E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাতক্ষীরায় মাদক ব্যবসায়ী ভাইয়ের মৃত্যুকে পুঁজি করে চাঁদাবাজি

২০১৮ অক্টোবর ০৫ ২২:০০:১৮
সাতক্ষীরায় মাদক ব্যবসায়ী ভাইয়ের মৃত্যুকে পুঁজি করে চাঁদাবাজি

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সড়ক দুর্ঘটনায় কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ি হাসানুরের মৃত্যু হলেও আদালতে পরিকল্পিত হত্যা মামলা দায়ের করে তা প্রত্যাহারের নামে চলছে মৃতের ভাই হাবিবুরের চাঁদাবাজি । বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, পাটকেলঘাটা থানাধীন তেলকুপি গ্রামের রহমতুল্লাহ মাষ্টার মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রী স্বপরিবারে বাপের বাড়ি সাতক্ষীরা সদরের দেবনগরে চলে আসেন। এরপর মামার বাড়িতে থেকে হাসানুর এলাকার মাদক ব্যবসায়ি ও ডাকাত দলের সদস্যদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন। পাশপাশি হাসানুর ডিবি পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ শুরু করে। নিরীহ মানুষকে মাদক দিয়ে ধরিয়ে দিতে সে ছিল সিদ্ধহস্ত।

গাজীর বটতলা থেকে হাসানুরের মাদক ব্যবসা পরিচালনা হতো। অন্যদের মধ্যে তার সঙ্গে ব্যবসা করতো যোগরাজপুরের আসাদুলের ছেলে ইলিয়াস হোসেন মহিদুল, যোগরাজপুরের মৃত ছোবহান আলীর ছেলে নজরুল ইসলাম ওরফে কালু ডাকাত, সাদ্দাম হোসেন, মধুর ছেলে জাহিদুল ইসলাম, আলীমের ছেলে ও রওশনের নাতি জনি, নুরুল ইসলাম চৌকিদারের ছেলে মিজানুর রহমান। হাসানুর গত মে মাসে ঢাকায় ১৩ বস্তা ফেনসিডিলসহ ধরা পড়ে। এখবর পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ায় মহিদুল, ছয়ঘরিয়া লস্কর ফিলিং স্টেশন ও কক্সবাজারে নালানে বসিরের ট্রাক ডাকাতির নায়ক নজরুল, জনি, মিজানুরসহ তাদের কয়েকজন সহযোগি দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। জুন মাসে আখড়াখোলা এলাকায় ডাকাতি করতে যেয়ে সাদ্দামসহ দু’জন ধরা পড়লেও পালিয়ে যায় নজরুল।

স্থানীয়রা আরো জানান, হাসানুর কুশখালি, বৈকারী ও কাকডাঙা থেকে ফেনসিডিল ও গাঁজা আনতো। ইয়াবা আনতো যশোরের ঝিকরগাছা, শার্শা ও বেলতলা থেকে। মাদক আনতে বালিয়াডাঙায় যাওয়ার পথে ১৯ জুলাই সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কাশেমপুর হাজামপাড়া মোড়ে তোহিদুল মেম্বরের খেজুরগাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে মোটর সাইকেলসহ পুকুরে পড়ে আহত হয় হাসানুর। ২১ জুলাই সকাল সোয়া ১১টার দিকে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। দুর্ঘটনার পরপরই ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক মাজেদসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেন।

এদিকে ভাই মারা যাওয়ার পর কদদতলা ও বালিয়াডাঙা এলাকার কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করার ভয় দেখিয়ে ব্যাপক চাঁদাবাজি শুরু করে হাসানুরের ভাই হাবিবুর। একপর্যায়ে হাবিবুর গত ২৬ আগষ্ট সাতক্ষীরার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলায় কাশেমপুরের ইকবাল হোসেন, মাসুম হোসেন, বালিয়াডাঙার কামরুল ইসলাম ও দেবনগরের মুকুল হোসেনকে আসামী করা হয়। ৩০ আগষ্ট বিচারক হুমায়ুন কবীর মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। যদিও ঘটনার প্রেক্ষাপট হিসেবে মামলাটি শুক্রবার পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়নি। ঢাকার মহাখালির ভিসেরা প্রতিবেদনের জন্য পুলিশ অপেক্ষা করছে।

ইকবাল, মাসুম ও কামরুলের অভিযোগ, মামলা করার পর থেকে হাবিবুর তাদের কাছে মোবাইল ফোনে তাদের কাছে টাকা চেয়ে আসছে। এক একজন এক লাখ টাকা দিয়ে সে আদালতে এফিডেফিড দিয়ে মামলা তুলে নেবে বলে জানিয়েছে। সর্বশেষ গত বৃহষ্পতিবার বিকেলে ইকবালের চায়ের দোকানে এসে এক লাখ টাকা চায়। হাবিবুরের হয়ে যোগরাজপুরের নজরুল ডাকাতও এলাকায় বিভিন্ন লোকজনকে মামলায় জড়ানোর নামে হুমকি দিচ্ছে।

জানতে চাইলে হাবিবুর রহমান জানান, যাদেরকে আসামী করা হয়েছে তারাই তাকে টাকা দিয়ে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য দেনদরবার করছে।

(আরকে/এসপি/অক্টোবর ০৫, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test