E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিকারীদের আক্রমনে বিলপ্তির পথে দেশীয় পাখি 

২০১৮ অক্টোবর ০৪ ১৬:০৩:২৮
শিকারীদের আক্রমনে বিলপ্তির পথে দেশীয় পাখি 

মাহমুদুল হাসান সজীব : বাংলাদেশে অসংখ্য পাখির সমারোহে সমৃদ্ধ একটি দেশ। দোয়েল ও ঘুঘু বাংলাদেশের অতি পরিচিত পাখি। দোয়েল আমাদের জাতীয় পাখি এবং গানের পাখি হিসাবে স্বীকৃত। 

এসব পাখির রূপ, রং, স্বভাব ও গান মিশে আছে সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা প্রকৃতির সঙ্গে, অতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে বলেই পাখির কোলাহল এতো সুন্দর। অথচ শিকারীদের দৌরত্বে এসব পাখির দেখা মেলা ভার।

শিকারীদের আক্রমনে দেশীয় ও অতিথি পাখি বিলপ্তির পথে। শিকারীরা নিজের লাইন্সেসকৃত ও ইয়ারগান নিয়ে গ্রাম ও চরাঞ্চলে পাখি শিকার করায় দেশীয় পাখি ও অতিথি পাখি প্রায় শূন্য কোঠায় এসে দাঁড়িয়েছে। জৈনিক ব্যাক্তি বলেন পাখির মাংস খুবই সুস্বাধু হওয়াতে এসব পাখি শিকার করছে শিকারীরা। শিকারীর বন্দুকের গুলির শব্দে অন্য প্রজাতির পাখিও এলাকা ছেড়ে অন্যত্রে চলে যাচ্ছে।

তারাবাড়ীয়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেন খান জানান, অতিথি পাখি যেমন পাতি হাঁস, বালী হাঁস এবং দেশীয় পাখি ঘুঘু, বন্য কবুতর, মাছরাঙ্গা, বক, শালিখ, ডাকু, চঁড়াই, হলুদিয়া, ফেসকা, বুলবুলী, কোকিল, ময়না, বাবই, টিয়া ও জাতীয় পাখি দোয়েল সহ খাদ্য উপযোগী প্রায় সকল প্রকারের পাখি শিকার করছে র্নিদয় ভাবে। শিকারীরা বিল, বসতবাড়ী, গোরস্থান, বাগান ও চরাঞ্চলের নদীর পাড়ের গাছ-পালা, ঝোপ-ঝাড়, বাঁশ বাগান থেকে এসব পাখি শিকার করছে।

বিশেষ করে আমাদের চরাঞ্চল এবং নদী ও বিল এলাকার বসতবাড়ীতে পাখি শিকারে কারেন্টজাল ব্যবহার করছে। অন্যদিকে মা পাখি গুলো তার বাচ্চার খাবারের খোঁজে বাসা থেকে বের হয় এবং সেই মা পাখি আর বাসায় ফিরতে পারে না, তাদের বাচ্চার খাবার নিয়ে, পাখি গুলো শিকার হয়ে যায়, অন্যদিকে বাচ্চাগুলো না খেতে পেয়ে মারা যায়। শিকারীরা এলাকার প্রভাবশালী হওয়াতে সাধারণ মানুষের নিষেধ অমান্য করছে প্রতিনিয়ত পাখি শিকার করে চলছে, আইন অপেক্ষা করে প্রায়ই শিকার করছে দেশীয় ও বিদেশী পাখি।

প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন জানান, এসব দেশীয় পাখি পরিবেশের জন্য খবই উপকারী। এরা বাঁশি খাবার, খেত-খামাড়ের ও গাছ-পালার ক্ষতিকারক পোকা-মাকড় খেয়ে জিবীকা নির্বাহের পাশাপাশি পরিবেশের ভারশাম্যা রক্ষা করে থাকে। বন বিভাগের কর্মকর্তা সামছুল আরেফিন জানান আমাদের দেশে বিভিন্ন প্রকারের পাখি বসবাস করে।

এ ছাড়া বিভিন্ন মৌসুমে অন্য দেশ থেকে অতিথি পাখি ঝাঁকে ঝাঁকে আগমন করে এ দেশে এসে নিরাপদ আশ্রয় স্থল খুঁজে বসবাস করে সেই সাথে বংশ বিস্তার করে। কিছু কিছু পাাখির বিভিন্ন রংয়ের পাখায় আম্ভবিত থাকায় দেখেতে মনোমুগ্ধকর। এসব পাখির মাংস খেতে অন্যনা মাংসের চেয়ে সুসাদু ও অধিকতর উপকারী হওয়াতে শিকারীরা এসব পাখি শিকারে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে। অথচ এসব পাখি আমাদের পরিবেশ ও জীবন রক্ষায় অপরিসিম ভূমিকা রাখে, এরা আমাদের ফেলে দেওয়া খাবারে উৎস পঁচা-বাসী গুলো খেয়ে জীবানু নষ্ট করে।

এছাড়া কৃষকরা পাখি বসার জন্য ফসলী জমির মাঝে লাঠি ও ডালপালা গেড়ে দিয়ে ফসলি খেতের ক্ষতিকারক পোকা মাকড় খেতে পাখিকে সহায়তা করত। এতে ফসলের ক্ষেতে পোকা-মাকড় দমনের জন্য কৃষকদের কীটনাশকের প্রয়োজন হতো না, এতে কৃষক আর্থিক সহয়তা পেতো, এমন কি জমিতে কীটনাশক ব্যাবহারের ফলে জমির ফসলের আবাদ ভালো হতো না, কিছু কিছু কীটনাশক ফলে জমির ফসল মারা যেত এতে কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হত, এবং আমাদের দেশের ও বিদেশে থেকে আশা নানা ধরণের পাখি জমির পোকা-মাকড় খেয়ে জীবণ ধারণ করত ও ফসল ভাল করায় সহায়তা করত।আগের দিনে ভোরে পাখির ডাকে বা শব্দে মানুষের ঘুম ভাঙতো, এখন আর ভোরে পাখির ডাক শোনা যায় না।

চরভবানীপুর মহল্লার রাাকবুল হাসান জাদু বলেন, আমরা এখন থেকে আমাদের দেশের যে সমস্ত পাখি দেখতে পাই, তাদের কে ইয়ারগান, ফাঁদ, কারেন্ট জাল ইত্যাদি দিয়ে পাখি নিধঁন না করে পাখি গুলোকে বংশবিস্তার করতে সাহায্য করা প্রয়োজন।

বাড়ীর অবশিষ্ট কিছু খাবার পাখিকে খেতে সাহায্য করব, এমন কি পাখিকে বসবাস করার জন্য তার বাসস্থানের ব্যবস্থা করব, যেমন আমাদের ঘরের চালের কোণে এক জায়গা ঝাঁকি বেঁধে পাখির থাকার ব্যবস্থা করে দিয়ে ঝড়-বৃষ্টিতে যেন পাখির বাসস্থান ক্ষতিগ্রস্থ না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এভাবে আমরা পাখির বংশবিস্তার করতে সাহায্য করতে পারি। এ কারণে পাখির বংশবিস্তারের ফলে আমাদের দেশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করি।

(এস/এসপি/অক্টোবর ০৪, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test