E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে চার ভাই মানসিক রোগী

২০১৮ আগস্ট ০১ ১৮:১০:৪৭
পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে চার ভাই মানসিক রোগী

রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি : পিতা মাতা হারানো মোট পাচঁ ভাইয়ের মধ্যে চার ভাইয়ে মানসিক রোগী হয়ে পড়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায়। পরিবারটির বাড়ী উপজেলার ৮নং নন্দুয়ার ইউনিয়নের শিয়ালডাঙ্গী গ্রামে তারা মৃত মফিজুল ইসলামের সন্তান। এমন ঘটনায় কঠিন দুঃচিন্তার মধ্যে বসবাস করছে এলাকার অন্যানা অধিবাসীরা।

বুধবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,শুন শান নিরব হয়ে রয়েছে মৃত মফিজুল ইসলামের এক সময়ের সুখের সংসারে গড়া বাড়ীটি। নেই কোন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের চলা ফেরা। মাঝে মাঝে কে যেন অস্বাভাবিক ভঙ্গিমায় আওয়াজ করে পাগলের মত আচরণ করছে মানুষজনের সাথে। সে আর কেউ নই সেই পরিবারের চার সন্তান। ভয়ে কেউ যেতে চাইনা তাদের সন্নিকটে। পাড়া প্রতিবেশীরাতো কেউ খেয়ালেই রাখে না এ রোগ যেন আবার তাদের উপর ছড়ায় এই ভয়ে। এছাড়াও মানবিক ভাবে খোজটিও রাখে না জনপ্রতিনিধি কিংবা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তর। এক ধরনের এক ঘোরা হয়ে বসবাস করছে মানসিক অসুস্থ হয়ে যাওয়া এই পরিবারটি।

বর্তমানে এই পরিবারের হাল ধরা এক মাত্র সুস্থ মৃত মফিজুলের ছোট সন্তান সফিকুল ইসলাম। তার সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। কেঁদে কেদেঁ বলেন, কি কারণে যে আমার সুস্থ স্বাভাবিক বড় চার ভাই মানসিকভাবে ক্ষতিগস্ত হয়ে পাগল বুনে গেছেন তা আমি জানি না। পিতা মাতা হারানো অভিভাবক শুণ্য সফিকুল আরো বলেন,এদের নিয়ে আমি বড় বিপদে আছি। তারা কখন কথায় যায় কি করে কি খায় তা আমি জানি না মাঝে মাঝে বাড়ী থেকে উধাও হয়ে যায় আবার নিজে নিজে ফিরে আসে। অর্থের অভাবে আমার নিজের জীবিকা নির্বাহ করায় মুশকিল হয়ে পড়ছে তাই তাদের আর উন্নত চিকিৎসা করাতে পারিনি।

সফিকুল ইসলামের কাছে এমন ঘটনার সুত্রপাত জানতে চাইলে সে বলে ভাইদের মধ্যে ১২ বছর পূর্বে ২য় ভাই কামাল উদ্দীন এরপর ৪র্থ ভাই হাবিবুর ৩য় ভাই জামাল উদ্দীন পরিশেষে বড় ভাই বেলাল মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকমের প্রলাপ বকছে। কখনো বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে, খাওয়া দাওয়ার কোন ঠিক ঠিকানা নেই। তবে বেশির ভাগ সময় তারা বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকছে।

এ সংসারের আমি সবচেয়ে ছোট তার পরও মানসিক ভারসাম্যহীন রোগী ভাইদের নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাকে। তাদের জন্য রান্নাবান্না করা আবার সংসারের আয় রোজগার করা আমার পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এছাড়াও বাবার মৃত্যুর পর মা ছিল তাদের একমাত্র অভিভাবক, সন্তানদের একের পর এক এমন ঘটনা সহ্য করতে না পেরে মা এক সময় পারি জমায় উপারে। ২০১৩ সালে মৃত্যুবরন করেন।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকতা রফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি শুনে ঘটনা স্থলে গিয়েছিলাম তাদের চিকিৎসা বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হবে। স্বাস্থ্য পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ রফিকুল ইসলাম বলেন একই পরিবারে যেহেতু ৪ জন মানসিক রোগী এটি পারিবারিক ভাবে কোন আঘাতের কারনে হতে পারে কিংবা বংশগত কারনে ও হতে পারে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মৌসুমী আফরিদার সাথে কার্যালয়ে ও ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে জেলা প্রশাসক আক্তারুজাম্মান মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি সমাজ সেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে সঠিক ঠিকানা নিয়ে তাদের চিকিৎসার ব্যাবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন।

(কেএএস/এসপি/আগস্ট ০১, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test