E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কেন্দুয়ায় পৌর আ. লীগ নেতাকে আটকের ঘটনায় দারোগার প্রত্যাহার দাবি

২০১৮ জুন ২৯ ০০:০৪:১৪
কেন্দুয়ায় পৌর আ. লীগ নেতাকে আটকের ঘটনায় দারোগার প্রত্যাহার দাবি

সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : নেত্রকোনার কেন্দুয়া পৌর আওয়ামীলীগের ৯ নং ওয়ার্ডের সাধারন সম্পদক ইসলাম উদ্দিনের আটকের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পৌর শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পৌরসভার মেয়র ও শ্রমিক সংগঠনের নেতা মো: আসাদুল হক ভূঞা সহ পৌর আওয়ামীলীগ ও শ্রমিকসংগঠনের নেতারা এস.আই. নূরুল আমিনের (দারোগা) প্রত্যাহার দাবিতে বৃহস্পতিবার সকালে পৌরশহরে সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ রাখেন। 

বুধবার রাত অনুমান ৯টার দিকে কেন্দুয়া থানা পুলিশের এস.আই. নূরুল আমিন পৌর শহরের সাজিউড়া মোড় এলাকা থেকে ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ইসলাম উদ্দিন অতর্কিতে আটক করে থানায় নিয়ে যান। আটকের আগে ইসলাম উদ্দিনের পারিবারিক একটি সমস্যা নিয়ে পৌর মেয়রের সঙ্গে কথা বলছিলেন। কথা বলার এক ফাঁকে পান খাওয়ার জন্য পাশের একটি দোকানে গেলে সেখান থেকেই নূরুল আমিন তাকে আটক করে নিয়ে যান। শ্রমিক নেতা ও পৌর মেয়র মো: আসাদুল হক ভূঞা বলেন, তার সঙ্গে সাজিউড়া মোড়ে পপুলার ডায়গনস্টিক সেন্টরে বসে ইসলাম উদ্দিনের পারিবারিক বিষয় নিয়ে কথা বলছিলেন।

এসময় পাশের একটি দোকানে পান খেতে যান ইসলাম উদ্দিন। মেয়র অভিযোগ করে বলেন, উদ্দেশ্যমূলক ভাবে মেয়র ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতাকে সামাজিকভাবে হেয় করার জন্য এস.আই. নূরুল আমিন ইসলাম উদ্দিনকে আটক করে নিয়ে যায়। পরে তিনি বিষয়টি শুনে থানা থেকে ইসলাম উদ্দিনকে নিয়ে আসেন। এ সময় এস.আই. নূরুল আমিন মেয়রের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরন করেন বলে তিনি দাবি করেন।

এদিকে ইসলাম উদ্দিনকে আটক ও শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি মেয়রের সঙ্গে দারোগার অসৌজন্যমূলক আচরনের খবর পেয়ে পৌর আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও শ্রমিক সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী রাতেই থানা কার্যালয় ঘেরাও করে নূরুল আমিনের প্রত্যাহার দাবি করে।

পরে তারা বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ১০ টা পর্যন্ত একই দাবীতে কেন্দুয়া নেত্রকোনা, কেন্দুয়া আঠারোবাড়ি, কেন্দুয়া মদন এবং কেন্দুয়া কিশোরগঞ্জ সড়কে সকল প্রকার যানচলাচল বন্ধ রাখে। এ খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো: শাহজাহান মিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এসময় মেয়র ও শ্রমিক নেতা আসাদুল হক ভূঞার নেতৃত্বে শতাধিক আওয়ামীলীগ, শ্রমিকলীগ ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মী নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নিকট এস.আই. নূরুল আমিনের প্রত্যাহার দাবি করেন। এসময় তারা পুলিশ সুপারকে জানান, এস.আই নূরুল আমিন প্রত্যাহার না হলে এ আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) উর্ধ¦তন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রত্যাহারের আশ্বাস দেন বলে জানান মেয়র।

এ বিষয়ে এস.আই নূরুল আমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, চন্দগাতী গ্রামের পৌর কাউন্সিলরের এক কন্যাকে নিয়ে ওই গ্রামের ইসলাম উদ্দিনের কলেজ পড়ুয়া ছেলে তনয় হাসান ছোটন পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে কাউন্সিলর তার কন্যাকে অপহরনের অভিযোগ এনে থানায় লিখিত এজাহার দেন। এরই প্রেক্ষিতে থানার ওসি ইমারত হোসেন গাজীর পরামর্শে মেয়েকে উদ্ধারের জন্য ছেলের বাবা ইসলাম উদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থানায় নিয়ে আসেন বলে জানান নূরুল আমিন। পরে থানা থেকে কাউকে না বলে মেয়র ইসলাম উদ্দিনকে নিয়ে যাবার সময় মেয়রের সঙ্গে নূরুল আমিনের কথা কাটাকাটির ঘটনার সত্যতা স্বিকার করেন তিনি।

ওসি ইমারত হোসেন গাজী বলেন, কাউন্সিলরের কন্যা অপহরনের অভিযোগে ইসলাম উদ্দিন তার স্ত্রী ও ছেলের বিরুদ্ধে কেন্দুয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

তিনি বলেন, মেয়র আসাদুল হক ভূঞার সঙ্গে দারোগা নূরুল আমিনের যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল তা আলোচনা করে মিটমাট করে দেয়া হয়েছে। নূরুল আমিনের প্রত্যাহারের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন এ বিষয়টি দেখবেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। সেখান থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে সেটাই তারা মেনে নিবেন।

মেয়র আসাদুল হক ভূঞা বলেন, এস.আই নূরুল আমিনের বিরুদ্ধে আরো অনেক অভিযোগ আছে অভিযোগগুলো লিখিত ভাবে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে, তাকে প্রত্যাহার না করা হলে আগামী রোববার নতুন কর্মসূচী ঘোষনা করা হবে।

(এসবি/এসপি/জুন ২৮, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test