E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

স্ত্রীকে ভারতে পাচার, স্বামী-ভগ্নিপতির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড

২০১৮ জুলাই ১১ ১৬:৩৯:২২
স্ত্রীকে ভারতে পাচার, স্বামী-ভগ্নিপতির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : নিজের স্ত্রীকে ভালো চাকুরি দেওয়ার নামে ভারতে পাচার করে পতিতালয়ে বিক্রির অভিযোগে স্বামী ও তার ভগ্নিপতিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, প্রত্যেককে এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বুধবার সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হোসনে আরা আক্তার এক জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আসামীরা কাঠগড়ায় অনুপস্থিত ছিলেন।

সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহর গ্রামের আব্দুল আজিজ সরদারের ছেলে তঞ্জরুল ইসলাম(৩৫) ও তার ভগ্নিপতি একই গ্রামের আমের আলী সরদারের ছেলে শওকত হোসেন (৫৩)।

ধুলিহর গ্রামের আব্দুল আজিজ সরদারের ছেলে তঞ্জুরুল ইসলামের সঙ্গে খুলনা জেলার কয়রা থানাধীন আলাদী গ্রামের এক দিনমজুরের মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় এল লাখ টাকার যৌতুক দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ৩০ হাজার টাকা যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতন করতো তঞ্জুরুল ইসলাম। একপর্যায়ে ভগ্নিপতি শওকত হোসেন স্ত্রীকে ভারতে চাকরি করতে পাঠিয়ে দিলে ভাল টাকা উপার্জন হবে বলে শ্যালক তঞ্জুরুলকে অবহিত করে। শওকত হোসেন, তার স্ত্রী মমতা রানী সুন্দরীর পরামর্শে ২০০৫ সালের ২৫ আগষ্ট সকাল ১০টার দিকে স্ত্রীকে ভোমরা সীমান্তে নিয়ে যায় তঞ্জুরুল। সীমান্ত পার করে তাকে জনৈক পলাশ কর্মকারের বাড়িতে রাখা হয়।

পরবর্তীতে তাকে মুম্বাই শহরের একটি পতিতালয়ে বিক্রি করা হয়। বিষয়টি জানতে পেরে পাচার হওয়া ওই গৃহবধুর খালু বাদি হয়ে স্বামী তঞ্জুরুল ইসলাম, তার বোন মমতা রানী সুন্দরী, ভগ্নিপতি শওকত হোসেন, একই গ্রামের আব্দুল গফুর ও সাতক্ষীরা শহরের ইটাগাছার সাগর মাতবরের নাম উল্লেখ করে ২০০৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এর আগে ৬ সেপ্টেম্বর ওই নারী ভারত থেকে পালিয়ে বাড়ি আসে। পুলিশ তঞ্জুরুলকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃত তঞ্জরুল ওই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট দীপঙ্কর বিশ্বাসের কাছে ভগ্নিপতি শওকত হোসেনের পরামর্শ মত স্ত্রীকে ভারতে পাচার করে বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। ২০০৫ সালের ১৯ অক্টোবর ওই নারী সাতক্ষীরা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সাঈদুর রহমানের কাছে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেয়। সদর থানার উপপরিদর্শক মোকলেছুর রহমান ২০০৫ সালের ২ নভেম্বর এজাহারভুক্ত পাঁচজনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

নয়জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও মামলার নথি পর্যালোচনা শেষে আসামী শওকত হোসেন ও তঞ্জুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দোহতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০০ সালের সংশোধিত ২০০৩ এর ৫/৩০ ধারায় উপরোক্ত রায় ঘোষনা করেন। নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় মমতা রানী, আব্দুল গফুর ও মাতবরকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাড. এসএম জহুরুল হায়দার বাবু ও সহকারি পিপি অ্যাড. নাদিরা পারভিন।

৯আরকে/এসপি/জুলাই ১১, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test