E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কুষ্টিয়ায় আত্মহত্যার প্ররোচনাকারীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

২০১৮ সেপ্টেম্বর ০৪ ২২:৪২:১৫
কুষ্টিয়ায় আত্মহত্যার প্ররোচনাকারীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার মিরপুরে প্রেমিকের প্রতারনার কারনে গলাই ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করা স্কুল ছাত্রী সুমাইয়া’র আত্মহত্যার প্ররোচনাকারীদের শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে আটিগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় আটিগ্রাম মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীরা এ মানববন্ধনে অংশ নেয়। মানবন্ধনে সুমাইয়ার বাবা শফিকুল ইসলাম ও মা বিলকিস বানু সন্তানের অত্মহত্যা প্ররোচনাকারী জমজম আলী ও তার পিতা আব্দুল্লাহ’র ফাঁসির দাবী জানান। সেই সাথে আর কোন সুমাইয়াকে যাতে হারাতে না হয় সেজন্য আত্মহত্যার প্ররোচনাকারীদের শাস্তির দাবী করে সাধারন শিক্ষার্থী ও তার সহপাঠিরা।

মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন আটিগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহাম্মদ খেলাফত হোসেন, ছাতিয়ান ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য এম এ মমিন মল্লিক, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আব্দুল কাইয়ুম, আব্দুল হালিম, আহসান উল্লাহ, সহকারী প্রধান শিক্ষক আজিজুল হক, সহকারী শিক্ষক আব্দুল আলিম, মামুন-অর-রশিদ, আনিছুর রহমান, শাহাবুবুর রহমান, রফিকুল ইসলাম, শিল্পী খাতুন, রুমানা খাতুন, আটিগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম, নিলুফা ইয়াসমিন, কামরুল ইসলাম প্রমুখ।

গত শনিবার সন্ধ্যায় গলাই ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে সুমাইয়া খাতুন। পরেরদিন রবিবার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেছে। নিহত সুমাইয়া মিরপুর উপজেলার ছাতিয়ান ইউনিয়নের আটিগ্রাম গ্রামের শফিকুল ইসলামের মেয়ে এবং আটিগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণির ছাত্রী।

নিহত সুমাইয়ার মা বিলকিস খাতুন জানান, দীর্ঘদিন ধরেই আমার মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখায় জমজম। পরে আর বিয়ে করতে রাজি হয়নি। সে আমার মেয়েকে ফোন দিয়ে বলে তার কাছে ছবি আছে যা ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবে। কোন স্কুলেই তাকে ভর্তি নেবে না। সমাজেও মুখ দেখাতে পারবে না। এজন্য সে শনিবার সন্ধ্যায় ওড়না পেচিয়ে মারা যায়। আমি এর সুষ্টু বিচার চাই।

সুমাইয়ার বাবা শফিকুল ইসলাম জানান, আমার একটি ছেলে ও একটি মেয়ে। ছেলেটি বড়। সুমাইয়া ছোট হওয়ায় একটু বেশিই আদরের। কিন্তু বখাটে শাহরিয়ার আমার মেয়েকে বাঁচতে দিল না। তার অশোভন আচরণের কারণেই মেয়ে সুমাইয়া আত্মহত্যা করেছে।

তিনি আরো বলেন, সুমাইয়া পড়ালেখায় বেশ ভাল। তাতে আগ্রহও বেশি। অনাকাঙ্খিত ঘটনার কারণে সুমাইয়া মানষিকভাবে কিছুদিন ভেঙে পড়েছিল। তাই সপ্তাহখানেক সে স্কুলে যেতে পারেনি। পরে সুমাইয়া স্কুলে গেলে স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে সাফ জানিয়ে দেয় তাকে আর স্কুলে আসতে হবে না। এতে আমার মেয়ে সুমাইয়া আরো ভেঙে পড়ে। আর নানা কারণেই মেয়েটি আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। মেয়ের এমন করুণ মৃত্যুর জন্য শাহরিয়ার ও তার পরিবারকে দায়ী করেন তিনি।

আটিগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লুৎফর রহমান জানান, আমি বিষয়টি সম্পর্কে সঠিক জানি না। তবে স্কুল থেকে কেন বের করা দেওয়া হয়েছে প্রধান শিক্ষক জানে। তবে বেশ কিছুদিন ধরেই সুমাইয়া স্কুলে আসে না। আটিগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহাম্মদ খেলাফত হোসেনের মুঠোফোনে জানান, আমরা তাকে স্কুল থেকে বের করে দেয়নি। ঐ স্কুল শিক্ষার্থীর শোকে তার পরিবারের লোকজন পাগল হয়ে গেছে। এজন্য ভুল তথ্য দিচ্ছে সুমাইয়ার বাবা।

মিরপুর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) লাল চাঁদ জানান, সকালে আমরা নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে প্রেরন করেছি। কি কারনে সে আত্মহত্যা করেছে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(কেকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test