E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

হাজার হাজার লোকের ভোগান্তি

গলাচিপায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ১০ হাজার একর জমি প্লাবিত

২০১৮ জুন ১১ ১৭:৫৩:১৮
গলাচিপায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ১০ হাজার একর জমি প্লাবিত

সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) : গত ১বছর ধরে পটুয়াখালীর গলাচিপায় ৫৫/৩ পোল্ডার প্রায় ৩কি.মি. বেড়িবাঁধ ভাঙ্গা থাকার কারণে দুই ইউনিয়নের ২০ কি.মি. এলাকা জোয়ারের প্লাবিত হয়। এতে কৃষকের রবিশষ্য, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ঘরবাড়ি তলিয়ে যায়। এমনকি দুই ইউনিয়নের অভ্যন্তরে পাকা ও আধা পাকা সড়কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তির শিকার হয়। দ্রুত বেড়িবাঁধ নির্মানের জন্য চরকাজল ইউনিয়নের মানুষ জোর দাবি জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, গলাচিপা উপজেলার সদর থেকে ১৫ কি.মি. দূরে বিচ্ছিন্ন ইউনিয়ন চরকাজল। এ ইউনিয়নে প্রায় ৪০হাজার লেকের বসবাস। এ ইউনিয়নের বড় চরকাজল থেকে জিনতলা পর্যন্ত তিন কি.মি. বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। যার কারণে প্রায় ১০হাজার একর জমি প্লাবিত হয়।

চর কাজল ইউনিয়নের ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ড বড় কাজল, ৪নং ওয়ার্ড ছোট কাজল, ৫নং ওয়ার্ডের বালার চর ও ছোট শিবা গ্রাম জোয়ারের সময় পানির নিচে তলিয়ে থাকে। এ এলাকার প্রায় ৪হাজার কৃষকের তলিয়ে থাকা আমন ধান, বোরো, রবিশষ্য (ডাল, বাদাম, মরিচ, আলু) ঘরে তুলতে পারছে। নিঃশ্বাস ছেড়ে দুঃখের কথা জানালেন কৃষক জাফর সিকদার। তার ৬একর জমির তরমুজে ৫ থেকে ৭লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। আরেক চাষি আনিস সিকদারের ১৫একর জমির তরমুজে ক্ষতি হয় ১০লাখ টাকা।

এরকম অনেক কৃষক রয়েছে যারা বছরের খোরাক সংগ্রহ করে রাখতে পারেনি। খোরশেদ চৌকিদার এর স্রোতের তোড়ে ঘর ভাষিয়ে নিয়ে গেছে। জোয়ারের পানিতে হাজার খানেক ঘরবাড়ি তলিয়ে থাকার কারণে দুপুরের রান্না হয়না। কৃষকরা তাদের গবাদি পশু নিয়ে পড়েছে বেকাদায়। গবাদি পশুর দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট।

এদিকে, বেড়িবাঁধের অভাবে চরকাজলের ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে হুমকি মুখে। বেড়িবাঁধ না থাকার জোয়ারের পানিতে তলিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর লেখা পড়া বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো হলোঃ- ছোট কাজল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাতাবুনিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বড় কাজল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধ্য চরকাজল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর চরকাজল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম কাজল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরকাজল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ছোট কাজল হোসানিয়া দাখিল মাদরাসা, বড় কাজল দাখিল মাদরাসা।

পশ্চিম চরকাজল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাফর হাওলাদার জানান, বিদ্যালয়টি জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়। যার কারনে বিদ্যালয়ের পাঠদান ব্যাহত হয়। বিদ্যালয় আসার সময় আছাড় খেয়ে ৩য় শ্রেণির ছাত্রী সুবর্না, ৫ম শ্রেণীর ছাত্র জাহিদের বই পানিতে ভিজে গেছে। জোয়ারের পানিতে বিষাক্ত প্রাণীর উৎপাতের কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দিন দিন কমে যাচ্ছে।

চরকাজল ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সোহেল জানান, গ্রামীন অবকাঠামোর ২০ কি.মি পাকা রাস্তার মধ্যে ১৫কি.মি. ও কাঁচা রাস্তা ১০০কি.মি. এর অর্ধেকই নষ্ট হয়ে গেছে।

চরকাজল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রুবেল জানান, বেড়িবাঁধের অভাবে চরকাজলে অধিকাংশ এলাকা বর্ষা মৌসুমে তলিয়ে থাকে। এতে কৃষকের সময়মত ফসল ফলাতে পারছে না। গ্রামীন অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা ঠিকমত বিদ্যালয় যেতে পারছে না।

নির্বাহী প্রকৌশলী হাসানুজ্জামান জানান, কয়েক মাস আগে চরকাজলের বেড়িবাঁধ ভাঙার স্থানটি পরিদর্শন করেছি। তবে স্থানীয় লোকজন অসহযোগিতার কারণে বেড়িবাঁধ তৈরি করা যাচ্ছে না। তবে বেড়িবাঁধটি বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে।

(এসডি/এসপি/জুন ১১, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test