E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী কাকলীর পাশে দাঁড়াল র‌্যাব

২০১৮ জুলাই ২২ ১৮:৩৬:০৮
জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী কাকলীর পাশে দাঁড়াল র‌্যাব

মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার মেধাবী ছাত্রী কাকলি আক্তার। সে চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। কাকলী শিবচর উপজেলার মধ্যে একমাত্র জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী। অদম্য সেই মেধাবী শিক্ষার্থীর চোখে-মুখে আছে স্বপ্ন জয়ের আশা। কি স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দেওয়ার মত মেধা আছে, নেই আর্থিক স্বচ্ছলতা, নেই পরিবারে কোন শিক্ষিত সদস্য, যে তাকে দিতে পারবে উচ্চ শিক্ষার দিক নির্দেশনা। কারণ কাকলীর বাবা একজন খেটে খাওয়া দিন মজুর, মা গৃহিনী। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সবার বড় কাকলী। তার স্বপ্ন সে একজন উচ্চ শিক্ষিত নারী হয়ে দেশের সেবা করবে।

কাকলীর এই পরিস্থিতিতে তাকে সাহায্য ও সাহস যোগানের জন্য এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে এগিয়ে এসেছে “র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন” র‌্যাব-৮। তাকে ফুলের শুভেচ্ছা দিয়ে অভিন্দন জানিয়েছেন র‌্যাব-৮, মাদারীপুর ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানী অধিনায়ক ক্যাপ্টেন মো. খালেদ মাহমুদ।

রবিবার সকাল ১০ টায় মাদারীপুর ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানী অধিনায়ক সাংবাদিকদের বলেন, ডিজি র‌্যাব ফোর্সেস মহোদয় কাকলীর পড়াশোনা ও পরিবারের বিষয়টি বিভিন্ন পত্রপত্রিকার ও মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরে মেধাবী এই ছাত্রীর ব্যাপারে খুবই সদয় আছেন। তিনি চান এই ধরণের মেধাবী শিক্ষার্থী যেন অকালে ঝরে না পড়ে। কাকলী যাতে ভবিষ্যতে উচ্চ শিক্ষা লাভ করতে পারে সে ব্যাপারে র‌্যাব সর্বদা তার পাশে থাকবে।’ শনিবার র‌্যাবের পক্ষ হতে ক্যাপ্টেন মো. খালেদ মাহমুদ নগদ ১০ হাজার টাকা, মিষ্টি এবং একটি ড্রেস উপহার দেন।

উল্লেখ্য, চলতি বছর এইচএসসির ফলাফলে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার ৫টি কলেজের মধ্যে ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী কলেজ ৮৮.৫৯ ভাগ উত্তীর্ন হয়ে শীর্ষ স্থান দখল করে। উপজেলার মধ্যে একমাত্র জিপিএ-৫ অর্জনধারী ওই কলেজের মেধাবী ছাত্রী কাকলী আক্তার। দফায় দফায় পদ্মা নদী ভাঙ্গণ আক্রান্ত কাকলীর নিঃস্ব পরিবারটি উপজেলার পাচ্চরে এক চালার একটি খুপড়ি ঘরে বসবাস। ৫ ভাই বোনের সংসারে বাবা হারুণ মাদবর দিনমজুর আর মা তাসলিমা বেগম সংসারী।

অন্যের জমিতে বাবা দিনমজুরির কাজ করে সংসার চালান। ছোট সময় থেকেই লেখাপড়ায় মনোযোগী কাকলী এসএসসিতে পাচ্চর বালিকা বিদ্যালয় থেকে জীবন সংগ্রাম করে জিপিএ-৫ অর্জন করে। পরে প্রধান শিক্ষকের সহায়তায় ভর্তি ফি ছাড়াই ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী কলেজ কর্তৃপক্ষ কাকলীকে পড়ার সুযোগ করে দেন। বেতনসহ যাবতীয় খরচ ফ্রি করে দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। যাতায়াতসহ বাকি খরচ চালাতে পাশের বাড়ির শিশুদের প্রাইভেট পড়িয়ে নিজেই চালাতো নিজের খরচ। দিনমজুর বাবা খাবার জোগাতেই হিমশিম খাওয়ায় টাকার অভাবে কলেজের মাত্র ৪টি বই কিনতে পারে কাকলী।

অন্যের পুরাতন বই এনে পড়তে হয়েছে তাকে। বাড়িতে বিদ্যুত না থাকায় দিনের বেলাকেই বেশি বেছে নিতো পড়ার ক্ষেত্রে। খাতা ফুড়িয়ে যাওয়ার শংকায় পড়তো বেশি লেখতো কম। ভাড়া না থাকায় অনেকদিন কলেজও বাদ দিতে হয়েছে। পরীক্ষায় সময় ভাল কোন খাবার মুখে তুলে দিতে পারেনি তার মা-বাবা।

(এএসএ/এসপি/জুলাই ২২, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test