E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

বাবা-মায়ের নিরাপত্তার জন্য কলেজ ছাড়তে হয়েছে সঞ্জয়কে

২০১৮ সেপ্টেম্বর ৩০ ১৫:২৬:০০
বাবা-মায়ের নিরাপত্তার জন্য কলেজ ছাড়তে হয়েছে সঞ্জয়কে

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : গ্রামের নাম মনষাতলী। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের ওই গ্রামের একমাত্র হিন্দু পরিবারের ছেলে সঞ্জয় সিকদার। বিএ ক্লাসের এ ছাত্রের লেখাপড়া এখন বন্ধের পথে। তার বসতঘর সহ শেষ সম্বলটুকু দখল করতে পরিবারকে এলাকা ছাড়া করতে একেরপরএক মামলা ও হুমকিতে ভীতসন্তস্থ্য বাবা রমনি চন্দ্র সিকদারের পাশে দাড়াতে তাকে ছাড়তে হয়েছে কলেজ। আর্থিক বন্ধ হয়ে গেছে লেখাপড়া। দূবৃত্তদের কারনে একমাত্র সন্তানের শিক্ষাজীবন নষ্ট ও পরিবারের নিরাপত্তার দাবিতে শনিবার রাতে কলাপাড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন কলেজ ছাত্র সঞ্জয়ের পিতা রমনি চন্দ্র সিকদার।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, পরিবারের তিন সদস্য নিয়ে রয়েছেন উচ্ছেদ আতঙ্কে। স্ত্রী অরুনী বালা রাত হলেই পড়শির বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নেয়। একমাত্র ছেলে সঞ্জয় সিকদার বরিশালে বিএ পড়ছে। তার লেখাপড়া এখন বন্ধের উপক্রম হয়েছে। একটি পুকুর দখলের জন্য তাকে একাধিক মামলা দেয়া হয়েছে। পুকুরের মাছ ধরে নেয়া হয়েছে। একই গ্রামের জাকির হোসেন ও তার সহযোগী মেনাজ শিকদার, আনিচ শিকদার, রহিম গাজী, কালাম মৃধাসহ একটি চক্র তার পরিবারকে উচ্ছেদ করে পুকুরসহ জমিজমা দখল করতে খুন জখমসহ ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

রমনি সিকদার জানান, মনষাতলী মৌজায় তার একটি পুকুরে মাছ চাষ করার জন্য ১৪২৩ সনের চৈত্র মাস পর্যন্ত আট হাজার টাকায় একসনা লিজ নেয় জাকির। এরপর মেয়াদ শেষ হলেও পুকুরটি ছেড়ে দিচ্ছে না। জবরদখলের জন্য তাকে একাধিক মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। রমনির অভিযোগ, ইতোপুর্বে আরও দুইটি সংখালঘু পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। বর্তমানে তাকে স্ত্রী-সন্তানসহ উচ্ছেদে পায়তারা চালাচ্ছে। তিনি এখন চরম নিরাপত্তাহীন রয়েছেন। ওই দূবৃত্তদের কারনে একমাত্র ছেলের লেখাপড়াও বন্ধ হয়ে গেছে।

কলেজ ছাত্র সঞ্জয়ের আর্তি,যেখানে বৃদ্ধ মা-বাবাকে প্রতিনিয়ত হুমকি দেয়া হচ্ছে। রাতে ঘরে ঘুমাতে পারছে না। সেখানে তাদের একা রেখে বরিশাল গিয়ে কিভাবে লেখাপড়া করবো। আর বাবার উপার্জনের একমাত্র পুকুরটিও দখল করে রেখেছে। এ কারনে আর্থিক সংকটে বরিশাল থেকে আর লেখাপড়াও সম্ভব হচ্ছে না। এখন বাবা-মাকে দেখার জন্যই বাসায় থাকতে হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত পটুয়াখালী জেলা পরিষদ সদস্য আসলাম হাওলাদার,মোশারফ হোসেন মৃধা, যুবলীগ নেতা ইয়াকুব তালুকদার, পড়শি ইউসুফ জানান, রমনিকে উচ্ছেদের জন্য এ সংখ্যালগু পরিবারকে হুমিকি দেয়া হচ্ছে। দূবৃত্তদের কারনে রমনির ছেলের লেখাপড়া বন্ধ করে এখন দিন-রাত বাসায় বাবা-মাকে পাহারা দিতে হচ্ছে। রাতে তারা ঘরে থাকতে পারছেন না ভয়ে।

ডালবুগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আঃ সালাম সিকদার জানান, জামাত সমর্থিত জাকিরের কারনে একমাত্র হিন্দু পরিবারটি এখন উচ্ছেদ আতংকে রয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে তিনি সালিশ করে দিলেও জাকির কিছুই মানছে না।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জাকির হোসেন জানান, রমনির কোন পুকুর নেই। ওর শুধু আট কড়া জমি আছে। সকল অভিযোগ মিথ্যা। তিনি জানান রমনির বাড়ি আর আমার বাড়ি এক জায়গায়। হুমকি-ধমকির ঘটনা সব মিথ্যা।

কলাপাড়া গলাচিপা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জালাল উদ্দিন জানান, রমনি সিকদারের পরিবারের নিরাপত্তাসহ যে কোন সমস্যা নিরসনে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এমকেআর/এসপি/সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test