E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

বাই সাইকেলে ৬৪ জেলা ভ্রমণ করলেন রানীশংকৈলের আহসান হাবিব

২০১৮ সেপ্টেম্বর ১৭ ১৮:১৯:১৯
বাই সাইকেলে ৬৪ জেলা ভ্রমণ করলেন রানীশংকৈলের আহসান হাবিব

খুরশিদ আলম শাওন, রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) : ঠাকুরগাঁয়ের রাণীশংকৈল পৌরশহরের রংপুরিয়া বস্তির মোঃ আইনুল হকের ছেলে আহসান হাবিব স্ব-উদ্যোগে নিজস্ব অর্থায়নে বাই সাইকেল যোগে বাংলাদেশের ৬৪টি জেলা ও বিভিন্ন উপজেলা ভ্রমন করেন ১০২ দিনে।

চলতি বছরের ২রা এপ্রিল ভ্রমণ শুরু করে ১২ই জুলাই জাতীয় প্রেস ক্লাবে ভ্রমণ যাত্রা শেষ করেন তিনি। ভ্রমনের সময় সারা দেশের উন্নয়ন দেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নাগরিক সংবর্ধনা দেবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কারুকার্যে ভরা একটি কলমের মাধ্যমে। যখন ভ্রমনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তখন একটি কথা তার মনোবলকে আরো শক্তিশালী করে তুলে কেন সে পারবেনা। পারাটা খুব সহজ। কারণ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশ স্বাধীকার আন্দোলনের সময়কার সংগ্রামী ভাষণ ‘তোমাদের যার কাছে যা কিছু আছে তাই নিয়ে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়’। তাইতো ভাঙ্গা বাই সাইকেলে করেই ভ্রমণ যাত্রার সিদ্ধান্ত নিয়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ভ্রমনের সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত করে ফেললেন তিনি।

পৌরসভার নাগরিক সনদপত্র ও চারিত্রিক প্রত্যয়ন পত্র সহ প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র সংগ্রহ করা হয়। ভ্রমণ শুরুর আগে অবগত করা হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয়, থানা অফিসার ইনচার্জ মহোদয়গণকে। ভ্রমণ শুরু করেন ২০১৮ সালের ২রা এপ্রিল বেলা সাড়ে ১১টার সময় নিজ বাড়ি থেকে।

এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. হামিদুর রহমান, এলাকাবাসী ও সংবাদকর্মী মোঃ সেতাউর রহমান ও আনোয়ার হোসেন জীবন উপস্থিত ছিলেন। ভ্রমণের উদ্যেশ্য ছিল সারা বাংলাদেশ ঘুরে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন ও উন্নয়ন কর্মকান্ড স্ব-চক্ষে দেখে বাস্তব জ্ঞান অর্জন করা। এও মহৎ উদ্যেশ্য ছিল“ আমার দেশের উন্নয়ন, করি মূল্যায়ন” নামক শ্লোগান এবং আত্ম স্বাস্থ্য হই সচেতন, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতায় গড়ি জীবন, “দেশি পণ্য বেশি বেশি করি ব্যবহার, এই দেশ তোমার আমার, দেশের অর্থ সঠিক কাজে করি ব্যবহার ” বার্তাগুলো প্রচার করা যা একদিন মানুষের হৃদয়ে আঁচড় কাটবে।

এই স্বপ্নের ভ্রমণের পথ চলা, যা দেখে পথচারীরা সাধুবাদ জানায় মোবাইলে ছবি তোলে আর হাত নেড়ে উৎসাহ যোগায় পথ চলতে। সাবাস বাঙালী এগিয়ে যাও বলে ধন্য হোক দেশ তোমাদের মত গর্বিত সন্তানদের জন্য। ভ্রমণের সময় মাথায় ছিল ত্রিকোনাকার তিন রঙের একটি ক্যাপ। আর এ ক্যাপটি মানুষের বেশি নজর কেড়েছে যার ফলে মানুষ আকৃষ্ট হয়েছে এই ভ্রমণ পিপাসুর প্রতি। ক্যাপটি নিজস্ব কারিগরিতে তৈরি করা। তিন রঙের ক্যাপটির সাদা অংশ বুঝায় তিনার পরিস্কার মন, সবুজ অংশ হলো তিনার ছায়া আর লাল অংশ তিনার মায়ার প্রতিক বহন করছে।

ক্যাপটি দেখে ৬৪ জেলা ও বিভিন্ন উপজেলার মানুষ বিভিন্নভাবে উৎসাহ যুগিয়েছে যা চলার গতিকে করেছিল আরো বেগবান। তখন তিনার শ্লোগান আর বার্তাকে স্বাগত জানিয়ে উৎসাহ দিয়ে পথচারিরা বলতে থাকেন সাবাস বাঙালী এগিয়ে যাও। ধন্য হোক তোমার ভ্রমন, হোক তোমার স্বপ্ন পুরন। তিনি বড়ই মুগ্ধ হয়েছেন দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষের ভাষা, কৃষি কালচার, আন্তরিকতা আর অতিথি আপ্যায়ন দেখে। এসব কিছুই বেগবান করেছে ভ্রমনের সময় চলার গতিকে। উদ্যম নিয়ে চলেছেন অবিরাম গতিতে। এতটুকু বিচলিত হননি, হননি একটুও পিছু পা। পৌঁচেছেন স্বপ্নের কাঙ্খিত ঠিকানায়।

ভ্রমণ সময়ের প্রতিটি জেলার স্থানীয় অবস্থান তৃণমুল মানুষকে যেমন মূল্যায়ন করেছেন তেমনি মূল্যায়ন পেয়েছেন। ভ্রমন রুট উপস্থিতি ও ব্যবহারিক ডায়েরীতে মানুষ মনের দুই এক কথা লিখে দিয়েছেন আন্তরিকতার সাথে। দেশব্যাপী প্রায় ৪৬৬ জন তাদের মনের ভাবগুলো ডায়েরীভুক্ত করেছেন। তাদের ভাবগুলো প্রকাশ করেছেন ডায়েরীর পাতায়। ভ্রমণকে সমর্থন ও শ্লোগান-বার্তাকে বাস্তবায়ন ও আহসান হাবীবের জীবনের কল্যাণ সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা এবং সফলতার সাহস জুগিয়েছে ওই সব জ্ঞানী জনদের লেখনির ভাষা ও বিভিন্ন ভাবে অনেকেই সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। ভ্রমণ যাত্রায় বাঙালীর রাখাল রাজা বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমান’র হাতে গড়া স্বাধীন বাংলার মানুষের আন্তরিকতা ও ভালবাসা পেয়ে ধন্য হয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে আহসান হাবীব আমাদের প্রতিবেদককে জানান, প্রার্থনা ছিল সুপরামর্শ ও একটি মন্তব্য এলাকার দিক নির্দেশনা। আমি সামান্য শিক্ষিত হওয়ায় ও আর্থিক দুর্বলতার কারণে আমার শ্লোগান ও বার্তার প্রচার প্রচারণা ব্যাপকভাবে করতে পারিনি। তবে আশা করছি আমার এ শ্লোগান ও বার্তা কোন একদিন এক সময় প্রতিটি আঙিনায় প্রতিটি মানুষের কানে কানে পৌঁছাবে।

ভ্রমণ সময়টা ছিল বড়ই ভয়াবহ, উত্তপ্ত আবহাওয়া বিরাজমান ছিল। মাঝে মাঝে বৈরি আবহাওয়া আমার স্বপ্ন যাত্রাকে ভেঙ্গে চুরমার করে দিতে চেয়েছিল কিন্তু আমার মনে বড় জোর ছিল যার ফলে আমাকে পিছু পা করতে পারেনি। এগিয়ে গেছি পুরো উদ্যম নিয়ে সামনের দিকে। আর সারা বাংলাদেশ ঘুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের জোয়ার দেখে বড়ই মুগ্ধ হয়েছি। এ সব দেখে উচ্ছসিত হয়ে উন্নয়নের সুদুর প্রসারী করতে চাই ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নাগরিক সংবর্ধনা দিব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সংবর্ধনার স্মৃতিকে ধরে রাখতে কাঠের তৈরী নৌকার সাথে একটি কলম সংযুক্ত করা হয়েছে যেটি কারুকার্যে ভরা।

সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে সৌভাগ্য যে সারা দেশ ঘুরেছি স্বাধীন স্বাধীনতা পরিবেশে। সাইকেল চালিয়ে দেখেছি সারা দেশ, মাটি ও মানুষকে ভালবেসে। প্রাকৃতিক সুন্দরময় মমতাময় মানুষের সোনার বাংলাদেশ। সমতল বেশি জেলা, কত জেলা নদী নালা, পর্বত কয়েক জেলা। কৃতজ্ঞ আমি সকল স্তরের মানুষের কাছে পাশে ছিল সংবাদকর্মী মুগ্ধ হয়েছি তাদের কাছে পেয়ে।

(কেএএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test