নৌকার মাঝি হতে তৃণমূলের আস্থা অর্জনে এগিয়ে মানিক

সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নেত্রকোনা-৩ (আটপাড়া- কেন্দুয়া) নির্বাচনী এলাকায় সব মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ভোটের মাঠ ছেড়ে দলের টিকিট ভাগাতে প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কেন্দ্রে। তবে কার ভাগ্যে জুটে দলের টিকিট তা এখনও নিশ্চিত করে কেউই বলতে পারছেন না। তবে নৌকার মাঝি হতে তৃণমূলের আস্থা অর্জনে প্রচারণায় এগিয়ে থাকা মানিক আশা করেন তিনিই পাবেন দলের মনোনয়ন।

ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি বঙ্গন্ধু হত্যার প্রথম প্রতিবাদকারী, সাবেক চলচিত্র প্রযোজক ও পরিচালক, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইদুর রহমান মানিকের প্রচারনা ও ব্যবহার নিয়ে তৃণমূলের সকল মহলে চলছে তুমুল আলোচনা। সবাই বলছেন, তিনিই জনগনের সেবা করার যথেষ্ট যোগ্যতা রাখেন।

দলীয় পদ পদবীধারী নেতাকর্মীদের বাইরেও শিক্ষক, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, ইমাম, পুরহিত, শ্রমিক, কৃষক, জেলে, কামার, কুমার সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের পছন্দের ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে পেরেছেন মানিক।

সাইদুর রহমান মানিক সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে কাজ করতে চান। নৌকা মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে ইতিমধ্যে তিনি দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ, মতবিনিময়, পথসভা, উঠানবৈঠক করে তৃণমূলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের অনেক চাঙ্গা করেছেন। তিনি তার প্রচারণার কৌশল ও হাসিমুখের ব্যবহারে ইতিমধ্যেই সকল মহলের আস্থা অর্জনে অনেক এগিয়ে রয়েছেন।

ছাত্র জীবন থেকেই তিনি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও তার জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বক্রিয় অংশ গ্রহণ এবং ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপরিবারে নিহত হওয়ার পর কিশোরগঞ্জ জেলা শহরে মানিকের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রথম প্রতিবাদ মিছিল। এ অপরাধে তাকে এবং তার সহকর্মীদের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি হলে ছদ্দবেশ ধারন করে থাকতে হয় অনেক দিন।

তৎকালীন ছাত্রনেতা বর্তমান রাষ্ট্রপতি এডভোকেট মো: আব্দুল হামিদের হাত ধরেই মানিকের রাজনীতির হাতেকরি। এবারও তিনি তাঁর দোয়া এবং আশির্বাদ নিয়েই নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন নৌকার প্রচারনায়। সাইদুর রহমান মানিক জানান, ছদ্দবেশ ধারন করে দীর্ঘদিন থাকার পর তিনি চলচিত্র জগতে আসেন। ৪০টিরও বেশি সিনেমা প্রযোজনা ও পরিচালনা করেন। নির্বাচনে তিনি চলচিত্র প্রযোজনা পরিচালনা সমিতির সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং আইন পেশায় খ্যাতি অর্জন করায় ২০১৬-১৭ সালে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি দেশরত্ন শেখ হাসিনা মনোনীত ঢাকা বারের সভাপতি প্রার্থী হয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের নামে মিলনায়তন, শহিদ মুক্তিযোদ্ধা আইনজীবী ক্লিনিক, এনেক্স ভবন সহ অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন মানিক। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সাইদুর রহমান মানিক পারিবারিক জীবনেও একজন সফল ব্যক্তি।

কুষ্টিয়া ভেড়ামারা থেকে নির্বাচিত প্রাক্তন সংসদ সদস্য রাজা জহুরুল হকের কন্যা ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক যুগ্ম সচিব আকলিমা জহির রীতা তার স্ত্রী। কণ্যা অদিতি রহমান দোলা কেন্দুয়া উপজেলার প্রথম নারী ব্যারিষ্টার এবং ছেলে রাজা সুমিত রহমান অমিত একজন সাংস্কৃত ব্যক্তিত্ব।

নির্বাচনকে সামনে রেখে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় শেখ হাসিনাকে আবারো প্রধানমন্ত্রী আসনে অধিষ্ঠিত করতে নৌকা ভোট দেয়ার আহবান জানিয়ে সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে নৌকার গণজোয়ার গড়ে তুলেছেন। পাশাপাশি দিচ্ছেন মসজিদ, মন্দির মাদ্রাসা, এতিমখানা, ধর্মীয় সভা সহ নানা সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে আর্থিক সহায়তা।

গত ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে কেন্দুয়া ও আটপাড়া উপজেলায় সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি পালনের জন্য তিনি আওয়ামীলীগের তহবিলে ২ লক্ষাধিক টাকা অনুদান দিয়ে আলোচনায় আসেন। পাশাপাশি সদ্য সমাপ্ত শারদীয় দূর্গা পূজায় দুই উপজেলার ৭৯টি পূজা মন্ডপে দুই লক্ষাধিক টাকার অনুদান দেন এবং পূজা মন্ডপে পরিদর্শনে গিয়ে নিজেকে একজন অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তি হিসেবে প্রমান করতে পেরেছেন মানিক।

সাইদুর রহমান মানিক বলেন, তৃণমূলের জনপ্রিয়তাকেই সর্বোচ্চ মূল্যায়ন করবেন নেত্রী । সেই বিবেচনায় আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাব শতভাগ এ বিশ্বাস নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এজন্য তিনি সকলের দোয়া ও আশির্বাদ কামনা করেন।

(এসবি/এসপি/অক্টোবর ২৭, ২০১৮)