E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভাল নেই রাঙ্গাবালীর জেলেরা, লোডশেডিং নেই তবুও ভোগান্তি

২০১৮ সেপ্টেম্বর ১৬ ১৮:৩৬:৫৪
ভাল নেই রাঙ্গাবালীর জেলেরা, লোডশেডিং নেই তবুও ভোগান্তি

সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) : সমুদ্রের মোহনায় মাছ ধরছেন রাঙ্গাবালী উপজেলার মৎসজীবিরা। লোডশেডিং নেই, সার্বক্ষণিক ‘সৌরবিদ্যুৎ’ ব্যবস্থা। এ স্বস্তি শুধুই স্বাভাবিক জীবন ধারায়। কিন্তু জেলেদের মুখে যখন হাসি ফোটে, তখনই অস্বস্তি। নদী আর সাগর থেকে ধরা ঝাঁকেঝাঁকে মাছ নিয়ে জেলেরা তীরে ফিরলেই বরফ সংকট। কারণ পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় নেই কোনো বরফকল।

সাগর ও নদীবেষ্টিত পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিড সংযোগ সঞ্চালন লাইন পৌঁছেনি বলেই এখানে বরফকল স্থাপন করা যায়নি। ৪৭০ বর্গকিলোমিটারের এ উপজেলার প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষকে সভ্যতার সোপান হিসেবে কাজ করছে শুধু কিছু সৌরবিদ্যুৎ ব্যবস্থা। এ অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ মৎস্য ও কৃষি পেশার সঙ্গে নিয়োজিত। জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিড সংযোগ না থাকায় একমাত্র সৌরবিদ্যুৎ ভরসা। এতে স্বাভাবিক জীবন ধারায় তেমন বাঁধা না এলেও অর্থনৈতিক বিস্তারে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।

স্থানীয় জেলেরা জানান, এ উপজেলার ৬০ শতাংশ মানুষ মৎস্য আয়ের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় বরফকল স্থাপন হয়নি। তাই এখানে বরফ তৈরি হচ্ছে না। পার্শ্ববর্তী উপজেলা কলাপাড়া, গলাচিপা, জেলা সদর পটুয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অধিক মূল্যে বরফ সংগ্রহ করতে হয়। সেটিও মৌসুমে অপ্রতুল। প্রচুর মাছ ধরা পড়লে তখন বরফ সংকট দেখা দেয়। এভাবে বরফ সংগ্রহ করতে না পেরে প্রায়শই বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়ছেন স্থানীয় জেলেরা। উপজেলার ছোটবাইশদিয়া গ্রামের জেলে হাসান মৃধা এমনটিই অভিযোগ করেন।

শুধু মৎস্যজীবীরাই নয়, রাঙ্গাবালীর কৃষিজীবীরাও রয়েছেন চরম দুশ্চিন্তায়। বিদ্যুতের অভাবে উপজেলায় হিমাগার স্থাপন হয়নি। যার কারণে মৌসুমি তরমুজ, আলু, কাঁচামরিচ, পেঁয়াজসহ কাঁচামাল মজুদ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে প্রাপ্যের চেয়ে কমমূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা। এতে তারা অনেক সময় পাচ্ছেন না তাদের লভ্যাংশ।

উপজেলার কোড়ালিয়া গ্রামের কৃষক মিথেল হাওলাদার বলেন, ‘দক্ষিণাঞ্চলে তরমুজ উৎপাদনের অন্যতম এলাকা রাঙ্গাবালী। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় এখানে হিমাগার নেই। তাই তরমুজ ও কাঁচামাল বাধ্য হয়ে কমদামে বিক্রি করতে হয়। কিন্তু মজুদ করা গেলে কৃষকরা বেশ লাভবান হতেন।’

এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘সম্ভাবনাময়ী এ উপজেলায় সরকারি বিদ্যুৎ আসা খুব প্রয়োজন। বিদ্যুৎ এখন উপজেলাবাসীর সময়ের দাবি। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিগতায় এখানেও বিদ্যুৎ পৌঁছাবে বলে আশা করি।’

রাঙ্গাবালী উপজেলা উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক লায়ন মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে কিছু দিন আগে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী ’র সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করলে তিনি বিদ্যুৎ ভবনে একটি প্রস্তাবনা জমা দেয়ার পরামর্শ দেন। আমরা খুব শিগগর প্রস্তাবনাটি জমা দেব।’

(এসডি/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test