E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হাওরাঞ্চলে কমছে মিঠা পানির মাছ

২০১৮ সেপ্টেম্বর ১৩ ১৫:৩২:০২
হাওরাঞ্চলে কমছে মিঠা পানির মাছ

আল মাহবোব আলম, মদন (নেত্রকোনা) : নেত্রকোনার হাওরাঞ্চল মিঠা পানি মাছের জন্য বিখ্যাত। এর মধ্যে মদন উপজেলার হাওরাঞ্চলের সবকটি হাটবাজারে ইদানিং বহু প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত ও বড় মাছের আকাল দেখা দিয়েছেঅ এতে অপুষ্টিতে ভুগছেন এলাকার জনগণ।

এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, এ মৌসুমে এলাকার হাটবাজার গুলোতে মিঠা পানির বড় মাছের ভরপুর থাকার কথা। কিন্তু বর্তমানে হাটবাজার গুলোতে ২/৩ প্রকারের পোনা মাছ ছাড়া বড় মাছ চোখে পরে না।

ইতিমধ্যে মিঠা পানির আইর-গুজি, চিতল, কাল বাউস, রিটা, রুই, কাতল, মৃগেল, শোল-গজার,গাং মাগুর, বাইগারসহ বহু প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হওয়ার পথে। বর্ষার পানি আসার সাথে সাথেই এক শ্রেণীর অসাধু মৎস্য শিকারি সরকার নিষিদ্ধ কারেন্ট, কণা, মশারি জাল দিয়ে মা মাছসহ পোনা মাছ নিধন করায় শুকনো মৌসুমে বাশেঁর বায়না দিয়ে ঘেড়াও করে পানি শুকিয়ে মাছ ধরার এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে এলাকার অভিজ্ঞ মহলের ধারনা।তাদের মতে প্রশাসন নতুন পানি আসার সাথে সাথেই বিভিন্ন এলাকার অসৎ মৎস্যজীবিদের সাথে আলোচনা করে মা ও পোনা মাছ নিধন বন্ধ করলে মিঠা পানির মাছের জন্য বিখ্যাত এ অঞ্চলের লোকজন মিঠা পানির ছোট বড় মাছের অভাব পূরণ করে পুষ্টিহীনতা থেকে রক্ষা পেত।

এছাড়া মদন উপজেলার উন্মুক্ত জলাশয় গুলোসহ সব জলাশয় মসজিদ-মাদ্রাসার নামে ইজারা পত্তন হয়ে যাওয়ায় “জাল যার জল তার ” এনীতি অনুসৃত হচ্ছে। দারিদ্র লোকজন ঠাক-ঠেলা জাল দিয়ে মাছ ধরার সুযোগ পাচ্ছে না। আর ইজারাদারগণ তাদের ইচ্ছা মাফিক পানি সেচন করে মাছ ধরছেন।

মৎসজীবি হাসনপুর গ্রামের দিগেন্দ্র, নরেন্দ্র রানা, কার্তিক জানায়, এখন জাল ফেলে মাছ ধরার কোনো স্থান পাচ্ছি না।এলাকার সবগুলো জলাশয় পত্তন দেয়ায় আমাদের জেলে পরিবারগুলো এ পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে। আর এলাকাবাসী হারাচ্ছে মিঠা পানির সুস্বাধু মাছ।

এ বিষয়ে মদন প্রেসক্লাবের প্রতিষ্টাতা সভাপতি মোতাহার আলম চৌধুরী বলেন, এ সময় স্থানীয় হাট-বাজার গুলোতে বড় মাছে সয়লাব ছিল। কিন্তু বর্তমানে বড় মাছের আকাল। প্রশাসন এবং জনগণের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সম্ভাবনাময় এ এলাকার মিঠা পানি মাছের অভাব দূর করা সম্ভব। লোক দেখানো আইন প্রয়োগ করে এ অবস্থা থেকে উত্তোরণ কোনো দিনেই সম্ভয় নয়। মিঠা পানির মাছের জন্য বিখ্যাত এ এলাকার জনগণ যাতে পুষ্টিহীতায় না ভোগে সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের আগাম পরিকল্পনা গ্রহন করার জন্য তিনি আহব্বান জানান।

দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা সেলিম জাহাঙ্গীর বহু প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, প্রকৃতিক দূর্যোগ,হাওর ভরাট,শুকনো মৌসুমে হাওরগুলো সেচ দিয়ে মুকিয়ে মাছ ধরা এবং অভায়শ্রম না থাকায় এ সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। এর নিরসনের জন্য অভয়াশ্রম নির্মাণের প্রস্তাব কর্তৃপক্ষের বরাবরে প্রেরণ করা হয়েছে। এবং নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ শিকার বন্ধ করার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

(এএমএ/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test