E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সরকারি প্রতিশ্রুতি উপেক্ষিত

ঝুলে গেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত কার্যক্রম

২০১৮ অক্টোবর ২৭ ১৮:২৯:৪৮
ঝুলে গেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত কার্যক্রম

রূপক মুখার্জি, নড়াইল প্রতিনিধি : ঝুলে গেছে শিক্ষা প্রতিষ্টান এমপিওভুক্তি করণ কার্যক্রম। সরকারের প্রতিশ্রুতি থাকলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

চলতি বছর এক হাজার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার লক্ষ্য ছিল সরকারের। কিন্তু এমপিও ভুক্তির জন্য ৯ হাজার ৫৯৮ টি শিক্ষা প্রতিষ্টানের আবেদন জমা পড়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে হাজার খানেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিও ভুক্ত করা হলে বাকিরা অসন্তুষ্ট হতে পারে, এমন বিবেচনায় পুরো প্রকিয়াটি ধীর গতিতে চলছে বলে জানা গেছে।

নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র মতে, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার সম্ভাবনা নেই। সরকারের টানা ১০ বছর মেয়াদের শেষ সময়ে এসে তাঁরা (সরকার) এখন এমন কোনো সিন্ধান্ত নিতে চায় না, যাতে শিক্ষকদের একটি অংশের মধ্যে অসন্তোষের মনোভাব তৈরী হয়।

যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়, সেগুলোর শিক্ষক-কর্মচারিরা মাসে বেতন ভাতা বাবদ সরকারি অংশ (মূল বেতন ও কিছু ভাতা) পান। আর যে গুলো এমপিওভুক্ত নয়, সে গুলোর শিক্ষক কর্মচারিরা সরকার থেকে কোনো আর্থিক সুবিধা পান না। এ জন্য বেসরকারি স্কুল-কলেজ পর্যায়ে এমপিও ভুক্তির বিষয়টি অন্যতম আলোচিত বিষয়।

বর্তমানে সারা দেশে এমপিও ভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ২৮ হাজার। এ গুলোতে শিক্ষক কর্মচারি আছেন প্রায় ৫ লাখ। তাদের বেতন ভাতা বাবদ মাসে খরচ হয় ১ হাজার কোটি টাকা। এর বাইরে স্বীকৃতি পাওয়া নন- এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে সাড়ে ৫ হাজার। এগুলোতে শিক্ষক কর্মচারি রয়েছে ৭৫ থেকে ৮০ হাজার।

সর্বশেষ ২০১০ সালে ১ হাজার ৬২৪ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল। এর পর থেকেই এমপিও ভুক্তির দাবিতে নন-এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারিরা আন্দোলন করে আসছেন। শিক্ষক কর্মচারিরা গত ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনশন সহ কঠোর আন্দোলনে নামলে সরকার চলতি অর্থবছর থেকেই এমপিও ভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু জুন মাসে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত এমপিও ভুক্তির বিষয়ে সুস্পষ্ট কোন ঘোষণা দেন নাই।

এরপর শিক্ষকরা আবারও আন্দোলনে নামেন। তখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এমপিও ভুক্তির বিষয়ে কাজ চলছে। এরপর গত বছরের জুলাইয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এমপিওভুক্তির জন্য বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্টানের জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ জারি করে। এরপর গত আগস্টে এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন নেওয়া হয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট একটি সুত্র জানিয়েছে, নীতিমালার বাইরে যেন তানো প্রতিষ্টান এমপিওভুক্ত হতে না পারে, সে জন্য মাঠ পর্যায়ে যাচাই বাছাই জরুরী। মাঠ পর্যায়ে যাচাই বাছাইয়ের কাজ শুরু হয়নি। তাছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এত অল্প সময়ে বিপুল সংখ্যক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো মাঠ পর্যায়ে যাচাই বাছাই করা অসম্ভব।

সরকারের মেয়াদের শেষ হতে চললেও এখনও এমপিও ভুক্তির ঘোষণা না আসায় নন-এমপিও ভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারিদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। তাদের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ ও অসন্তোষ। কথা হয় জেলার লোহাগড়া উপজেলার নন-এমপিও ভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আমাদা আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আল ফয়সাল খানের সাথে।

তিনি বলেন, ‘মানবিক দিক বিবেচনা করে নির্বাচনের আগেই প্রধানমন্ত্রী এমপিওভুক্তির ব্যবস্থা করবেন’।

(আরএম/এসপি/অক্টোবর ২৭, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test