E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রায়পুরে রমরমা কোচিং বাণিজ্য, সরকারি নীতিমালা মানছে না কেউ

২০১৮ সেপ্টেম্বর ২৭ ১৪:৪৭:৪৪
রায়পুরে রমরমা কোচিং বাণিজ্য, সরকারি নীতিমালা মানছে না কেউ

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল খুব একটা সন্তোষজনক নয়। শিক্ষার মান উন্নয়নে এ উপজেলায় প্রশাসন থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা জোর তৎপরতা চালালেও কোচিং বাণিজ্যের কারণে সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান শিক্ষার সাথে সংশ্লিষ্টরা। 

সরকারি নীতিমালার তোয়াক্কা না করে কোচিং বাণিজ্যের প্রতি অধিক মনোযোগী হয়ে পড়েছেন শিক্ষকরা- এমন অভিযোগ ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের। শিক্ষকরা অতিরিক্ত কোচিংমুখী হওয়ায় ক্লাসের পড়া অনেকটা নিস্প্রভ হয়ে যাচ্ছে।

উপজেলার পৌর শহরের কিছু নির্জন গলিতে বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের নামে সাইনবোর্ড লাগিয়ে চালানো হচ্ছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য। শহরের নামী-দামী স্কুল কলেজের আশ-পাশে এমনই বহু কোচিং সেন্টার গড়ে উঠেছে। স্থানীয় নামী-দামী বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ শিক্ষকরা ভোর থেকে রাত পর্যন্ত এসব কোচিং সেন্টারে পড়ানো নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। প্রতিটি কোচিং সেন্টারে ব্যাচ প্রতি ২০-৩০ জন করে ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে বলে জানা যায়।

মনিটরিং কমিটির যথাযথ কার্যক্রমের অভাব, সরকারি, এমপিওভুক্ত ও প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বাড়তি উপার্জনের মানসিকতার কারণে থামানো যাচ্ছে না কোচিং বাণিজ্য। সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে কোচিং নিষিদ্ধ করলেও উপজেলা মনিটরিং কমিটির দৃশ্যত কোনো কার্যক্রম না থাকায় কোচিং বাণিজ্য ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে এ উপজেলায়। অভিযোগ রয়েছে স্কুল চলাকালেও ক্লাসের ফাঁকে কোনো কোনো শিক্ষক বিদ্যালয়ের আশ-পাশের কোচিং সেন্টারে কোচিং করান।

পৌর শহরে রায়পুর মার্চেন্টস একাডেমী, রায়পুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রাখালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, রায়পুর মহিলা কলেজসহ বেশ কিছু এলাকায় কোচিংপল্লী গড়ে উঠেছে। একই অবস্থা ইউনিয়ন পর্যায়ের প্রতিটি বিদ্যালয়ে।

শহরের শিক্ষকদের চেয়ে গ্রামের শিক্ষকরাও কোচিং বাণিজ্যে কোনো অংশে পিছিয়ে নেই বলে মনে করেন অনেকেই। ইউনিয়ন পর্যায়ের বিদ্যালয়গুলোতে কোচিং বাণিজ্যের জন্য শিক্ষকদের মধ্যে এক ধরনের অসুস্থ প্রতিযোগীতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন অভিভাবক জানান, শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট না পড়লে দুর্ব্যবহার করেন, বিনা অযুহাতে শাস্তি দেন, পরীক্ষার খাতায় নাম্বার কম দেন। তাই বাধ্য হয়ে ছেলে-মেয়েদের কোচিংয়ে দিতে হচ্ছে। অতিরিক্ত কোচিংমুখী হওয়ায় বর্তমানে ক্লাসের পড়া অনেকটা নিস্প্রভ হয়ে পড়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন জানান, সরকারি প্রজ্ঞাপনের নীতিমালা লঙ্ঘন করে কোন শিক্ষক কোচিং বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিল্পী রাণী রায় বলেন, নীতিমালার তোয়াক্কা না করে কোন শিক্ষক যদি ক্লাসে মনোযোগী না হয়ে কোচিং বাণিজ্যের সাথে জড়িত থাকেন তবে সেটা সম্পূর্ণ অনৈতিক। কোচিং বাণিজ্যের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(পিকেআর/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test