E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

সালিশে ধর্ষিতা পরিবারকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে এলাকাছাড়া

২০১৮ মে ০৩ ১৮:৫০:৩১
সালিশে ধর্ষিতা পরিবারকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে এলাকাছাড়া

মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুর সদর উপজেলার দুধখালী ইউনিয়নের উত্তর দুধখালী গ্রামে ধর্ষণের শিকার এক যুবতীকে সালিশের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে ধর্ষিতার পরিবারকে জোর করে এলাকাছাড়া করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঘটনার ৩দিন পালিয়ে থাকার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে গোপনে মাদারীপুর সদর থানায় উপস্থিত হয়ে ধর্ষক রাসেল খলিফাকে আসামী করে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছে ঐ ধর্ষিতা। পুলিশ তাকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছে। এদিকে প্রভাবশালীদের ভয়ে আবার অজ্ঞাত স্থানে থাকবে বলে ধর্ষিতা জানিয়েছে।

স্থানীয়, পারিবারিক ও ধর্ষিতা সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতে উত্তর দুধখালী গ্রামের হাজাম পরিবারের এক পান দোকানীর মেয়েকে (২২) বাড়ি ফাঁকা পেয়ে জোর করে ধর্ষণ করে একই গ্রামের জৈনদ্দিন খলিফার ছেলে রাসেল খলিফা (২৮)।

ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার সকালে ওই নির্যাতিতা যুবতী তার মায়ের সাথে থানায় মামলা করতে গেলে মাঝপথ থেকেই এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল ওই যুবতী ও তার পরিবারকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে জোর করে এলাকায় নিয়ে যায়।

পরে ঐ দিন দুপুরে তড়িঘড়ি করে স্থানীয় এক প্রভাবশালীর বাড়িতে সালিস বৈঠক বসে। সেখানে ধর্ষণকারী রাসেল খলিফাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। প্রভাবশালী সালিশদাররা জরিমানার টাকা দিয়ে ওই যুবতীকে পরিবারসহ কিছুদিন এলাকা ছেড়ে অন্যত্র থাকার নির্দেশ দেয়া হয়। এই ঘটনার পর থেকে নির্যাতিতা যুবতী ও তার পরিবার অজ্ঞাত স্থানে থাকতে বাধ্য হয়।

৩ দিন পালিয়ে থাকার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে গোপনে মাদারীপুর সদর থানায় উপস্থিত হয়ে ধর্ষক রাসেল খলিফাকে আসামী করে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছে ধর্ষিতা। এই ধরণের একটি স্পর্শ কাতর ঘটনা সালিশে মীমাংসা করায় এলাকার মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

ধর্ষিতা ঐ যুবতী বলেছে, ‘রাসেল আমাকে ধর্ষণ করেছে। আমি আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেলে গোপণে মাদারীপুর সদর থানায় উপস্থিত হয়ে রাসেল খলিফার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেছি। আমি ওর (রাসেল খলিফার) দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। তাছাড়া এলাকায় প্রভাবশালীদের ভয়ে বাড়িতেও যেতে পারছিনা।
দুধখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান হিরু খান বলেন, ঘটনার কথা আমার কানে এসেছে। কিন্তু ঐ মেয়েটির পরিবারের কেউ আমার কাছে আসেনি বা কোন অভিযোগ করেনি।

মাদারীপুর জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার কণা বলেন, মেয়েটির পরিবার অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে সহযোগিতা করা হবে।

এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোহাম্মদ আবু নাইম মামলা দায়েরের কথা নিশ্চিত করে বলেন, ‘নির্যাতিতা থানায় উপস্থিত হয়ে রাসেল খলিফা নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছে। এখন তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।‘

(এএসএ/এসপি/মে ০৩, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test