E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জাজিরায় পুলিশের মারধরে কলেজ ছাত্র নিহত

২০১৮ সেপ্টেম্বর ২৮ ১৫:২১:০২
জাজিরায় পুলিশের মারধরে কলেজ ছাত্র নিহত

শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় পুলিশের নির্যাতনে এক কলেজ ছাত্রের নিহত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার রাত ৮ টার দিকে উপজেলার বিকে নগর আনন্দ বাজার এলাকায় টহলরত পুলিশের নির্যাতনে বিকে নগর বঙ্গবন্ধু কলেজ থেকে ২০১৮ সালের এইচএসসি উত্তীর্ণ রোকনুজ্জামান পাভেল মারা যায়। জাজিরা থানার ওসি বেলায়েত হোসাইনকেই এলাকাবাসী দায়ী করছে এই হত্যাকান্ডের জন্য।

স্থানীয় সূুত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরে পিকআপ নিয়ে টহলে বের হন জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ বেলায়েত হোসাইন। এসময় তার সাথে ছিলেন অপর এক পুলিশ সদস্য এবং গাড়ি চালক। জাজিরা উপজেলা সদর থেকে পশ্চিম দিকে প্রায় ৬ কিমি বিকে নগর আনন্দ বাজারের উত্তর মাথায় পৌছার পর রাস্তার পাশে মোটর সাইকেল নিয়ে অবস্থানরত দুই কিশোরকে দেখে গাড়ি থামান ওসি বেলায়েত। ওই কিশোরদের দেহ তল্লাশী করতে চায় পুলিশ। এতে আপত্তি জানায় পাভেল। পাভেলের আপত্তিতে নাখোশ হয়ে ওকে চর থাপ্পর, কিল-ঘুষি মারে পুলিশ সদস্যরা। মুহুর্তেই পাভেল মাটিতে লুটিয়ে পরে। প্রথমে প্রত্যক্ষদর্শীরা পাভেলকে ধরাধরি করে একটি ঔষধের ফার্মেসীতে নিয়ে যায়। সেখানে কোন চিকৎসা ব্যবস্থা না থাকায় পাভেলকে পুলিশের গাড়িতে করেই নেয়া হয় জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক পাভেলকে মৃত ঘোষনা করেন।

পাভেলের নিহত হওয়ার খবর পেয়ে রাত বাড়ার সাথে সাথে শত শত মানুষ ভীড় করতে থাকে জাজিরা হাসপাতাল ও থানয়। পাভেলের পিতা বিকে নগর পশ্চিম কাজীকান্দি গ্রামের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী আব্দুর রব শেখও সহ স্বজনরা ছুটে আসেন হাসপাতালে। এসময় স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠে জাজিরা হাসপাতালের পরিবেশ। পাভেলের পিতা সংজ্ঞা হারিয়ে ফেললে তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। শরীয়তপুর সদর হাসপাতলে আজ শুক্রবার পাভেলের মৃতদেহের ময়না তদন্ত শেষে বিকেলে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবার পরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করার কথা রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পাভেলের সাথে থাকা শান্ত, সোহাগ ও শাহিন জানান, মোটর সাইকেল যোগে আমরা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরে একটা বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। তখন আমরা রাস্তার পাশে মোটরসাইকেল থামিয়ে এক বন্ধুর অপেক্ষায় ছিলাম। এমন সময় পুলিশের একটি গাড়ি এসে আমাদের সামনে দাঁড়ায়। পুলিশ তখন আমাদের দেহ তল্লাশী করতে থাকে। এক পর্যায়ে পাভেলের দেহ তল্যাশী করতে চাইলে পাভেল অন্ধ্যকারে দেহ তল্লাশীতে আপত্তি জানায়। তথন পুলিশ পাভেলকে চর-থাপ্পর, কিল-ঘুষি মারতে থাকলে পাভেল মাটিতে লুটিয়ে পরে। এরপর হাসপাতালে নিলে ডাক্তার পাভেলকে মৃত ঘোষনা করেন। আমরা পাভেলের মত একজন নিষ্পাপ ছেলের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবী করছি।

শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন বলেন, টহলরত পুলিশ পাভেলকে চেক করতে গেলে সে পুলিশের সাথে তর্কে জড়ায়। এরপর সে অপ্রত্যাশীভাবে অসুস্থ্য হয়ে পরে। সে আগে থেকেই মৃগী রোগে আক্রান্ত ছিল। এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। তারপরেও যদি পুলিশের কোন সংশ্লিষ্টতা বা ভুলত্রুটি হয়ে থাকে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে আমরা ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

(কেএনআই/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test