E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রাণীনগরের আবাদপুকুর কেন্দ্রে পুরনো প্রশ্নপত্র দিয়ে জেএসসি পরীক্ষা

২০১৮ নভেম্বর ০২ ১৬:৫০:২৯
রাণীনগরের আবাদপুকুর কেন্দ্রে পুরনো প্রশ্নপত্র দিয়ে জেএসসি পরীক্ষা

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগরে আবাদপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ে জেএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রায় আধাঘন্টা ধরে ২০১৭ সালের পুরনো প্রশ্নপত্র দিয়ে ৬৪ জন পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে হয়েছে। বৃহস্পতিবার আবাদপুকুর জেএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে এই ঘটনাটি ঘটেছে। কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতায় ২০১৭ সালের প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষার শুরু থেকে প্রায় আধাঘন্টা জেএসসি’র বাংলা পরীক্ষা দিতে হলো আবাদপুকুর কেন্দ্রের দুই কক্ষের ৬৪ জন পরীক্ষার্থীকে।

এই পরীক্ষার্থীরা উপজেলার শফিকপুর উচ্চ বিদ্যালয় এবং করজগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এ নিয়ে পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন রাণীনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: আব্দুল জলিল।

শফিকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো: শহিদুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর আলম জানান, জেএসসি আবাদপুকুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৪ ও ১৫ নম্বর কক্ষে শফিকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩২ জন এবং করজগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় এর ৩২ পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে। এই কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ৮’শ ৫৭ জন। পরীক্ষার শুরুতে বাংলা পরীক্ষার জন্য এই দুই কক্ষে ২০১৭ সালের প্রশ্নপত্র দেয়া হয়। অনেক পরীক্ষার্থী প্রশ্নপত্রে সাল না দেখে লেখা শুরু। কোন কোন পরীক্ষার্থী ১০-১৫ মিনিটে ৩-৪টি প্রশ্নের উত্তর লিখে ফেলে। এ অবস্থায় কয়েকজন শিক্ষার্থী ২০১৭ সালের প্রশ্নপত্র দিয়ে তারা পরীক্ষা দিচ্ছে বুঝতে পেরে বিষয়টি কক্ষের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের জানায়।

তারা পরীক্ষাথীদের কথায় কোন কর্ণপাত না করে বরং ২০১৭ সালের প্রশ্নপত্র ঠিক আছে এবং এই পশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা দিতে বলেন। এতে কিছু পরীক্ষার্থী প্রতিবাদ করে পরীক্ষা দিতে অস্বীকার করলে প্রায় ২৫-৩০ মিনিট পর ২০১৭ সালের প্রশ্নপত্র পাল্টিয়ে পরীক্ষার্থীদের ২০১৮ প্রশ্নপত্র দেয়া হয়।

এর ফলে প্রায় আধাঘন্টা সময়ের ক্ষতি হলেও এই ৬৪ পরীক্ষার্থীকে কোন বাড়তি সময় দেয়া হয়নি। এ অবস্থায় কম সময় পাবার কারনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরীক্ষার্থীর অভিভাবকরা।

শফিকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী মো: আকাশ, মকসেতুল, সাব্বির জানান, তারা ২০১৭ সালের প্রশ্নপত্র পাল্টিয়ে দেয়ার জন্য বারংবার শিক্ষক এমনকি কেন্দ্র সচিবকে জানালেও কোন গুরুত্ব দেননি। পরে এ নিয়ে পরীক্ষার্থীরা হৈচৈ শুরু করলে ২০-২৫ মিনিট পর প্রশ্নপত্র পাল্টিয়ে দেয়া হয়। কম সময় আমরা অনেকেই সব প্রশ্নের উত্তর লিখতে পারিনী। এ কারনে আমরা মেধার বিকাশ ঘটাবো কি ভাবে।

অভিভাবক মো: সিরাজুল ইসলাম, এমদাদুল হক ও জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করেন, কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলায় আমাদের সন্তানরা পিছিয়ে গেল সময় কম পাওয়ায়। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া দরকার।

আবাদপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের কেন্দ্র সচিব মো: আব্দুস সোবহান ২০১৭ সালের প্রশ্নপত্র দিয়ে মাত্র ৩-৪ মিনিট পরীক্ষা নেয়া হয়েছে বলে সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেন। বিষয়টি জানার সাথে সাথে প্রশ্নপত্র পাল্টিয়ে দিয়েছি। তবে এই কেন্দ্রে ম্যাজিষ্ট্রেটের দায়িত্বে থাকা উপজেলা মাধ্যমিক সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুনকে মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: আব্দুল জলিল বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে এ বিষয়ে আমি পুরোপুরি অবগত না। কেউ যদি অভিযোগ করে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি আমি জানি না তবে ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(এসকেপি/এসপি/নভেম্বর ০২, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test