E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নাশকতা ও বিষ্ফোরক মামলার আসামি

জামায়াত নেতা খালেক আদালতে যাতায়াত করেন হাতকড়া ছাড়াই, বসেন আইনজীবীদের বেঞ্চে

২০১৮ জুলাই ০৮ ১৮:২৫:১৮
জামায়াত নেতা খালেক আদালতে যাতায়াত করেন হাতকড়া ছাড়াই, বসেন আইনজীবীদের বেঞ্চে

রঘুনাথ খাঁ,সাতক্ষীরা : নাশকতা সৃষ্টি, নাশকতার পরিকল্পনা ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনসহ কমপক্ষে ৪০টি মামলার আসামী বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় সুরা সদস্য মুহাদ্দিস আব্দুল খালেককে হাতকড়া ছাড়াই আদালতের গারদখানা থেকে আদালতে নিয়ে যাওয়া ও নিয়ে আসা হয়েছে। রোববার সকালে তাকে চারটি মামলায় জেলখানা থেকে জজ আদালতে আনা হয়।

সাতক্ষীরা জজ কোর্টের অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু জানান, ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্র“য়ারি ও পরবর্তী সময়ে সাতক্ষীরাসহ দেশজুড়ে নাশকতা, বোমা বিষ্ফোরণ, গাড়িতে আগুন, রাস্তার পাশে সরকারি গাছ কাটা, রাস্তা কাটা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষকে হত্যা করে জামায়াত ইসলামী ও তাদের জোটভুক্ত রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা। এসব ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়ে উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কমিটির সুরা সদস্য সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধলবাড়িয়া গ্রামের মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক। এ সব ঘটনায় তার বিরুদ্ধে কমপক্ষে তিন ডজন মামলা হয়।

যা’ তদন্ত শেষে ভাগ হয়ে সেশন ও এসটিসি হিসেবে প্রায় ৪০টিতে দাঁড়িয়েছে। এরমধ্যে এসটিসি ১৯টি মামলায় পলাতক থেকে তাকে গত ২৬ জুন জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন তার পক্ষে আইনজীবী অ্যাড. হাফিজুর রহমান, অ্যাড. আব্দুস সোবহান মুকুল, অ্যাড. আবু বক্কর, অ্যাড. আব্দুল মজিদসহ কয়েকজন আইনজীবী। বিচারিক হাকিমের আদালত থেকে বিচারের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বদলী হওয়া এসটিসি ২৩১/১৫, এসটিসি ৩০১/১৫, এসটিসি ৩৩১/১৫, এসটিসি ১৪৮/১৬, এসটিসি ১৪৯/১৬, এসটিসি ২১৬/১৬,এসটিসি ৩৩৪/১৬,এসটিসি ৩৪১/১৬,এসটিসি ৩৪২/১৬, এসটিসি ২৯/১৭, এসটিসি ১৩৩/১৭, এসটিসি ১৩৬/১৭, এসটিসি ২১২/১৭, এসটিসি ২৯৬/১৭, এসটিসি ২৯৭/১৭, এসটিসি ৪৫/১৮, এসটিসি ৪৬/১৮, এসটিসি ১৭১/১৮ ও এসটিসি ৩৩১/১৮ মামলাগুলো বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে সবসব ধরণের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

তিনি আরো জানান, রোববার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এসটিসি ১৪৮/১৬ ও এসটিসি ১৪৯/১৬ মামলায় জামিন শুনানীর দিন ছিল। তার পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. হাফিজুর রহমান ও অ্যাড. আব্দুস সোবহান মুকুল আদালতে শুনানীর জন্য সময়ের আবেদন করলে বিচারক তা মঞ্জুর করেন। একইভাবে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ -১ আদালতে এসটিসি ৪৯৮/১৫ মামলার জামিন আবেদন শুনানীর জন্য ভারপ্রাপ্ত বিচারক অরুনাভ চক্রবর্তী আগামি ২৪ জুলাই দিন ধার্য করেন। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ -২য় আদালতে এসটিসি-২০৪/১৭ মামলার জামিন শুনানীর জন্য আবেদন করলে বিচারক অরুনাভ চক্রবর্তী আগামি ২৪ জুলাই দিন ধার্য করেন।

অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলুসহ কয়েকজন আইনজীবী জানান, জামায়াত নেতা মুহাদ্দিস আব্দুল খালেককে রোববার সকাল ৯টার দিকে বিচারিক হাকিম আদালতের গারদে আনা হয়। সেখান থেকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির করানো হয়। আদালত চত্বরে রাখা প্রিজন ভ্যান থেকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় গারদে কর্মরত সহকারি উপপরিদর্শক তরিকুল ইসলাম তার হাতে হাতকড়া পরাননি।

উপরন্তু তাকে এজলাসের মধ্যে আসামীর কাঠগড়ায় না রেখে আইনজীবীদের বসার নির্ধারিত বেঞ্চে বসিয়ে রাখা হয়। সেখানে কাজ শেষ হলে তাকে হাতকড়া ছাড়াই অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ -২য় আদালতে নিয়ে এসে আইনজীবীদের বসার জন্য নির্ধারিত বেঞ্চে বসিয়ে রাখা হয়। পরে তাকে হাতকড়া ছাড়াই গারদে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তার আইনজীবীরা গল্প করতে করতে তার সঙ্গে যান।

অভিযোগ, মোটা অংকের আর্থিক সুবিধা নিয়ে আদালতের পুলিশ পরিদর্শক আশরাকুল বারী হাতকড়া ছাড়াই জামায়াত-বিএনপি’র বড় বড় নেতাদের হাতকড়া ছাড়াই এজলাসে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে থাকেন। এ ছাড়া গারদের মধ্যে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এসব কারণে কয়েক মাস আগে জজ কোর্টের কাঠগড়া থেকে এক হত্যা মামলার আসামী পালিয়ে যেতে সমর্থ হয়।

সাতক্ষীরা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক আশরাকুল বারী জানান, হাতকড়া ছাড়া এ ধরণের কোন আসামীকে গারদ থেকে এজলাসে নিয়ে যেয়ে আইনজীবীদের নির্ধারিত বেঞ্চে বসিয়ে যাওয়ার সূযোগ নেই। তাবে অনেক সময় এজলাসের মধ্যে কাঠগড়ায় আসামীর হাতের হ্যাণ্ডকাপ খুলে দেওয়া হয়। তিনি আর্থিক সুবিধি নিয়ে এ ধরণের কাজ করার কথা অস্বীকার করেন।

(আরকে/এসপি/জুলাই ০৭, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test