E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

মাগুরা জেলা প্রশাসকের ভূমি অফিস পরিদর্শন

মাগুরার ভূমি অফিসে হিসেব নেই ১২ লক্ষ টাকার !

২০১৮ মে ২১ ১৪:০১:৫৮
মাগুরার ভূমি অফিসে হিসেব নেই ১২ লক্ষ টাকার !

মাগুরা  প্রতিনিধি : মাগুরা জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে সম্প্রতি মাগুরা সদর উপজেলার পৌর ভূমি অফিস পরিদর্শনে আদায়কৃত ভূমি উন্নয়ন করের মোটা অংকের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাৎসহ সেখানে চলমান নানা ধরনের গুরুতর অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র মতে জানা যায়, এসব অনিয়মসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আদায়কৃত মোট ভূমি উন্নয়ন করের মধ্য থেকে ১২ লক্ষাধিক টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ, সেবা গ্রহণেচ্ছুদের ব্যাপক হয়রানি, দুই শতাধিক নামজারী মামলা পেন্ডিং রাখা, কর্মকর্তার প্রত্যয়ন ছাড়া নামজারী মামলার রেজিস্ট্রার সংরক্ষণ।

নির্ভরযোগ্য সূত্র মতে, মাগুরা সদর উপজেলার পৌর ভূমি সহকারী কর্মকর্তা উজ্জল মিয়া কর্তৃক সেবা প্রদানে হয়রানি এবং সেবা প্রদানে সেবা গ্রহণেচ্ছুদের কাছে ঘুষ দাবি করার কারণে ক্ষুব্ধ সেবা গ্রহণেচ্ছুদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রাপ্ত অভিযোগ, ওই অফিসে দীর্ঘদিন ধরে চলা অনিয়ম ও হয়রানির কারণে সেবা গ্রহণকারীদের মাঝে সৃষ্ট অস্বস্তি ও ক্ষোভ দূরীকরণে গত ৩ মে মাগুরা জেলা প্রশাসক আতিকুর রহমান মাগুরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আক্তারুন্নাহার এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) মৌসুমী জেরিন কান্তাকে সাথে নিয়ে পৌর ভূমি অফিস পরিদর্শনে যান। পরিদর্শনকালে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়, বিবিধি আদায়, নামজারি মামলাসহ বিভিন্ন রেজিস্ট্রার পর্যালোচনা করে ব্যাপক অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

সূত্রটি আরো জানিয়েছে, এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ইতোমধ্যেই পৌর ভূমি সহকারী কর্মকর্তা উজ্জল মিয়াকে মাগুরা সদর উপজেলা ভূমি অফিস থেকে 'স্ট্যান্ড রিলিজ' করে তৎক্ষণাৎ শ্রীপুর উপজেলায় বদলি করা হয়েছে। তবে তাকে বদলির পর অফিস পরিদর্শনে বেরিয়ে এসেছে তার বিরুদ্ধে গুরুতর অনিয়ম এবং দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ।

সূত্র মতে, পৌর ভূমি অফিস পরিদর্শনকালে দেখা গেছে যে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৩০ এপ্রিল ২০১৮ পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর আদায় ২৯,৬৪,৫৪৬ টাকা দেখানো হলেও চালানের মাধ্যমে জমা দেখানো হয়েছে ২৩,৭৭,৭৩০ টাকা। আবার ২৯ মার্চ পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর আদায় দেখানো হয়েছে ২৮,৭৬,২৯২ টাকা। কিন্তু ভূমি উন্নয়ন কর আদায় সম্পর্কিত ট্রেজারী চালান, চালান রেজিস্ট্রার এবং পাশ বই মিলিয়ে দেখা গেছে যে, উল্লেখিত আদায়কৃত ভূমি উন্নয়ন করের মধ্যে মাত্র ১৬,৪২,৬৪৮ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হলেও বাকি ১২,৩৩,৬৪৪ টাকার কোন হদিস নেই।

উল্লেখ্য, উজ্জল মিয়া মাগুরায় কর্মরত থাকা অবস্থায় এসব ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের রশিদ দিয়ে কর আদায়ের ক্ষেত্রেও নানা ধরনের কারচুপির আশ্রয় নিয়ে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে।

উজ্জল মিয়া দায়িত্বে থাকা অবস্থায় মাগুরা সদর উপজেলার পৌর ভূমি অফিসে চলমান অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আক্তারুন্নাহার অনিয়ম ও দুর্নীতির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ভূমি সম্পর্কিত সেবা গ্রহণেচ্ছুদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উজ্জল মিয়াকে তৎক্ষণাৎ শ্রীপুর উপজেলায় বদলি করার পর জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে পরিদর্শন শেষে তার নির্দেশে সেখানে চলমান অনিয়ম ও দুর্নীতি সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ফোনে উজ্জল মিয়ার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

(ডিসি/অ/মে ২১, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test