E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

প্রাইভেট পড়ানোর নামে তিন বছর ধরে ছাত্রী ধর্ষণ, শিক্ষক গ্রেফতার

২০১৮ মে ০৯ ১৬:২৬:২৪
প্রাইভেট পড়ানোর নামে তিন বছর ধরে ছাত্রী ধর্ষণ, শিক্ষক গ্রেফতার

গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর গলাচিপায় প্রাইভেট পড়ানোর নামে তিন বছর ধরে এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে শিক্ষক মোঃ রুহুল আমিন পেয়াদার বিরুদ্ধে। পুলিশ ওই শিক্ষককে এরইমধ্যে গ্রেফতার করেছে। ধর্ষক শিক্ষক অকপটে তার অপকর্মের কথা পুলিশের কাছে স্বীকারও করেছে। পুলিশ শিক্ষককে আদালতে সোপর্দ করেছে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে শিক্ষককে একমাত্র আসামি করে ধর্ষণের অভিযোগ এনে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে। 

মামলার বিবরণ, পরিবার ও অন্যান্য সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক মোঃ রুহুল আমিন পেয়াদা (৩২) গলাচিপা উপজেলার চিকনিকান্দী ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের আঃ করিম পেয়াদার ছেলে। সে ২০০৪ সালে উপজেলার বকুলবাড়িয়া ইউনিয়নের গুয়াবাড়িয়া এবি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে যোগ দেয়। এর পাশাপাশি সে স্কুলে ইংরেজি বিষয়েরও শিক্ষক।

একই স্কুলের ওই ছাত্রী অষ্টম শ্রেণী থেকে শিক্ষক রুহুল আমিনের কাছে ইংরেজি প্রাইভেট পড়া শুরু করে। এ সময় শিক্ষক রুহুল আমিনের কুনজর পড়ে ওই ছাত্রীর ওপর। রুহুল আমিন ছাত্রীকে বিভিন্ন সময়ে কুপ্রস্তাব দেয়। এতে ছাত্রী রাজি না হওয়ায় ইংরেজি পরীক্ষায় ফেল করানোর হুমকি দেয়। ভয়ভীতির এক পর্যায়ে শিক্ষক ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। তিন বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষক ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে আসছে।

সর্বশেষ বাঁশবাড়িয়া গ্রামের জনৈক নাসির খানের ফাঁকা বাড়িতে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে শিক্ষক রুহুল আমিন ওই ছাত্রীকে জোর করে ধর্ষণ করে। ওই ছাত্রী বর্তমানে পটুয়াখালী জেলা শহরের একটি কলেজে এইচএসসি প্রথম বর্ষে পড়াশুনা করছে। কলেজ হোস্টেলের সহপাঠিদের মাধ্যমে ধর্ষণের ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যায়। ছাত্রীর মা এক নিকট আত্মীয়ের মাধ্যমে ঘটনাটি পটুয়াখালী সদর থানার পুলিশকে জানান।

পটুয়াখালী সদর থানা পুলিশ শিক্ষক রুহুল আমিনকে গ্রেফতার করে গলাচিপা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। এরপরই ওই ছাত্রীর মা সোমবার গলাচিপা থানায় শিক্ষককে একমাত্র আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সংশোধনী ২০০৩ এর ৯ (১) ধারায় ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন।

গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জাহিদ হোসেন জানান, শিক্ষক রুহুল আমিন তার অপকর্মের ফিরিস্তি অকপটে স্বীকার করেছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। ভিকটিম ওই ছাত্রীর মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য পটুয়াখালী পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, শিক্ষক রুহল আমিনের বিরুদ্ধে এর আগেও এ ধরণের অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই স্কুলে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েই সে তার এক ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে। ওই স্ত্রীর বর্তমানে দু’টি ছেলেমেয়ে রয়েছে।

বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে গুয়াবাড়িয়া এবি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোশারেফ হোসেন সবুজ জানান, বর্তমান ছাত্রীর ঘটনাটি তারা পুলিশের কাছ থেকে শুনেছেন। ভূক্তভোগী পরিবার থেকে কোন অভিযোগ দেয়া হয়নি। তারপরেও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

বর্তমানে স্কুলের অন্যান্য ছাত্রী ও অভিভাবকদের ওপর ঘটনাটি বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইউসুফ মোল্লা জানান, এ বিষয়টি নিয়ে আজ মঙ্গলবার বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের জরুরী সভা আহ্বান করা হয়েছে। শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হবে এবং পর্যায়ক্রমে শিক্ষকতা থেকে চূড়ান্ত অব্যাহতি দেয়া হবে। কোনক্রমেই এ ঘটনায় ছাড় দেয়া হবে না।

(আরবি/এসপি/মে ০৯, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test