E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

‘আমরা বাঁচতে চাই, আমাদের বাঁচতে দিন’

২০১৪ জুলাই ১৭ ১৯:৪৭:৪১
‘আমরা বাঁচতে চাই, আমাদের বাঁচতে দিন’

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : ‘আমরা বাঁচতে চাই,আমাদের বাঁচতে দিন’ আমরা খাওনা চাই, বাঁধটা ঠিক করেন’ এই দাবিতে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার রামনাবাদ নদীর ভাঙ্গনে সর্বহারা ১০টি গ্রামের শতশত নারী পুরুষ ও শিশু বৃহস্পতিবার দুপুরে কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে। প্রায় ১২ কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেঁটে কলাপাড়া শহরে এসে এ কর্মসূচী পালন করা হয়।

লালুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মীর তারিকুজ্জামান তারা সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত সাত দিনের জলোচ্ছাসে চাড়িপাড়া ও নাওয়াপাড়া বাঁধ ভেঙ্গে দুই হাজার ৩৭৬ টি পরিবারের ১২ হাজার ৬৫০ জন লোক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। জলোচ্ছাসের তান্ডবে আহত হয়েছে ৭৫ জন। রামনাবাদ নদীর ভাঙ্গনে ৩০টি বসত ঘর বিলীন হয়ে গেছে। বিধ্বস্ত হয়েছে দুই হাজার ১৮৫টি বসত ঘর। হুমুকির মুখে রয়েছে ১১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রায় ৫৫ কিলোমিটার কাঁচা ও পাকা রাস্তা বিধ্বস্ত হয়েছে। ৫১৫ একর কৃষি জমির ফষল জোয়ারের জলোচ্ছাসে ভেসে গেছে। মারা গেছে প্রায় আট হাজার হাঁস-মুরগী। ভেসে গেছে দুই সহস্রাধিক পুকুর ও ঘেরের মাছ। শতশত পরিবার বসত ঘর হারানোর আশংকায় এখন উদ্বিগ্ন। অব্যাহত রামনাবাদ নদীর ভাঙ্গনের সঙ্গে অস্বাভাবিক জোয়ারের তান্ডবে নয়াকাটা, নাওয়াপাড়া ও চারিপাড়া গ্রামের ৮০ ভাগ বিলীন হয়ে গেছে।

এদিকে মানববন্ধনে অংশ নেয়া শতশত নারীর আর্তি ছিলো আমাদের বাঁচতে দিন। আর কতো বছর আমরা এভাবে পানিতে ভাসবো। নদী ও বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনে বিধ্বস্ত এসব পরিবারে এখন দেখা দিয়েছে চরম খাদ্য সংকট। খাদ্য সংকটের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ এসব পরিবার এখন রোজা রাখতে পারছে না।

মেরাউপাড়া গ্রামের লাইলী বেগম জানায়, ঘরে অর্ধেক লইয়া ফাঁটল ধরছে। যেকোন সময় ঘরডা নদীতে ভাইঙ্গা যাইতে পারে। গতকাল একমুঠ চিড়া খাইয়া রোজা খুলছিলাম। আইজ আর কিছু ঘরে ছিলো না, খালি পানি খাইছি। একই গ্রামের ফরিদা বেগম জানায়, ঘরে কিচ্ছু নাই। চাইরডা পোলা-মাইয়া খাওনের লইগ্যা কান্দে। আগে জান বাঁচামু না খাওন জোগাড় করমু। আসমা বেগম জানায়, গতকাল ধইরা কইর‌্যা পানি ভাত আনছি। আইজ ভোরে হেইয়াই খাইছি। ঘর, রান্না ঘর সবই পানিতে তলাইয়া গেছে। আমরা রানমু ক্যামনে। ভোরে ও রাইতের জোয়ারে বান্দের উপর খারাইয়া থাহা লাগে। এইভাবে কি কেউ বাঁচতে পারে।
ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসীরা জানান, গত সাতদিনে কেউ তাদের সহায়তার হাত বাড়ায়নি। একবার দেখতেও আসেনি। তাই পানি ভাইঙ্গা শহরে এসেছি আমাদের কষ্টের কথা জানাতে।

(এমকে/জেএ/জুলাই ১৭, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test