E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কলারোয়ায় ১০ স্কুলছাত্র দিয়ে মহাসড়কে চলছে গাড়ীর কাগজপত্র পরীক্ষা, উৎকণ্ঠায় অভিভাবক

২০১৮ আগস্ট ১১ ১৯:০২:৪৬
কলারোয়ায় ১০ স্কুলছাত্র দিয়ে মহাসড়কে চলছে গাড়ীর কাগজপত্র পরীক্ষা, উৎকণ্ঠায় অভিভাবক

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ১০ স্কুল ছাত্রদের দিয়ে কাঠফাটা রোদের মধ্যে চালকের ড্রাইভিং ও যানবাহনের ফিটনেস পরীক্ষা করানো হচ্ছে। 

গত পাঁচদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রোদের মধ্যে দাড়িয়ে থেকে পুলিশের দেয়া এ দায়িত্ব ছাত্ররা পালন করতে যেয়ে তাদের লেখাপড়া লাঠে ওঠার উপক্রম হয়েছে। অন্যদিকে অভিভাবকদের অনুমোতি না নিয়ে ছাত্রদের দিয়ে এসব কাজ করানোয় স্কুল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

কলারোয়া জিকেএমকে মডেল পাইলট স্কুলের ছাত্র আপন, শাহরিয়ার ও আবির জানায়, ট্রাফিক সপ্তাহ শুরুর দিন থেকে তারা ১০ ছাত্র থানা পুলিশের সাথে সাতক্ষীরা-যশোর মাহাসড়কে মোটর সাইকেল ও বাস ট্রাকের ফিটনেস, চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা করছে। গত শুক্রবারও তাদেরকে দিয়ে সকালে উপজেলার যুগীবাড়ি মোড় ও বিকেলে শেখ আমানুল্লাহ কলেজ মোড়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। শনিবার কাঠফাটা রোদের মধ্যে দাড়িয়ে সকাল বিকাল কষ্ট করানো হয়েছে। এ কাজ করতে যেয়ে তাদের চারদিনে স্কুলের পড়া পিছিয়ে গেছে। ক্লান্ত শরীরে রাতে তারা পড়ার টেবিলেও বসতে পারছে না। তারা ক্লান্ত। ছাত্ররা জানায়, তাদের সামনে দিয়ে অবৈধ নছিমন, করিমন, ভটভটিসহ অন্যান্ন যানবাহন চলাচল করলেও পুলিশ টাকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়। তখন তাদের খারাপ লাগে।

এক প্রশ্নের জবাবে ছাত্ররা জানায়, তারা ১০ জন স্কাউটের সদস্য। স্কুলের হেড স্যারের নির্দেশে তারা সারা দিন না খেয়ে রাস্তায় দাড়িয়ে দাড়িয়ে পুলিশকে সহায়তা করে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে কলারোয়া জিকেএমকে মডেল পাইলট স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো: আব্দুর রবের সাথে কথা হয় তাঁর অফিসে বসে। এসময় তিনি বলেন, জানেন তো- এখন দেশ চালাচ্ছে পুলিশ। গত চার তারিখে থানার ওসি আমাকে ফোন করে বৃক্ষ রোপনের জন্য ১০ জন স্কাউটের ছাত্র চাইলেন। আমি ছাত্রদের থানায় পাঠালাম। তারা এখনও পুলিশের সাথে কাজ করছে। ছাত্রদের পড়া লেখাসহ শাররীক ক্ষতি হচ্ছে এসব বিষয়ে তাদের অবিভাবকরা জানেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, অবিভাবকরা কি বলবে ? পুলিশই সব।

কলারোয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: আব্দুল হামিদ জানান, রাষ্ট্রীয় বা সামাজিক কাজে স্কাউটদের কাজে লাগানো যেতে পারে। তবে তাদের লেখাপড়ার বিষয়টা আগে খেয়াল রাখতে হবে। স্কুলে না করে হয়ে যাওয়া ক্ষতিটা শিক্ষার্থীরা যাদি অন্যভাবে পুষিয়ে নিতে না পারে তবে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার বৃদ্ধি পাবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছৃুক ছাত্র অভিভাবকরা জানায়, নিরাপদ সড়কে দাবিতে শিশু আন্দোলন উঠে গেছে। সরকার দাবি মেনে নেয়ায় শিক্ষার্থীরা স্কুলে ফিরে গেছে। এ অবস্থায় অনুমোতি না নিয়ে জিকেএমকে পাইলট স্কুলের স্কাউট শিক্ষক মনিরুল ইসলাম লেখাপড়া বাদ দিয়ে আমাদের সন্তানদের রাস্তায় পাঠাচ্ছে পুলিশের সাথে চাঁদাবাজি শিখতে। এটা দু:খ জনক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মারুফ আহম্মদ জানান, সাতক্ষীরার পুলিশ সুপারের পরামর্শ মতে স্কাউটের ছাত্রদের নিয়ে রাস্তায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, সারা দেশে আন্দোলনের সময় অভিভাবকরা কোথায় ছিলো। এখন অবিভাবকরা রাগ করলে হবে কেন ? আমি প্রধান শিক্ষকের কাছে ১০ ষ্টুডেন্ট চাইছি। তিনি শিফট করে না দিয়ে যদি একই ষ্টুডেন্ট প্রতিদিন পাঠান তাতে তো আমার কিছু করার নেই। (ছবি আছে)। সাতক্ষীরা প্রতিনিধি।

(আরকে/এসপি/আগস্ট ১১, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test