E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী নির্যাতনের মামলায় আইনজীবী জেল হাজেতে

২০১৮ আগস্ট ১৫ ১৫:৫৪:৩০
যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী নির্যাতনের মামলায় আইনজীবী জেল হাজেতে

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : শশুর বাড়ি থেকে মোটর সাইকেল না দেওয়ায় মা ও বোনকে নিয়ে স্ত্রীকে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগে এক আইনজীবীকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

মঙ্গলবার সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হোসনে আরা আক্তার এ আদেশ দেন।

আসামীর নাম জিএম আব্দুর রাজ্জাক। তিনি খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার বামিয়া গ্রামের নুরুল হক গাজীর ছেলে ও খুলনা শহরের কোতোয়ালী থানাধীন নিরালা এলাকার বাসিন্দা।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোলের নাজমুল ইসলাম খান চৌধুরীর মেয়ে সামান্থা স্মীথ খান চৌধুরীর সঙ্গে খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার বামিয়া
গ্রামের নুরুল হক গাজীর ছেলে বর্তমানে খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাড.জিএম আব্দুর রাজ্জাকের ৭৫ হাজার টাকা কাবিনে বিয়ে হয়। বর্তমানে সামির ইয়াসার রুশান নামে তাদের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। ২০১৮ সালের ২২ জানুয়ারি মোটর সাইকেল কেনার জন্য দাবিকৃত যৌতুকের দু’ লাখ ৫০ হাজার টাকা আনতে অপারগতা প্রকাশ করায় রাজ্জাক তার মা ও বোনের সঙ্গে পরামর্শ করে সন্তানসহ স্ত্রীকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়।

গত ২৯ এপ্রিল বিকেলে আপোষ মীমাংসার জন্য সামান্থা স্মীথ খান চৌধুরীর বাপের বাড়িতে বসে আলোচনার একপর্যায়ে রাজ্জাক, তার মা জামিলা খানম ও বোন আয়েশা খাতুন জলি মোটর সাইকেলের জন্য টাকা চান। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় মা, ছেলে ও মেয়ে মিলে সামান্থাকে পিটিয়ে জখম করে কৌশলে পালিয়ে যায়। ২৯ এপ্রিল দিবাগত গভীর রাতে সামান্থাকেসাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় গত ৭ মে সামান্থা স্মীথ খান চৌধুরী বাদি হয়ে সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে রাজ্জাক, তার শ্বাশুড়ি ও ননদের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। বিচারক হোসেন আরা আক্তার সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য শহর সমাজসেবা কর্মকর্তা শেখ শহীদুর রহমানকে নির্দেশ দেন। তদন্ত প্রতিবেদন পেয়ে গত২৬ জুন আদালত সকল আসামীদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১ গ/৩০ ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে জামিলা ও আয়েশা সংশ্লিষ্ট আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেলেও রাজ্জাক মহামান্য হাইকোর্টের বিচারক ওবায়দুল হাসান ও এসএম কুদ্দুসজামানের বেঞ্চ থেকে মীমাংসার শর্তে ছয় সপ্তাহের জামিন লাভ করেন। মঙ্গলবার তিনি সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে জামিন আবেদন জানালে দীর্ঘ ছয় সপ্তাহে স্ত্রীর সঙ্গে কোন প্রকার যোগাযোগ না করার প্রমান পাওয়ায় তাকে আগামি ২৬ আগষ্ট পর্যন্ত জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

প্রসঙ্গত, খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাড. জিএম আব্দুর রাজ্জাক ও তার সহযোগি অ্যাড. বিএম ফারুকের বিরুদ্ধে মহামান্য হাইকোর্টের কয়েকটি জামিন আদেশ জালিয়াতি সংক্রান্ত বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে ২০১২ সালের ২৬ জুলাই তলবী সভা আহবান করে আইনজীবী
সমিতি। সে অনুযায়ী ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি ২০১২ সালের ৪ অক্টোবর ওই দু’ আইনজীবীর সদস্যপদ বাতিল ও ঢাকা বার কাউন্সিলের সনদ বাতিলের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করেন।

(আরকে/এসপি/আগস্ট ১৫, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test