E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় লিমনকে হত্যা করে ৪ যুবক 

২০১৮ সেপ্টেম্বর ২৩ ১৫:৫৬:১৭
ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় লিমনকে হত্যা করে ৪ যুবক 

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের শীতল গ্রামের চতুর্থশ্রেণির স্কুল ছাত্র লিমন হত্যার রহস্য অবশেষে উন্মোচিত হয়েছে। ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। থানা পুলিশের সঠিক পদক্ষেপের কারণে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের ২৬ দিনের মাথায় উন্মোচিত হলো। শিশু লিমন হত্যাকান্ডে জড়িত ৫ যুবককে আটক এবং হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। 

গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) আফজাল হোসেন জানান, গত ২৮ আগস্ট গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শীতল গ্রামে অপহরণ করে খুন করা হয় শিশু লিমনকে। ঘটনার পর থেকেই কোন ক্লু না থাকায় পুলিশ নিহত শিশুর বিভিন্ন পারিবারিক দিক নিয়ে তদন্ত করতে মাঠে নামেন। কয়েক দিন পর একই গ্রামের যুবক নূর আলম (২৪) এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার ঘটনার সূত্র ধরে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নানের নির্দেশে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জাকির হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স সহ গাজীপুরের জয়নগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে একপর্যায়ে সে এই লোমহর্ষক হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার ঘটনা স্বীকার করে জবান বন্দি দেয়।

ঘাতকদের দেয়া জবান বন্দি থেকে জানা যায়, শিশু লিমনের বড়বোনকে ইভটিজিং এবং বার বার প্রেমে প্রস্তাব দিয়ে বিফল হয় একই গ্রামের নেদু মন্ডলের পুত্র হারুনুর রশিদ (২২) ও আব্দুর রশিদের পুত্র তৌফিক প্রধান (১৯)। লিমন ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করে এবং তার বাবা-মাকে জানায়। তাদের কর্মকান্ডে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় শিশু লিমন। তাই লিমনকে পথের কাটা ভেবে তাকে হত্যা করার সিন্ধান্ত নেয় তারা।

শিশু লিমনকে হত্যা করতে তারা দুজন সংঘবন্ধ হয় ওই গ্রামের বেলাল হোসেনের পুত্র নূর আলম (২৪), আব্দুল মজিদ প্রধানের পুত্র সাজু মিয়া (২৫), রফিকুল ইসলাম প্রধানের পুত্র পাপলু প্রধান (১৯) কে নিয়ে। পরিকল্পনা মোতাবেক তারা গত ২৭ আগস্ট সন্ধ্যায় শিশু লিমনকে অপহরণ করে পাশর্^বর্তী একটি জঙ্গলের মধ্যে নিয়েগিয়ে নূর আলম লিমনের পা চেপে ধরে আর তৌফিক জীবিত অবস্থাতেই লিমনের অন্ডকোষ কেটে ফেলে এরপর ঘাতক হারুন লিমনকে জবাই করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরদিন সকালে পুলিশ নিহত লিমনের লাশ উদ্ধার করে।

আদালতে ঘাতকদের দেয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিতে ও মামলার তদন্তের ভিত্তিতে গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মজিবুর রহমান পিপিএম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, গাইবান্ধা পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান ও গাইবান্ধা জেলা পুলিশ সহকারী সি সার্কেল রেজিনুর রহমানের দিক নির্দেশনা মোতাবেক হাল না ছাড়া মনোভাব নিয়ে নিরলস ভাবে তদন্ত চালিয়ে আসামীদের গ্রেফতার করে লোমহর্ষক এই শিশু হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন করা সম্ভব হয়েছে। তিনি আরও জানান, শিশু লিমনকে জবাই করে হত্যাকারী সাজু প্রধানকে গত ২২ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।

উল্লেখ্য চলতি বছরের ২৭ আগষ্ট সোমবার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের নাকাইহাট ইউনিয়ন এর শীতল গ্রামের লুৎফর রহমানের পুত্র লিমন (১০) নিখোজ হয় পরদিন পাশর্^বর্তী পচারভিটা জঙ্গল থেকে তার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এদিকে লিমনের বাবা মা সহ এলাকাবাসী ও সহপাঠিরা হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবী জানিয়েছেন।

(এসআরডি/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test