E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ঈদের ছুটিতে ৩ দিন বন্ধ থাকবে বেনাপোল স্থলবন্দর 

২০১৮ জুন ১৫ ১০:৫৩:৩৩
ঈদের ছুটিতে ৩ দিন বন্ধ থাকবে বেনাপোল স্থলবন্দর 

বেনাপোল প্রতিনিধি : পবিত্র ঈদ উল ফিতরের ছুটির কারনে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত তিন দিনের জন্য বন্ধ হয়ে গেল বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে আমদানি-রফতানি। এর ফলে সীমান্তের দুই পাশের ট্রাকজট আরও বাড়বে বলে মনে করছেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা। তবে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পাসপোর্টযাত্রী চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। 

বন্দর, কাস্টমস ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে কাস্টমস ও বন্দরের কাজকর্ম ঢিলেঢালা হয়ে গেছে। ঈদের ৩দিন আগে ও পরে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল সরকারি ভাবে বন্ধ থাকায় বন্দর থেকে কোন পণ্য লোড হয়নি। অনেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে বেনাপোল ত্যাগ করেছেন। ফাঁকা হয়ে পড়েছে বেনাপোল বন্দর এলাকা।
প্রতিদিন বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে তিনশ থেকে সাড়ে তিনশ পণ্য বোঝাই ট্রাক আসে ভারত থেকে। আর বাংলাদেশ থেকে দেড়শ থেকে দুইশ ট্রাক পণ্য যায় ভারতে।

এ ছাড়াও শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাচাঁ মালামালের পাশাপাশি বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য আসে এই বন্দর দিয়ে। একটানা ৩ দিন বন্ধ থাকার পর ১৮ জুন সকাল থেকে আমদানি-রফতানি চালু হলে সৃষ্টি হবে পণ্য জটের। এছাড়াও ঈদের ছুটি কাটাতে কাস্টম ও বন্দরের কর্মকর্তা কর্মচারিরা গ্রামের বাড়িতে চলে যান। দেখা যায়, ঈদের বন্ধের পর কাস্টমস ও বন্দর চালু হলেও অনেক কর্মকর্তা আরো কয়েকদিন অনুপস্থিত থাকেন।

ঢাকার অনেক আমদানিকারকরা পরিবার পরিজনের সাথে ঈদ করতে চলে যান দেশের বাড়িতে। তারাও আসেন অনেক পরে। ঈদের আমেজ কাটার পর তারা আমদানিকৃত পণ্য চালান খালাস করে থাকেন। দেশের অর্থনীতিতে বেনাপোল বন্দরের ভূমিকা অপরিসীম। ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ৯০ ভাগই আসে বেনাপোল বন্দর দিয়ে। মাত্র সাত দিনের এলসিতে পণ্য আনা যায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে। বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮১ কিলোমিটার। আড়াই ঘন্টায় চলে আসা যায় চেকপোস্টে। সে কারণে আমদানিকারকরা পণ্য আমদানির জন্য বেনাপোল বন্দর ব্যবহার থাকেন। বন্দর বন্ধ থাকায় আমদানি-রফতানিতে প্রভাব পড়বে বলে আশংকা করছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।

ভারতের পেট্রাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক কার্ত্তিক চক্রবর্তী জানান, বেনাপোলের মতোই পেট্রাপোলেও ট্রাকজট রয়েছে। বন্দরের ট্রাক টার্মিনাল, পেট্রাপোল পার্কিং ও বনগাঁও টার্মিনালে কয়েক হাজার পণ্য বোঝাই ট্রাক অপেক্ষা করছে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায়। ছুটির কারণে এসব পণ্য পেট্রাপোল থেকে বেনাপোল বন্দরে ঢুকবে ছুটি শেষে। এতে পেট্রাপোল বন্দরসহ বেনাপোল বন্দর এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হবে।

বেনাপোলের সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) বিকেল থেকে বন্ধ হয়ে গেছে বেনাপোল-পেট্রাপোলের মধ্যে আমদানি-রফতানি। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি, শনিবার ঈদ উল ফিতর ও রবিবার ঈদের ছুটির কারণে কাস্টম ও বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। অনেক আমদানিকারক ঈদের ছুটিতে পরিবার পরিজন নিয়ে দেশের বাড়িতে চলে গেছেন। আগামী সোমবার (১৮ জুন) সকাল থেকে পুনরায় আমদানি-রফতানি কার্যক্রম চলবে বলে তিনি জানান।

বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) আমিনুল ইসলাম বলেন, ১৫ জুন থেকে ১৭ জুন এবার ঈদ উল ফিতরের সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্র, শনি ও রোববার তিন দিন থাকবে সরকারি ছুটি। সোমবার সকাল থেকে বন্দরের কাজকর্ম আবার শুরু হবে। তিনি বলেন, দেশের ৯০ ভাগ শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাচাঁ মালামালের পাশাপাশি বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য আসে এই বন্দর দিয়ে। এই কারনে বন্দরে সবসময় পণ্যজট লেগেই থাকে। বন্দর খুললে পণ্য জটের সম্ভাবনা রয়েছে।

বেনাপোল চেকপোস্ট পুলিশ ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুল ইসলাম জানান, পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের ছুটিতে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকলেও স্বাভাবিক থাকবে পাসপোর্টধারীযাত্রীদের যাতায়াত। এ সময় একটু বেশি ভিড় হয়ে তাকে। সে কারণে ইমিগ্রেশণে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে। যাতে পাসপোর্টধারীযাত্রীদের যাতায়াতে কোন প্রকার অসুবিধায় পড়তে না হয়।

(এসএইচ/এসপি/জুন ১৫, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test