E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

লেবুর বাগান করে সাবলম্বীর পথে পলাশবাড়ীর ফাতেমা পরিবার

২০১৮ সেপ্টেম্বর ১০ ১৮:১২:২৪
লেবুর বাগান করে সাবলম্বীর পথে পলাশবাড়ীর ফাতেমা পরিবার

গাইবান্ধা প্রতিনিধি : গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের পেপুলিজোর গ্রামের মৃত্যু মোখলেছুর রহমানের স্ত্রী ফাতেমা বেওয়া (৫০)'এর নীবির তত্বাবধানে বেড়ে ওঠা ১৫'শ গাছ থেকে লেবু তুলে সাবলম্বীর দিকে এগুচ্ছে এ পরিবারটি। ফাতেমা বেওয়া ২০১৪ সালে প্রথম ১৪ শতক জমিতে ১২৫ টি গাছ রোপনের মাধ্যমে চাষ শুরু করেন ২০১৫ সালের মাঝামাঝিতে লেবু ধরতে থাকে এবং এক লক্ষ টাকা আয় করেন, এই টাকা দিয়ে ১০ শতক জমি ক্রয় করার ফলে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।

বর্তমানে ৯ বিঘা জমিতে দেড় হাজার লেবু গাছ ফলে পরিপূর্ণ। ঐ সময় স্বামী মোখলেছুর রহমান ঢাকায় অবস্থান করতেন তার উৎসাহ উদ্দিপনায় নিরলস পরিশ্রমে এ লেবু বাগানটি আজ অনেক বড় করেছেন তিনি। বড় ছেলে ও স্বামী গত হয়েছেন কিছুদিন হলো, মৃত্যুতে শোকাহত পরিবারটি এ লেবু বাগানটিকে ঘীরেই তাদের সংসার। দুই ছেলেকে নিয়ে তার পথ চলা। ছোটছেলে ফরিদ ইসলাম সিলেটে সুনামগঞ্জে সুরমা স্কুল এন্ড কলেজের সহকারি শিক্ষক সেখান থেকেই সার্বিক দিক-নির্দেশনা দিয়ে আসছেন।

নিজের কাছে অবস্থানরত মেজো ছেলে ফরহাদ হোসেন লেবু বাজারজাতকরণে নিয়োজিত। গাইবান্ধা সদর, তুলশিঘাট বাজার, ঢোলভাঙ্গাহাট ও পলাশবাড়ী কালীবাড়ি হাটে প্রতিদিন ১৫'শ থেকে ২ হাজার লেবু নিয়োমিত বিক্রি করতে হচ্ছে। প্রতিদিন এতো লেবু স্থানীয় বাজারে বিক্রি না হওয়ায় নুতুন বাজার খুঁজতে আছেন তিনি। কারণ এ ফলগুলি প্রতিদিন উঠাতে হচ্ছে।

পলাশবাড়ী উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের কোন সহায়তা ছাড়াই ও স্থানীয় কিটনাশক বিক্রেতার পরামর্শে এই নারী উদ্যাক্তা দেশের কৃষিখাতে লেবু চাষে গাইবান্ধায় এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বলে পলাশবাড়ীবাসী মনে করেন।

পলাশবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার আজিজুল ইসলাম গত ৬ সেপ্টেমর এ বাগানটি পরিদর্শন করেছেন বলে ফাতেমা বেওয়া জানান। এ পরিদর্শনের পূর্বে যোগাযোগ করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ লেবু বাগানে আসার প্রয়োজন বোধ করেননি।

উপজেলা কৃষি অফিসার পরিদর্শন করে ব্যবস্থাপত্রে রোগ অনুযায়ী নির্দেশনা মোতাবেক স্পে প্রয়োগ করতে বলেছেন, কিন্তু এ বিশাল বাগানে বড় স্প্রে মেশিনের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। দেখা দিয়েছে আধুনিক যন্ত্রপাতির। এই যন্ত্রাদি ক্রয়ের ব্যাপারে কতৃপক্ষের দিকনির্দেশনের দরকার আছে বলে মনে করেন ফাতেমা বেওয়া।

চায়না থ্রী এ লেবু বাগানটিতে বর্তমানে যে রোগ দেখা দিয়েছে যেমন, লেবুর গায়ে বাদমি দাগ, গাছের পাতা দিনে দিনে মুরে যাওয়া, অল্পবয়সে লেবু পেকে যাওয়া।

প্রথমে লোক নিয়োগ করে ‘কাটিং পদ্ধতি’তে কলম কেটেছেন ফাতেমা বেওয়া এখন নিজে'ই নিয়মিত কলম কেটে এ বাগানটিকে বিশালতায় পরিণত করেছেন। বর্তমানে আর'ও ১ হাজার কলম কাটা রয়েছে এগুলো বিক্রির জন্য বলে তিনি জানান। মেয়েও লেবু চাষ করে থাকেন তার শশুরালয়ে। কাজের মাঝে থাকতে মেয়েকে উৎসাহ প্রদান করেন তিনি। লেবুর গুনাগুন বহুমাত্রিক, ত্বকের কোঁষ গঠনে সাহায্য করে এর উপকারিতার জুরি মেলাভার, শরবত তৈরিতে অতুলনীয় ভূমিকা রাখে।

প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজার উৎপাদিত এ পর্যাপ্ত লেবু বাজারজাত করতে হিমশিম খাচ্ছে এ পরিবারটি। সঠিকভাবে বাজার বা মোকাম না পাওয়ায় সঠিক বাজারমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পরিবারটি এবং প্রতিমাসে ১ লক্ষ ত্রিশ হাজার টাকা আয়ের সম্ভাবনা আজ হুমকির মূখে।

স্থানীয় বাজারে নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করতে হচ্ছে এ ফলগুলোকে। এমতঅবস্থায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও দিকনির্দেশনা সহ কৃষি অধিদপ্তরেরর নিকট সহযোগিতা কামনা করছেন উদ্যাক্তা ফাতেমা বেওয়া ।

(এসআইআর/এসপি/সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test