E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নেই বনদস্যু আতংক হাসি ফুটেছে জেলে পল্লীতে

 

সুন্দরবন উপকূলে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে-ঝাঁকে ইলিশ

২০১৮ জুন ২৫ ১৮:১৯:৫৫
সুন্দরবন উপকূলে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে-ঝাঁকে ইলিশ

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট : বাগেরহাটের সুন্দরবন উপকূলে বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে-ঝাঁকে রূপালী ইলিশ। ইলিশ আহরণ মৌসুমের শেষপ্রান্তে এসে হাসি ফুটেছে উপকূলের জেলে পল্লীগুলোতে। র‌্যাব ও কোস্টগার্ডসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর তৎপরতায় সুন্দরবন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে এখন বনদস্যু আতংক না থাকলেও আহনর মৌসুমের শুরুতে ইলিশের দেখা না পাওয়ায় অনেকটা হতাশায় ভুগছিলেন জেলেরা।

তবে হটাৎ করে গত এক সপ্তাহ ধরে সুন্দরবন উপকূলে বঙ্গোপসাগরে কাংক্ষিত সেই রূপালি ইলিশ ধরা পড়ায় জেলে, আড়ৎদার ও মাছ বিত্রেতারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। সুন্দরবন উপকূলসহ গভীর সমুদ্রে থাকা ইলিশ বোঝাই ট্রলারগুলো আসতে শুরু করেছে বাগেরহাটের প্রধান মৎস্য বন্দর কেবি বাজারে। বাজারে অধিক সরবরাহ থাকায় মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে ইলিশের দাম নেমে এসেছে সাধারন মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে।

সোমবার ভোরে সরেজমিনে বাগেরহাটের প্রধান মৎস্য বন্দর কেবি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, গত তিন দিনে সুন্দরবন উপকূলে বঙ্গোপসাগর থেকে ইলিশ বোঝাই করে ফিরেছে প্রায় ৩০টি ফিশিং ট্রলার। ফিরে আসা ইলিশ ভর্তি এসব ট্রলার কেবি বাজারের সামনে দিয়ে বয়ে যাওয়া দাড়াটানা নদীর ঘাটে সারিবদ্ধভাবে নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে।

আহরণ মৌসুমের শুরুতে ইলিশের দেখা না পেলেও এখন কাংক্ষিত ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করায় হাসি ফুটেছে কেবি বাজারের জেলে, আড়তদার ও মাছ বিত্রেতাদের মুখে। সেই সাথে কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছেন এ বাজারের জেলে, আড়ৎদার ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা। কেউ ইলিশ মাছের ঝুড়ি টানছেন, কেউ প্যাকেট করছেন, আবার কেউ কেউ সেই ইলিশ মাছের প্যাকেট দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাতে তুলে দিচ্ছেন ট্রাকে।

দাড়াটানা নদীর ঘাটে নোঙ্গর ট্রলারের জেলে ইলিয়াস, আল আমিন ও লিটন মিয়া জানান, এবার মৌসুমের প্রথম দিকে ইলিশের দেখা মেলেনি। তাই ট্রলার মালিকসহ ইলিশ আহরন পেশার সঙ্গে জড়িত সবাই হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। তবে মৌসুমের শেষ ভাগে এসে সাগরে হটাৎ করে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করেছে। এবার ধরা পড়া ইলিশের সাইজও অনেক ভালো। আমরা সাগর থেকে ট্রলার বোঝাই করে ইলিশ মাছ নিয়ে এসেছি।

উপকূলীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি শেখ ইদ্রিস আলী জানান, মৌসুমের শুরুতে ইলিশ না পাওয়া গেলেও জুনের শেষের দিক এসে সুন্দবেন উপকূলে গভীর সমুদ্রে মাছের খনি হিসেবে খ্যাত সোয়াচ আর নো গ্রাউন্ডে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করেছে বাঁকে-ঝাঁেকে ইলিশ। গত তিন দিনে ইলিশ বোঝাই বঙ্গোপসাগর থেকে প্রায় ৫০টি ট্রলার কেবি বাজারের ঘাটে নোঙ্গর করেছে।

এসব ট্রলারগুলোর প্রত্যেকটিতে পর্যাপ্ত পরিমান বড় সাইজের ইলিশ আহরন করে নিয়ে এসেছেন। বাজারে ইলিশের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় আধা কেজি সাইজের প্রতিটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২শত থেকে আড়াই শত ও কেজি সাইজের প্রতিটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮শত থেকে ৯ শত টাকায়। আগামী জুলাই মাসে জেলেদের জালে আরো বেশি পরিমান ইলিশ ধরা পড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন এই উপকূলীয় মৎস্যজীবী নেতা।

বাগেরহাট কেবি বাজার মৎস্য আড়ৎদার সমিতির সভাপতি এসএম আবেদ আলী বলেন, চলতি মাসের শেষ দিকে এসে সুন্দরবন উপকূলে বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করেছে। তবে গত দু’দিনে আবহওয়া খারাপ থাকায় সুন্দরবনের বিভিন্ন খালে জেলে ফিশিং ট্রলারগুলো নোঙ্গর করে অবস্থায় নিয়েছে। আবহওয়া ভালো হলো তারা আবার মাছ ধরতে বঙ্গোপসাগরে ফিরে যাবে। এর মধ্যে কিছু ট্রলার মাছ নিয়ে কেবি বাজারে ফিরেছে। আগামী দু’ এক সপ্তাহের মধ্যে ইলিশ আহরনের পরিমান আরো বাড়বে বলে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

বঙ্গোপসাগরসহ সুন্দরবন উপকূলে এবার বনদস্যু আতংক আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া কোন জেলে বনদস্যুদের হাতে অপহৃত বা চাঁদাবাজীর শিকার হবার খবর আসেনি। বঙ্গোপসাগরসহ সুন্দরবন উপকূলে র‌্যাব ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা নিয়োমিত টহল দিচ্ছে বলে জানান এই মৎস্যজীবী নেতা।

(এসএকে/এসপি/জুন ২৫, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test