E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রানীশংকৈলে কাজ শেষ না করেই বিল উত্তোলন

২০১৮ জুলাই ১৭ ১৬:০০:৫৮
রানীশংকৈলে কাজ শেষ না করেই বিল উত্তোলন

রানীশংকৈল (ঠাকুরগাও) প্রতিনিধি : ঠাকুরগায়ের রানীশংকৈল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের আওতায় মোট ৩টি প্রকল্পে একাধিক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনূকুলে সংস্কার মেরামত, টয়লেট মেরামত, দূর্যোগ ও ক্ষতিগস্ত ও জরার্জীণ বিদ্যালয় সংস্কার বাবদ সরকারী বরাদ্দকৃত অর্থের কাজ সম্পন্ন না করেই বিল উত্তোলন করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জামাল উদ্দীন চৌধুরীর বিরুদ্বে।

নিয়মনুযায়ী ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের বরাদ্দকৃত অর্থের কাজ ৩০ শে জুনের মধ্যে শেষ করে ভাউচার জমা করে বিল উত্তোলনের বিধান রয়েছে। সে হিসেবে তার আগেই বিল উত্তোলন করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে ২টি প্রকল্পের বিল ভুয়া ভাউচার জমা করে উত্তোলন করা হয়েছে। এদিকে ক্ষুদ্র মেরামত প্রকল্পের বিলটি প্রধান শিক্ষকদের নিকট কাজ করার আগেই ভাউচার জমা নিয়ে উত্তোলন করা হয়েছে। কোন কোন বিদ্যালয়ে কাজ এখনো চলমান রয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক বরারদ্দকৃত পিইডিপি-৩ এর প্রকল্পের আওতায় ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে জরার্জীণ বিদ্যালয় সংস্কার বাবদ উপজেলার জিপি, বাচোর, রওশুনপুর সহ মোট ৪টি সরকারী বিদ্যালয়ের জন্য মোট এগারো লাখ টাকার কাজ সম্পন্ন না করেই বিল উত্তোলন করা হয়েছে। এ বরাদ্দের তালিকাভুক্ত বাচোর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহেষ চন্দ্রের সাথে গতকাল মঙ্গলবার মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বরাদ্দের অর্থ এখনো পান নি জানিয়ে বলেন আমি ৮দিন ধরে ঐ বরাদ্দের অনুকুলে নিজ অর্থ ব্যয় করে কাজ করছি শিক্ষা অফিস বলেছে খুব শিগগির আমাকে বিল দিবে।

একইভাবে পিউডিপি-৩ এর প্রকল্পে উপজেলার অনন্তপুর, রাজোর, মাধবপুর সহ মোট ১০ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টয়লেট মেরামতের জন্য প্রত্যেক বিদ্যালয়ের অনূকুলে বিশ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ বরাদ্দের বিল কাজ সম্পন্ন না করেই উত্তোলন করা হয়েছে। তবে এ বরাদ্দের খবর যে বিদ্যালয়ের নামে এসেছে সে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগ প্রধান শিক্ষক জানেন না ।

এ নিয়ে অনন্তপুর সপ্রাবি প্রধান শিক্ষক আমিনুর ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন টয়লেট মেরামত বাবদ আমার বিদ্যালয়ে অর্থ বরাদ্দ আছে তা আমি জানি না। একইভাবে টয়লেট মেরামত বাবদ বরাদ্দকৃত অর্থের ব্যাপারে কিছুই জানেন না পারকুন্ডা সপ্রাবি প্রধান শিক্ষক রহিমা খাতুন রাতোর সপ্রাবি প্রধান শিক্ষক আমিনুর ইসলাম গত রবিবার মুঠোফোনে কথা বলে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়। তবে উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে সে বরাদ্দের বিল।

এদিকে ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে পিইডিপি-৩ প্রকল্পে ´ুদ্র বাশবাড়ী, গাগংগুয়া, রাজোরসহ মোট ১৭ বিদ্যালয়ে এক লাখ টাকা করে মোট ১৭ রাখ বরাদ্দ হয়। এ বরাদ্দের অর্থও কাজ করার আগেই উত্তোলন করা হয়েছে। তবে গতকাল মঙ্গলবার সরজমিনে একাধিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা হলে তারা বলেন এ বরাদ্দের খবর আমরা জানি আমাদের নিজ অর্থ ব্যয় করে আমাদের মেরামত কাজ করতে বলেছিলেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আমরা সে মতে কাজও করেছি তবে এখনো বিল পায় নি। এ নিয়ে পূর্ব বলদ্বানী সপ্রাবি প্রধান শিক্ষক খালিদা বানু মুঠোফোনে বলেন, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার ২মাস আগে নির্দেশনা পেয়ে আমি কাজ করেছি তবে বিল এখনো পায়নি।

এ বরাদ্দের অনুকুলে প্রত্যক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নিকট ১২হাজার টাকা করে উৎকোচ আদায় করছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রধান শিক্ষক অভিযোগ করেন এ প্রতিবেদকের নিকট। এছাড়াও উপজেলার ১৫৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করার জন্য প্রতি বছর স্লিপের চল্লিশ হাজার টাকা অর্থ বরারদ্দ হয়। সে বরাদ্দ থেকেও এক হাজার ছয়শত টাকা করে উৎকোচ আদায় করেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জামাল উদ্দীন চৌধুরী বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ কর্মকর্তার বিরুদ্বে অভিযোগ রয়েছে বদলি বাণিজ্য সহ নানান অভিযোগ। এ এনিয়ে সম্প্রতি উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহফুজা বেগম পুতুল শিক্ষা অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে তার বিরুদ্বে লিখিত অভিযোগও করেছিলেন।

সম্প্রতি হজ্ব করার উদ্যোশে সৌদি আরব যাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জামাল উদ্দীন চৌধুরীর।

ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মঞ্জুরুল আলম মুেঠোফোনে বলেন, বরাদ্দের সমস্ত অর্থ উত্তোলন করে উপজেলা শিক্ষা অফিসের ব্যাংক হিসাব নম্বরে রাখা হয়েছে। কাজ দেখে তাদের বিল প্রদান করা হবে।

(কেএএস/এসপি/জুলাই ১৭, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test