E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রাজারহাটে ক্ষুরা রোগের প্রকপ : ৩০টি গরু-ছাগলের মৃত্যু, ৩ শতাধিক আক্রান্ত

২০১৮ নভেম্বর ১২ ১৫:০২:১৬
রাজারহাটে ক্ষুরা রোগের প্রকপ : ৩০টি গরু-ছাগলের মৃত্যু, ৩ শতাধিক আক্রান্ত

রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের রাজারহাটে গত ১ সপ্তাহে  প্রায় ৩ শতাধিক গরু-ছাগল ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে  এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ২২টি গরু  ও ৮টি ছাগল মারা গেছে। এ রোগের প্রতিষেধক হিসেবে ভ্যাকসিনের প্রকট সংকট দেখা দেয়ায় খামারীসহ গবাদী পশু পালনকারীরা আতংকিত হয়ে পড়েছেন।

সোমবার (১২ নভেম্বর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার উমর মজিদ ইউনিয়নের পান্থাপাড়া এলাকায় রুবেল আলমের ১টি বাছুর, নজরুল ইসলামের ২টি বাছুর, মগদুল ইসলামের ১টি গাভী, আবু তালেবের ১ টি বাছুর, বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের সুখদেব এলাকার হারুনের ১টি বাছুর, চাকির পশার ইউনিয়নের পূর্বপাঠক পাড়া গ্রামের গরুর খামারী মংলা মন্ডলের ১টি গাভীসহ ৩টি গরু ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের সুখদেব গ্রামের আশরাফুল ইসলামের ২টি, আতাউর রহমানের ২টি, আমিনুল ইসলামের ২টি, সুজাউদৌল্লাহর ৫টি, হারুন অর রশিদের ১৫টি, চাকিরপশার ইউনিয়নের কুমর গঞ্জ এলাকায় ১২টি বাড়ীতে আমবাড়ী এলাকায় ১০টি বাড়ীতে, চাকিরপশার পাঠক এলাকায় ১০টি বাড়ীতে, চকনাককাটি এলাকায় ১০টি বাড়ীতে, ঘড়িযালডাঙ্গা ইউনিয়নের ২০টি বাড়ীতে, ঋমর মজিদ ইউনিয়নের ২২টি বাড়ীতে, নাজিমখান ইউনিয়নে ২০টি বাড়ীতে, ছিনাই ইউনিয়নের ৩০টি বাড়ীতে, রাজহারহাট ইউনিয়নের ১২টি বাড়ীতে , বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের ২৫টি বাড়ীতে প্রায় ৩ শতাধিক গরু-ছাগল আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।

এ রোগটির সংক্ষিপ্ত নাম এফএমডি ( ফুড এন্ড মাউথ ডিজিস)। এটি একটি ভাইরাস জনিত রোগ। এ রোগ হলে দেহের তাপমাত্রা বেড়ে যায়, জিহবা, দাতের মাড়ি, মুখ গহর, পায়ের খুরার মধ্য ভাগে ঘা বা ক্ষতের সৃষ্টি হয়। ক্ষত সৃষ্টি হলে মুখ থেকে লালা ঝড়ে, সাদা ফেনা বেড় হয়। গরুর বাছুর এ রোগে আক্রান্ত হলে বাঁচানো যায় না। আক্রান্ত অবস্থায় পশুটিকে এ রোগের ভ্যাকসিন দেয়া যায় না। যে বাড়ীতে গরু আক্রান্ত হয়। আশে-পাশের বাড়ীর সকল গবাদী পশুকে রিং করে ভ্যাকসিন দিতে হয়।

এছাড়া প্রতি ৪ মাস পরপর একবার করে ভ্যাকসিন দিতে হয়। হাট থেকে গরু কিনে নিয়ে আসার কারণে এ রোগ বেশী দেখা দেয়। এ রোগ হলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। বাতাস, খাদ্য ও লালা থেকে এ রোগ ছড়ায়। আক্রান্ত গরুকে ট্রাইভ্যালেন, বাইভ্যালেন ভ্যাকসিন দিতে হয় বলে উপজেলা ভ্যাটেনারী সার্জন ডাঃ পবিত্র কুমার জানান।

রাজারহাট উপজেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরে এ রোগের ভ্যাকসিন সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়া রাজারহাটসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে গবাদী পশুর ওষুধের দোকানগুলোতেও এ রোগের ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে খামারীসহ পশুপালনকারীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। খামার গুলোতে নিয়মিত ভাবে ভ্যাকসিন দেয়ায় এ রোগ দেখা দেয়নি বলে উপজেলা ভ্যাটেনারী সার্জন দাবি করেছেন।

তিনি আরো জানান, উপজেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরে মাত্র ২জন ভ্যাটেনারী ফিল্ড এ্যাসিটেন্ট (ভিএফএ) থাকায় এবং জনবল সংকটের কারণে মাঠ পর্যায়ে তারা চিকিৎসা সেবা দিতে হিমসিম খাচ্ছে। উপজেলার মংলা মন্ডল সহ বেশ কয়েকজন গরুর খামারীর সাথে কথা হলে তারা ক্ষুরা রোগের ভ্যাকসিন সংকটের কথা জানান।

১২নভেম্বর সোমবার এব্যাপারে উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ জোবাইদুল কবির জানান, ক্ষুরা রোগ সংক্রামক ব্যাধি এবং ছোঁয়াচে। বাইরের থেকে গরু কিনে নিয়ে আসার এবং আবহাওয়ার কারণে এ উপজেলায় ক্ষুরা রোগ দেখা দিয়েছে। একটি গরুকে আক্রমণ করলে ১কিলোমিটারের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তাই রিং করে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হবে। অন্যান্য এলাকার চেয়ে রাজারহাটে তুলনামূলক এটি কম।

(পিএমএস/এসপি/নভেম্বর ১২, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test