E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

'সাংসদ আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ হবে না'

২০১৮ অক্টোবর ২৬ ১১:৩২:৪৩
'সাংসদ আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ হবে না'

ফরিদপুর প্রতিনিধি : বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ফরিদপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. আব্দুর রহমান ওমরাহ পালনে ছিলেন সৌদি আরব। ঠিক তখনই তথা গত ২০ অক্টোবর বোয়ালমারী অডিটোরিয়ামে বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামীলীগের একাংশ এক বর্ধিত সভায় মিলিত হয়েছিল।

দীর্ঘদিন ধরে সাংসদ আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল, সেটা ছিল তারই বহি:প্রকাশ, এমনটি জানিয়েছেন বোয়ালমারী উপজেলা আ’লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এম মোশাররফ হোসেন মুশা মিয়ার সভাপতিত্বে একাংশের ওই বিশেষ বর্ধিত সভায় আব্দুর রহমান হঠাও শপথে মিলিত হন আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী কাজী সিরাজুল ইসলাম, লিয়াকত শিকদার ও আরিফুর রহমান দোলন।

সেদিনের সেই বর্ধিত সভা সম্পর্কে উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সদস্য মো. ওবায়দুর রহমান মৃধা বলেন, ফরিদপুর-১ নির্বাচনী এলাকা তথা বোয়ালমারী মধুখালি আলফাডাঙ্গার নির্বাচিত সংসদ সদস্য হলেন মো. আব্দুর রহমান। এখনও সংসদ বহাল; নির্বাচনের তফশীল এখনও ঘোষনা করা হয়নি। এমন একটি মুহুর্তে প্রধানমন্ত্রীকে জানান দিতে মুশা মিয়ার নেতৃত্বে উপজেলা আ’লীগের একাংশ আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের দ্বার উন্মোচন করতে একত্রে মিলিত হয়েছিলেন। তাদের ওইসব ষড়যন্ত্র কোনো কাজে আসবে না।

বোয়ালমারী পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক মো. আহাদুল করিম বলেন, দল বদলকারী ষড়যন্ত্রকারীদের ওই পদক্ষেপ সরকারের উন্নয়ন এবং আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকেই আঘাত করেছে। মুশা মিয়ার ডাকা আ’লীগের এক অংশের বর্ধিত সভায় যারা যোগ দিয়েছিলেন তাদের অনেকেই বোয়ালমারী উপজেলার বাইরে থেকে আসা। যা দলের গঠনতন্ত্র পরিপন্থি। এমনকি উপজেলা আ’লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদ-পদবীধারী নেতাকর্মীদের ওই বর্ধিত সভায় যোগ দিতে দাওয়াত পর্যন্ত করা হয়নি। সেখানে নির্বাচনের আগমূহুর্তে কথিত ওই বর্ধিত সভাকে আমি গভীর এক ষড়যন্ত্র বলেই মনে করছি।

বোয়ালমারী উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. দাঊদুজ্জামান ওই বর্ধিত সভা সম্পর্কে বলেন, তাদের ওই আয়োজন শুধু আব্দুর রহমানকেই নয়, সূক্ষ্মভাবে হেয় করা হয়েছে দলীয় প্রধানকেও। নির্বাচনী এলাকার মানুষ বলে থাকেন, স্বাধীনতার ৩৭বছরে যে উন্নয়ন হয়নি, আব্দুর রহমান এমপি হয়ে ১০বছরে তার দ্বিগুন উন্নয়ন করেছেন। গ্রামের মানুষ বলাবলি করেন, আব্দুর রহমান আরেকবার এমপি হলে এবং শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হলে এলাকায় আর রাস্তা ঘাট পাকা করার জন্য খুঁজে পাওয়া যাবে না। এই ১০ বছরে আব্দুর রহমান যে উন্নয়ন দিয়েছেন তা অভাবনীয়। প্রতিপক্ষরাও এমনটি বলতে পারবে না যে, আব্দুর রহমান উন্নয়ন করেন নাই, যা ষড়যন্ত্রকারীরা বলেছেন। এদের সস্পর্কে মানুষ নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে, কেন এমন ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছেন তারা!

ওই বর্ধিত সভাকে মনোনয়ন প্রত্যাশী চার নেতার অশুভ জোট আখ্যা দিয়ে বোয়ালমারী উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক শরীফ সেলিমুজ্জামান লিটু বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা অধিকাংশই ডিগবাজির খেলোয়াড়, সুবিধাবাদী। যিনি এদের আহবান করেছেন, তিনি জাতীয় পার্টি হয়ে আওয়ামীলীগে পুনর্বাসিত। অপর একজন প্রাক্তন ছাত্রলীগ নেতা, যিনি তারেক জিয়ার সাথে সখ্যতার কারণে জননেত্রী শেখ হাসিনার চক্ষুশূল। সাবেক সাংসদ কাজী সিরাজ নিজ স্বার্থরক্ষায় জনগনের ভোট বিক্রি করে শেখ হাসিনাকে কটুক্তি করে বিএনপিতে যোগদান করেন। অপরজন বিএনপি ঘরানা থেকে উঠে এসে শত শত কোটি টাকার লুটপাটে অংশ নিয়ে এখন আওয়ামী প্রীতিতে গদগদ। এরা সকলেই যেন একই বৃন্তের কুটিল ফল! এরা আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে নোংরা অবস্থান নিয়ে কার্যত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেই ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছেন! তিনি আরও বলেন, তারা হয়তো ভুলে গেছেন, কাজী সিরাজ দল ত্যাগের পর তাঁর শো-ডাউনে মধুখালী আর আলফাডাঙ্গার জনতা প্রতিশোধ স্পৃহায় ফেটে পড়লেও দলবল নিয়ে বোয়ালমারীর নেতা ঠাঁয় দাড়িয়ে থাকেন! গণভবনে গেলে ওই নেতাকে শেখ হাসিনা কি বলেছিলেন, সেটা তিনি ভুলে গেলেও শেখ হাসিনা কিন্তু ভুলে যাননি! জনগণকে এতদিন যে ধোকা দেয়া হয়েছে, সেদিনের ষড়যন্ত্রের ফল হচ্ছে বিপরীত; উল্টো থলের বিড়াল বের হয়ে যাচ্ছে! ওনারা দীর্ঘদিন নিজেদের মনোনয়ন কল্পিত কনফার্ম করবার মিথ্যা তথ্য দিয়ে কর্মীদের ভুল বুঝিয়ে আব্দুর রহমানের পক্ষের গণজোয়ারকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার ব্যর্থ চেষ্টা করেছেন। যখন মনোনয়ন পাচ্ছেন না, বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন, তখন সকলে এক জোট হয়ে মাঠে নেমেছেন। ষড়যন্ত্র যতো গভীরই হোক না কেন, নৌকা শেখ হাসিনার হাত দিয়ে মো. আব্দুর রহমানের কাছেই আসবে।

বোয়ালমারী উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মৃধা পিকুল মনোনয়ন প্রত্যাশী চার নেতার জোট কিংবা ষড়যন্ত্র সম্পর্কে বলেন, উপজেলা আ’লীগের সভাপতি এমএম মোশাররফ হোসেন মুশা বর্ধিত সভা ডেকেছেন, অথচ আমি সাধারণ সম্পাদক হয়েও কিছু জানি না! বর্ধিত সভা সাধারণ সম্পাদক আহবান করেন, মন্তব্য করে তিনি বলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের ৬৯ জন সদস্যের মধ্যে ৪০ জনকেই দাওয়াত দেয়া হয়নি। আসলে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা বুঝে গেছেন আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাচ্ছেন আব্দুর রহমান। এজন্য তারা আব্দুর রহমানের মনোনয়ন ঠেকাতে এক জোট হয়ে বর্ধিত সভার নামে একটি নাটক মঞ্চস্থ করেছেন। কিন্তু এই জোটে কোন কাজ হবে না। সাংসদ আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ হবে না। জনগণ ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁতভাঙ্গা জবাব দিবেন।

এছাড়াও বোয়ালমারী উপজেলা আ’লীগের একাংশের ওই বিশেষ বর্ধিত সভায় ফরিদপুর-১ আসনের উন্নয়নের রূপকার মো. আব্দুর রহমানকে নিয়ে ষড়যন্ত্র এবং ষড়যন্ত্রকারীরা যে বক্তব্য দিয়েছেন তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন মধুখালী উপজেলা ও পৌর আওয়ামীলীগ। রবিবার বিকেলে মধুখালি উপজেলা আ’লীগের কার্যালয়ে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি মির্জা মনিরুজ্জামান বাচ্চুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত যৌথ বর্ধিত সভায় প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মধুখালি উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক রিজাউল হক বকু, পৌর আ’লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, সাধারণ সম্পাদক মির্জা আকতারুজ্জামান খোকন প্রমুখ।

(ওএস/অ/অক্টোবর ২৬, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test