্রাপ্তদের উপস্থিতিতে ঘোষিত এ রায়ে ১৪ জনের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে। সাজা ও খালাসপ্রাপ্তরা সকলেই সদর উপজেলার চরখারচর গ্রামের বাসিন্দা।

আদালত সূত্রে মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, সদর উপজেলার চরখারচর গ্রামে জমি নিয়ে মামলা-মোকদ্দমায় পূর্ব শক্রতা ছিলো একই গোষ্ঠির নছিমদ্দিন ও আনছার আলীর পরিবারের মাধ্যে। এরই জের ধরে ২০১৩ সালের ১৮ মার্চ বিকেলে নিহত নছিমদ্দিনের ছেলে মামলার বাদী রবিন মিয়া শহর থেকে বাড়ী ফেরার পথে চরখারচর গ্রামে পুর্ব-পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে। এ সংবাদ রবিনের বাড়ীতে পৌঁছলে তার বাবা নছিমদ্দিন ও তার পরিবারের কয়েকজন দৌড়ে এগিয়ে গেলে দেশীয় ধারালো অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে আসামীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে নছিমদ্দিন, তার ছেলে রবিন সহ আরও বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হলে তাদের জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পরবর্তীতে আহতদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ১১ দিন চিকিৎসারত থাকার পর নছিমদ্দিন হাসপাতালেই মারা যায়। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে রবিন মিয়া বাদী হয়ে ২৩ জনকে আসামী করে শেরপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে ২০১৩ সালের ৩০ জুন সদর থানার তৎকালীণ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মামুন মিয়া এজাহারভুক্ত ৭ জনকে বাদ দিয়ে ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন। কিন্তু মামলার বাদীপক্ষ সেই চার্জশীটের বিরুদ্ধে আদালতে না-রাজী দাখিল করলে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডি’তে স্থানান্তর করা হয়। প্রায় এক বছর তদন্তের পর সিআইডি’র তৎকালীণ উপ-পরিদর্শক (এসআই) নওজেশ আলী মিয়া বাদ দেওয়া ৩ জনকে সম্পৃক্ত করে ১৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ১৬ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালতে বৃহস্পতিবার ১ জনের যাবজ্জীবন, ২ জনের ৫ বছর এবং ২ জনের ৭ বছর করে কারাদ- দিয়ে ১৪ জনকে বেকসুর খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করা হয়। সেইসাথে সাজাপ্রাপ্তদের ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদ- অনাদায়ে ৬ মাস ও এক বছর করে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
রায়ে আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তৌহিদুর রহমান সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, রায় বিবেচনাপ্রসুত হয়েছে। আদালত সঠিক বিচার করেছেন। যাদের সাজা হয়েছে, আশাকরি উচ্চ আদালতে আপীলে তারা ন্যয়বিচার পাবেন।

মামলার বাদী রবিন মিয়া রায়ে নিজের হতাশা প্রকাশ করে বলেন, আমরা আশা করেছিলাম আসামীদের কয়েকজনের অন্তত: সর্বোচ্চ সাজা হবে। কিন্তু মাত্র একজনের যাবজ্জীবন এবং ৪ জনের সাজার রায় হয়েছে আর ১৪ আসামীই খালাস হয়েছেন। আমরা আসামিদের অদিকতর সাজা নিশ্চিত করতে এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ২৭, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test