E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

লোহাগড়া-লাহুড়িয়া সড়ক

আড়াই কিলোমিটার সড়কে ২৮টি বিপদজনক মোড়, অহরহ দুর্ঘটনা

২০১৮ আগস্ট ০৮ ১৭:৩৫:৫৯
আড়াই কিলোমিটার সড়কে ২৮টি বিপদজনক মোড়, অহরহ দুর্ঘটনা

রূপক মুখার্জি, লোহাগড়া (নড়াইল) : নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার উত্তরাঞ্চলে যাতায়াতের জন্য প্রধান সড়ক হলো, লোহাগড়া-লাহুড়িয়া। লোহাগড়ার শুরু থেকেই আড়াই কিলোমিটার অংশে কমপক্ষে ২৮টি বিপদ জনক মোড় বা বাঁক রয়েছে। এতে করে, জন গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা।

স্থানীয় অধিবাসীরা আলাপকালে জানান, ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মূলত কালনা থেকে লাহুড়িয়া পর্যন্ত রাস্তা চওড়া করে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এটি ওই এলাকার চলাচলের প্রধান সড়ক। কিন্তু লোহাগড়া থেকে কালনা ৫ কিলোমিটার পূর্বে। তাই লোহাগড়া থেকে উত্তর এলাকায় যাতায়াতে সোজাসুজি ওই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের চাচই পর্যন্ত লোহাগড়া-চাচই একটি সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়। এ সংযোগ সড়ক এক সময় ছিল জমির আল দিয়ে মেঠো পথ। সেই মেঠো পথ চওড়া করে নির্মিত হয় সড়ক। ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর(এলজিইডি) সড়কটি পাকা করে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, লোহাগড়া বাজারে জয়পুর মোড় থেকে নারায়নদিয়া সেতু পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার সড়কে রয়েছে কমপক্ষে ২৮ টি বিপদজন্ক বাঁক বা মোড়। সড়কটি বেশি চওড়া না হওয়ায় এ সব মোড়ে বা বাঁকে যানবাহন ঘোরাতে মারাত্মক সমস্যা হয়। বিশেষ করে বড় গাড়ি ঘুরাতে অনেক সময় লাগে। মোড় বা বাঁক গুলো এত কৌণিক যে বিপরীত দিক থেকে গাড়ি আসলে তা একেবারেই দেখা যায় না। তা ছাড়া মোড় বা বাঁক গুলোর অংশে সবচেয়ে বেশি ভাংগাচোরা ও বড় বড় গর্ত। বৃষ্টি হলেই এ সব গর্তে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে অহরহ দুর্ঘটনা ঘটছে।

লোহাগড়া বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী কালু পোদ্দার জানান, তাঁর দোকানের কর্মচারী লিটন সরদার ওই মোড় বা বাঁকের কারণে প্রায় দেড় বছর আগে মোটর সাইকেল দূর্ঘটনায় নিহত হয়। তিনিও ওই মোটরসাইকেলের আরোহী ছিলেন। জয়পুর মোড়ে বাঁক অতিক্রম করতে গিয়ে তাদের মোটর সাইকেলের সঙ্গে ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই লিটন নিহত হয়।

ট্রাক চালক আমির হোসেন বলেন, মোড়ে বা বাঁকে ট্রাক ঘোরাতে অনেক সময় লাগে। একটু পর পর মোড় থাকায় সব পরিবহনকে এই অংশে সবচেয়ে বেশি সময় ব্যয় করতে হয়। এ থেকে পরিত্রাণের কোন উপায় নাই।

লোহাগড়া পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিশ্বনাথ দাস বলেন, সড়কের ওই অংশের অধিকাংশ এলাকা তাঁর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়েছে। বাঁক ও ভাঙ্গাচোরার কারণে প্রতিদিনই এই সড়কে দূর্ঘটনা ঘটছে। সড়কটি পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের জন্য ব্যস্ত থাকে। এই সড়ক দিয়ে এলাকার ৫টি ইউনিয়নের অন্তত দেড় লাখ মানুষ উপজেলা সদরে যাতায়াত করে। কিন্তু সড়কটি এলজিইডির আওতাভূক্ত হওয়ায় পৌরসভার এখানে কাজ করার কোন এখতিয়ার নেই।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী সৈয়দ মোশারেফ আলী জানান, এতটুকু অংশে এত গুলো ঝুঁকিপূর্ণ মোড়-আসলেই বিষ্ময়কর ব্যাপার। সম্প্রতি এই সড়কটি সংস্কারের জন্য প্রায় ৪কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। তবে মোড় বা বাঁক সোজা করার জন্য কোন প্রকল্প আমাদের হাতে নেই। তবে সড়ক সংস্কারের সময় বাঁকের স্থানে সড়ক বেশী চওড়া করে তৈরীর চেষ্টা করা হবে। এতে করে দূর্ঘটনা কমবে।

(আরএম/এসপি/আগস্ট ০৮, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৩ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test