E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নবীগঞ্জে মাদ্রাসা ছাত্রদের হামলায় পরিচালনা কমিটির দুই সদস্য আহত

২০১৮ অক্টোবর ০৫ ১৫:৩৯:৪৬
নবীগঞ্জে মাদ্রাসা ছাত্রদের হামলায় পরিচালনা কমিটির দুই সদস্য আহত

মতিউর রহমান মুন্না, নবীগঞ্জ : নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের দক্ষিণ দৌলতপুর গ্রামে শাহ্ জালাল লতিফিয়া ক্যাডেট মাদ্রাসার টাকার হিসাব-নিকাশের গড়মিল নিয়ে পরিচালনা কমিটির সাথে মাদ্রাসা সুপারের বিরোধের জের ধরে ভূমিদাতা ও পরিচালনা কমিটির উপর অতির্কিত হামলা করেছে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা।

গুরুত্বর আহত দুজনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

এ নিয়ে এলাকাবাসী ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে তাৎক্ষণিক মাদ্রাসা ১০ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা দিয়ে মাদ্রাসার সুপারকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে এঘটনা ঘটেছে।

এলাকাবাসী জানান, নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের দক্ষিণ দৌলতপুর গ্রামে প্রায় ৮ বছর পূর্বে এলাকাবাসীর কোটি টাকা ব্যয়ে শাহ্ জালাল লতিফিয়া ক্যাডেট মাদ্রাসা ও একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। ওই মাদ্রাসায় যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ থেকে শতশত মানুষ অনুদান প্রদান করে আসছেন। কিছুদিন পূর্বে মাদ্রাসার হিসাব নিকাশ ও মাদ্রাসার সরকারী নিবন্ধন নিয়ে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সুপার কুতুব উদ্দিন খাঁন ও পরিচালনা কমিটির লোকজনের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে।

এ নিয়ে বৃহস্পতিবার মাদ্রাসার অফিস কক্ষে পরিচালনা কমিটির মাসিক সভা বসে। পরিচালনা কমিটির সভা চলাকালে কমিটির সদস্যদের সাথে মাদ্রাসা সুপার কুতুব উদ্দিন খাঁনের বাকবি-ার এক পর্যায়ে মাদ্রাসা সুপার কুতুব উদ্দিন খাঁনের নির্দেশে মাদ্রাসার ছাত্ররা কমিটির সদস্যদের উপর আক্রমণ করে। এসময় ছাত্রদের হামলায় ভূমিদাতা ও কমিটির কোষাধক্ষ্য হাজী আব্দুল কুদ্দুছ ও পরিচালনা কমিটির সদস্য হাজী বাছিত মিয়া গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা আহতদেরকে নবীগঞ্জ স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরিচালনা কমিটির সদস্য হাজী বাছিত মিয়ার অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এ ঘটনায় এলাকাবাসী মাদ্রাসা সুপারকে দায়ী করে মাদ্রাসা ঘেরাও করে। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার এসআই ফিরোজ মিয়া নেতৃত্বে গোপলার বাজার তদন্তকেন্দ্রর এসআই সোহাগসহকারে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। তাৎক্ষণিক ভাবে প্রশাসনের সহযোগীতায় এলাকাবাসী ও মাদ্রাসা কমিটির সদস্যরা এক জরুরী সভায় বসেন।

ওই সভায় বক্তব্য রাখেন তাহির পুর কামিল মাদ্রাসার সুপার আফজাল হোসেন, রুস্তমপুর মাদ্রাসার সুপার মাওলানা সাজ্জাদুর রহমান, মোস্তফাপুর মাদ্রাসার সুপার মাওলানা এম এ নুর,আনজুমানে আল ইসলাহর কেন্দ্রীয় সহপ্রচার সম্পাদক কাজী হাসান আলী, সিনিয়র সাংবাদিক এম এ আহমদ আজাদ, এম মুজিবুর রহমান, ক্বারী সোসাইটির সভাপতি মাওলানা আব্দুল হান্নান, সাবেক মেম্বার মাসুক মিয়া, বর্তমান মেম্বার আব্দুল মুকিত, হাসান আলী ওস্তার মিয়া, ফুলকাছ মিয়া, মাস্টার রমজান বখত, সাদিকুর রহমান, শেখ সাদেক মিয়াসহ অনেকেই। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে আগামী ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত মাদ্রাসা বন্ধের সিন্ধান্ত, আবাসিক সকল ছাত্রদের চলে যাওয়ারসহ মাদ্রাসা সুপারকে ছুটিতে পাঠানোর সিন্ধান্ত গৃহিত হয়। পরে উত্তেজনার মুখে পুলিশী প্রহরায় মাদ্রাসা সুপার মাদ্রাসা প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।

এ ব্যাপারে ভূমিদাতা ও কমিটির কোষাধক্ষ্য হাজী আব্দুল কুদ্দুছ বলেন, মাদ্রাসার হিসাব-নিকাশ নিয়ে সুপারের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে ছাত্রদের দিয়ে হামলা করানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে মাদ্রাসার সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, ছাত্ররা কেন হামলা করেছে আমি জানিনা, কমিটির সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই।

নবীগঞ্জ থানার এসআই ফিরোজ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনি।

(এমআরএম/এসপি/অক্টোবর ০৫, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test