E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

শিক্ষকের লালসার শিকার, বিয়ের দাবিতে শিক্ষকের বাড়িতে ছাত্রীর অনশন

২০১৮ অক্টোবর ০২ ১৮:২৩:৩৭
শিক্ষকের লালসার শিকার, বিয়ের দাবিতে শিক্ষকের বাড়িতে ছাত্রীর অনশন

মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার দ্বারিয়াপুর গ্রামের এক লম্পট শিক্ষকের লালসার শিকার এক স্কুল ছাত্রী বিয়ের দাবিতে শিক্ষকের বাড়িতে গত দু’দিন ধরে অবস্থান অনশন পালন করছে ।

রবিবার সন্ধ্যায় ছাত্রীটি শিক্ষকের বাড়িতে ঢোকার পরপরই পরিবারের লোকজন ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যায় । এসংবাদ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে মেয়েটিকে এক নজর দেখার জন্য গ্রামের শতশত নারী-পুরুষ ঔই শিক্ষকের বাড়িতে ভীড় জমাতে থাকে ।

স্কুল ছাত্রীর পিতা বাবু খান ও দ্বারিয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা আকামত শেখ জানান, স্কুল ছাত্রী (রিক্তা খাতুন (১৪) ) শিশুকাল থেকেই দ্বারিয়াপুর গ্রামে নানা বাড়িতে থেকেই লালন-পালন হয়ে বড় হয়ে উঠেছে আর এ বাড়িতে থেকেই সে হাটদ্বারিয়াপুর সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ট শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে বর্তমানে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যায়ন করছে। স্কুলে লেখা-পড়ার পাশাপাশি মেয়েটি একই গ্রামের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আমজাদ হোসেন এর বাড়িতে গিয়ে তার পুত্র আরিফুল ইসলাম(২৮) এর নিকট প্রাইভেট পড়ত ।

প্রাইভেট পড়াইতে গিয়ে শিক্ষক আরিফুলের কু-নজর পড়ে মেয়েটির উপর । দিনে দিনে মেয়েটির সাথে গড়ে ওঠে প্রেমজঃ সম্পর্ক । প্রেমজঃ সম্পর্কের সূত্রধরে লম্পট শিক্ষক ছাত্রীটিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ভোগ করতে থাকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা । একপর্যায়ে গত ২৭ সেপ্টেম্বর উক্ত শিক্ষক তাকে বিয়ে করার কথা বলে বাড়ি থেকে নিয়ে যায় ।

এরপর শিক্ষক আরিফুল তাকে ফরিদপুর জেলার মধূখালী উপজেলার ডুমাউন গ্রামসহ বিভিন্ন গ্রামে তার আত্বীয়ের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে স্ত্রী পরিচয়ে শারীরীকভাবে অবৈধ কাজ-কর্ম করে । মেয়েটি তাকে বারবার বিয়ের কথা বললে সে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে । এভাবে মেয়েটিকে তিনদিন অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখে অবশেষে বিয়ের কথা বলে গত ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে মধুখালী উপজেলার কামারখালী এলাকায় গড়াই সেতু টোল ঘরের পাশে মেয়েটিকে দাড় করিয়ে সু-চতুর শিক্ষক পালিয়ে যায়।এরপর দীর্ঘ সময় দাড়িয়ে থেকে মেয়েটি কোন উপায় খুজে না পেয়ে শেষ পর্যন্ত মেয়েটি ঔইদিন সন্ধ্যায় উক্ত শিক্ষকের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের দাবিতে অবস্থান অনশন পালন করতে থাকে । মেয়েটির উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ির লোকজন ঘরে তালা ঝুলিয়ে অন্যত্র গা-ঢাকা দেয় ।

এভাবে মেয়েটি দু’দিন ধরে না খেয়ে ঔই বাড়িতে অবস্থান করার পর বেশ অসুস্থ্য হয়ে পড়লে গত ১ অক্টোবর বিকেলে মেয়েটির পরিবারের লোকজন শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলারা রহমান বিষয়টি জানার পর তিনি শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশ দেন ।

শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাহাবুবুর রহমান ঘটনাস্থলে পৌছে ঘটনার সত্যতা পেয়ে সোমবার সন্ধ্যায় মাগুরা পুলিশ সুপার মহোদয়কে বিষয়টি অবগত করেন । মাগুরার পুলিশ সুপার খান মুহাম্মদ রেজোয়ান বিষয়টি জানার পর গতকাল মঙ্গলবার সকালে লম্পট শিক্ষকসহ তার পরিবারের সদস্য এবং মেয়েটিসহ তার পরিবারের অভিভাবকদের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে হাজির করতে নির্দেশ দেন । এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং উক্ত লম্পট শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।

(ডিসি/এসপি/অক্টোবর ০২, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test