E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

বরিশালের সিটি মেয়র কামালের পদত্যাগ নাটক!

২০১৮ অক্টোবর ০৫ ১৬:৩৪:৪৮
বরিশালের সিটি মেয়র কামালের পদত্যাগ নাটক!

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পদত্যাগের ঘোষণার তিনদিন পর ডাক বিভাগের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ঠ মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র প্রেরণ করেছেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের বিএনপি দলীয় বিদায়ী মেয়র আহসান হাবিব কামাল।

বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী ফরিদুল ইসলাম। তবে ওইদিন বিকেল পর্যন্ত সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক ও সাধারণ শাখায় এ সংক্রান্ত কোনো চিঠি হাতে পাননি কর্মকর্তারা। মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী ফরিদুল ইসলাম আরও জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে মেয়র তাকে দিয়ে বরিশালের প্রধান ডাকঘর থেকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী বরাবরে পদত্যাগপত্র প্রেরণ করেছেন।

সূত্রমতে, মেয়র তার পদত্যাগ পত্রে উল্লেখ করেছেন-বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে নাগরিকের সেবা দেয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, গত ১৩ জুন থেকে সিটি কর্পোরেশনের দৈনন্দিন দাপ্তরিক ও অর্থনৈতিক কাজ করতে পারছি না। কর্পোরেশনের তহবিলে অর্থ থাকা সত্ত্বেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা, গাড়ির জ্বালানি সরবরাহ ও বিল পরিশোধ, রাস্তার বৈদ্যুতিক বাতি সরবরাহ, বিল পরিশোধ, রাস্তা ঘাট সংস্কার কিংবা মেরামত করতে বাঁধা এসেছে। এছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় বরাদ্দ করা অর্থ পাওয়ার পর ব্যাংকে জমা থাকা সত্ত্বেও বাঁধার কারণে নির্ধারিত সময়ে অর্থাৎ ৩০ জুনের মধ্যে ঠিকাদারদের বিল পরিশোধ করতে পারিনি। এ অবস্থায় দীর্ঘদিন থেকে নাগরিক সেবা দিতে না পারায় আমি মেয়র পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি।

এ বিষয়ে জানতে বিদায়ী মেয়র আহসান হাবিব কামালের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করেও তা বন্ধ থাকায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী ফরিদুল ইসলাম জানান, মেয়র পদত্যাগপত্র ডাকযোগে পাঠানোর পর পরই ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে গেছেন। সূত্রমতে, ২০১৩ সালের ১৫ জুনের নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী হিসেবে আহসান হাবিব কামাল মেয়র নির্বাচিত হন। আগামী ২৩ অক্টোবর চলতি সিটি পরিষদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে।

মেয়াদ শেষের ২২দিন আগেই মেয়র আহসান হাবিব কামাল পদত্যাগের ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে নগর ভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সচেতন নগরবাসীর মধ্যে। নগর ভবনের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, মেয়র কামাল দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে মাসের পর মাস কর্মচারীদের বেতন-ভাতা না দিয়ে তার দলের ঠিকাদারদের বিল পরিশোধ করেছেন। বকেয়া বেতন ভাতার দাবিতে দীর্ঘদিন অচল ছিলো নগর ভবনের কার্যক্রম। কামাল মেয়র হয়েও এতোদিন ছায়া মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন তার পুত্র রুপম। কোটি কোটি টাকা লুটপাট করে রুপম দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত করেছে নগর ভবনকে। এসব দুর্নীতির অভিযোগে মেয়র ও তার ছেলের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের একাধিক টিম তদন্তও করছেন।

সর্বশেষ বিদায়ী মেয়র কামাল কর্পোরেশনের তহবিলে থাকা শেষ অর্থ (৬০ কোটি টাকা) লুটপাট করতে না পেরে পদত্যাগের নাটক সাজিয়েছেন। সূত্রগুলো আরও জানিয়েছেন, গত পাঁচ বছরে মেয়র কামাল নগরীতে দৃশমান কোন উন্নয়ন করতে না পারলেও তার ভাগ্যের উন্নয়ন করেছেন। এখন নিজ দলের নেতাকর্মীদের কাছে ভালো সাজার পাশাপাশি অনিয়ম-দুর্নীতি আর অনুন্নয়নের ব্যর্থতা ঢাকতে পদত্যাগের নাটক করেছেন।

(টিবি/এসপি/অক্টোবর ০৫, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test