E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বন্যহাতির প্রতিশোধ !

২০১৪ জুলাই ১৮ ১৬:১৭:৪২
বন্যহাতির প্রতিশোধ !

শেরপুর প্রতিনিধি : কিছু দিন আগে বন্যহাতির একটি শাবক বনের ভেতরের একটি কুয়াতে পড়ে মারা গেছে। এখন এই শাবকের শোকে বন্যহাতির দল প্রায় প্রতিদিনই প্রতিশোধ নিতে এলাকায় এসে ভাংচুর চালাচ্ছে। শেরপুরের সীমান্তবর্তী নালিতাবাড়ী উপজেলার পাহাড়ী জনপদ গোপালপুর বনবিট এলাকায় বন্যহাতির এমন তান্ডব চলছে।

বৃহস্পতিবার রাতে এবং শুক্রবার ভোরে বন্যহাতির দল তান্ডব চালিয়ে ওই এলাকার মায়াঘাষী গ্রামের সীমান্ত সড়কের উত্তর অংশে গোপালপুর বনবিট অফিসের বিল্ডিং, কৃষক আবুল কাশেমের ৪টি মাটির ঘর, গোলার ধান, ঠেলাগাড়ী অসবাবপত্র লণ্ডভণ্ড ও তছনছ করে দিয়েছে। হাতির আক্রমণে জীবন বাঁচাতে দৌঁড়াতে গিয়ে আহত হয়েছেন ৬ জন। আহতরা হলেন, ওই গ্রামের ইউনুছ আলী, হযরত আলী, লাল মিয়া, শাহা আলম, গারো আধিবাসী জীবেন দাওয়া ও স্বপন দাওয়া।

বনবিভাগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত দুই মাস ধরে বিরতিহীনভাবে প্রায় প্রতিদিনই বন্যহাতির একটি পাল নালিতাবাড়ী উপজেলার ভোগাই নদীর পূর্ব পারে কালাকুমা, পানিহাতা, পেকামারী, মায়াঘাসী, গোপালপুর, বারঘড়িয়া গ্রামগুলোর লোকালয়ে হানা দিয়ে তাণ্ডব চালাচ্ছে। এ দলে প্রায় শতাধিক হাতি রয়েছে। বন্যহাতির অব্যাহত আক্রমণে রমজান মাসে রাত জেগে থাকা সীমান্তে বসবাসকারী শত শত মানুষের জীবন দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে। মশাল, টর্চলাইট জ্বালিয়ে লাঠিসোঠা-পাটকেল ছুড়ে হাতি তাড়ানোর সনাতন পদ্ধতি এসব কিছুতেই এখন আর বন্যহাতি ভয় পায় না। বরং এসব দেখে তাদের আক্রমনের ইচ্ছা আরো প্রবল হয় এবং প্রায়ই আক্রমন করে বসে।

বন্যহাতি তাণ্ডব চালিয়ে বৃহস্পতির সকাল সাতটার দিকে মায়াঘাসী এবং গোপালপুর বনবিটের ফরেষ্ট অফিসের ২টি বিল্ডিং যেখানে অফিসের কার্যক্রমের জন্য ৩টি কক্ষ। সেই ৩টি কক্ষেরই দরজা-জানালা আসবাবপত্র সকল কিছু ভেঙ্গে ফেলেছে। তার কিছু উত্তরে আরেকটি পরিত্যাক্ত বিল্ডিং সেটিও লণ্ডভণ্ড করেছে বন্যহাতির দল।

একদিকে, ঝড়ো হাওয়ায় বনের ভেতর শাল-গজারী, সেগুন গাছের পাতার মর্মর শব্দ আর বন্য হাতির মাটি কাঁপানো চিৎকারে মানুষের চলার পথে ভয় ও আতংকে গত দুই মাস ধরে নিদ্রাহীন সীমান্তবর্তী জনপদের মানুষগুলো এখন বন্যহাতির অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা জানান, প্রায় দুই মাস পূর্বে গোপালপুর বনবীট এলাকায় একটি হাতি শাবক কুয়ার পড়ে মারা যায়। এরপর থেকেই এ অঞ্চলে বন্যহাতির উন্মত্ততা বাড়তে থাকে।

গোপালপুর বনবিটের বনপ্রহরী তোফাজ্জল হোসেন বলেন, এমনিতেই খাদ্যের অভাবে বন্যহাতি পাহাড়ী জনপদের লোকালয়ে হানা দেয়। তারপর কিছুদিন আগে একটি বন্যহাতি শাবকের মৃত্যুকে ঘিরে বন্যহাতি আমাদের অফিস ও এলাকার মানুষজনের বাড়ীঘরে আক্রমণ চালাচ্ছে। আবুল মাষ্টার ও শাহজাহান নামে স্থানীয় গোপালপুর গ্রামের দুই বাসিন্দা বলেন, কিছুদিন ধরে বন্যহাতির আনাগোনা ও তাণ্ডব বেড়ে চলেছে। বিদ্যুতের আলো দেখলে বন্যহাতি ভয় পায়। সীমান্ত এলাকায় একমাত্র বিদ্যুৎ সরবরাহ করেই বন্যহাতির তাণ্ডব রোধ করা সম্ভব।

(এইচবি/জেএ/জুলাই ১৮, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test