E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাতক্ষীরায় ভেস্তে গেল মধ্য রাতের মৎস্য বিলাস

২০১৮ সেপ্টেম্বর ১৪ ১৮:৪৭:০৮
সাতক্ষীরায় ভেস্তে গেল মধ্য রাতের মৎস্য বিলাস

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : শিকারীদের প্রতিবাদ ও হৈ চৈয়ের মুখে শেষ পর্যন্ত ভেস্তে  গেল মধ্যরাতের মৎস্য বিলাস। সাতক্ষীরার বিচার বিভাগের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা ছিপ ও মাছ ধরার সব সরঞ্জাম গুটিয়ে নিয়ে রাতেই বিষন্ন বদনে  ফিরে গেলেন। বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। 

তবে সাতক্ষীরা পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতি বলেন, আজ কালই পৌর দীঘিতে সৌখিন মৎস্য শিকার ফের শুরু হবে। এরই মধ্যে বিষয়টির সম্মানজনক নিষ্পত্তিও হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সৌখিন মৎস্য শিকারী জানান, সৌখিন শিকারীদের মতো সাতক্ষীরা বিচার বিভাগের শীর্ষ স্থানীয় কয়েকজন কর্মকর্তা পৌর দীঘিতে মাছ ধরার খায়েশ প্রকাশ করেন। কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে তাদের সহযোগিতাও করেন। তবে গোলতাল বেঁধে যায় মৎস্য শিকারের সময় নিয়ে। তারা চান বৃহস্পতিবার রাতে মাছ ধরতে । অন্যরা বলেন মাছ ধরা শুরু হবে শুক্রবার কাকডাকা ভোরে।

বিচার বিভাগের কয়েক কর্মকর্তা অন্য কারও সাথে মাছ ধরতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে রাতে কর্তৃপক্ষের সহায়তায় পৌর দীঘিতে মাছ ধরতে মাচার ওপর বসে যান। গভীর রাত অবধি মৎস্য শিকার শেষে তাদের ফিরে যাবার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই শুরু হয়ে যায় তুমুল হৈ হট্টগোল। টিকিটধারী অন্যান্য শিকারীরা এতে বাধার সৃষ্টি করেন ।

তারা বলেন, রাতে ছিপ বড়শি ও মশলা ফেললে এর ঘ্রাণে সব মাছ সেদিকে চলে যেতে পারে। ফলে সকালে মৎস্য শিকার ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে । কারণ সব মাছ আগে ফেলা মশলার দিকে চলে যাবে। এ নিয়ে মধ্যরাতে শুরু হয় হৈ চৈ। শিকারীরা কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে অশোভন বাক্য ছুড়ে দিতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত কর্মকর্তারা তাদের ছিপ বড়শি গুটিয়ে নিয়ে কোনো প্রতিবাদ ছাড়াই বিষন্ন বদনে ফিরে যান।

উল্লেখ্য, প্রতি বছরের মতো এবারও সাতক্ষীরা পৌর দীঘিতে মাছ ধরার জন্য পৌর কর্তৃপক্ষ ৭০ টি টিকিট দেয়। তবে এবারের সব টিকিট সিন্ডিকেট করে সাতক্ষীরার পরিদর্শক মর্যাদার একজন পুলিশ কর্মকর্তা কিনে নেন। পরে তিনিই বিভিন্ন দামে বিক্রি করেন টিকিটগুলি। শুক্রবার ভোরে লটারি করার কথা ছিল। শিকারীরা তাদের মতো করে দীঘির চারধারে মাছ ধরার মাচাও তৈরি করেন। তবে এবার পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মৎস্য শিকার আহবান না করায় শিকারীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছিল। মাছ ধরার মাইকিং করার আগেই সব টিকিট সিন্ডিকেটের হাতে তুলে দেয় পৌর কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় পৌর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলেছেন নাগরিকরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতি বলেন, ‘রাতে মাছ ধরতে বসায় কয়েকজন শিকারী বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে সম্মানহানিকর কথাবার্তা বলেছেন। এ জন্য তারা মাছ না ধরেই ফিরে গেছেন’।

এতে দুঃখ প্রকাশ করে মেয়র বলেন ‘ বিষয়টি নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অচিরেই মাছ ধরা উৎসব শুরু হবে’।

পৌর কাউন্সিলর কাজী ফিরোজ হাসান বলেন, মাছ ধরা নিয়ে পুরনো শিকারী ও নতুন শিকারীদের মধ্যে বিরোধ বাঁধে। এজন্য গোলমাল দেখা দেওয়ায় বন্ধ রয়েছে মাছ ধরা। তিনি বলেন বিচার বিভাগের কমর্মকর্তাদের জন্য পৃৃথক ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

(আরকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test