E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মোংলা বন্দরে নিয়োগ পরীক্ষা পন্ড, ২ সিবিএ’র নেতার বিরুদ্ধে মামলা

২০১৮ নভেম্বর ১৭ ১৬:০৮:৫০
মোংলা বন্দরে নিয়োগ পরীক্ষা পন্ড, ২ সিবিএ’র নেতার বিরুদ্ধে মামলা

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট : মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের নিয়োগ পরীক্ষায় সিবিএ নেতাদের হামলা ও বাঁধার মুখে পন্ড হয়ে গেছে। এ ঘটনায় দায়ী মোংলা বন্দও সিবিএ’র সাধারণ সম্পাদকসহ দুই নেতাকে আসামি করে থানায় মামলা করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। 

ওই নেতারা পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর একেএম ফারুক হাসানসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের লাঞ্চিত করে তাদের গাড়ীর চাবি আটকে রাখে। পওে মোংলা বন্দরের শীর্ষ কর্মকর্তারা নৌবাহিনী ও পুলিশের সহযোগীতায় এলাকা ত্যাগ করেন। শুক্রবার সকালে এ ঘটনা ঘটলেও রাত পৌনে ১১ টার দিকে বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের দপ্তর বিষয়টি বিস্তারিত সংবাদ মাধ্যকে জানায়।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওহিউদ্দিন চৌধুরী জানান, শুক্রবার সকাল ১১টায় খুলনার নৌবাহিনী স্কুলে ৯টি ক্যাটাগরিতে ৪০ টি নিয়োগ পদের লিখিত পরীক্ষা শুরু হয়। এ সময় ৩টি ধাপের প্রথম ধাপের পরীক্ষায় ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ঔই ফল ঘোষণায় মোংলা বন্দর কর্তপক্ষ কর্মচারী সংঘের (সিবিএ) নেতাদের পছন্দের প্রার্থীরা অকৃতকার্য হওয়ায় তারা পরের ধাপের প্রক্রিয়া বন্ধ করতে নানা রকম হুমকি ধামকি দেয়।

এক পর্যায়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকে সিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক কাজী খুরশিদ আলম পল্টু ও কার্যকরী সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী পরীক্ষা বন্ধ করে বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর একেএম ফারুক হাসান, পরিচালক প্রশাসন প্রণব কুমার রায়, নিয়োগ কমিটির আহবায়ক ও বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (অর্থ) আফসানা ইয়াসমিন, নৌ পরিবহণ মন্ত্রনালয়ের উপ-সচিব নজরুল ইসলাম, বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওহিউদ্দিন চৌধুরী, যান্ত্রিক ও তড়িৎ বিভিাগের প্রধান প্রকৌশলী মিজানুর রহমান শাহ চৌধুরী এবং প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা লে. কমান্ডার আব্দুল আলীমকে লাঞ্ছিত করে তাদের গাড়ীর চাবি আটকে নিয়ে নেয়। এ সময় পরীক্ষা কেন্দ্র ভাংচুর করা হয় বলেও জানান সচিব ওহিউদ্দিন।

পরে ঘটনাস্থলে নৌবাহিনীর ও পুলিশ সদস্যদের খবর দিলে তাদের গাড়ীতে করে ওইসব কর্মকর্তাদের নিয়ে যাওয়া হয়। পরে এ ঘটনায় বন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী ব্যবস্থাপক (কর্ম) সালাউদ্দিন কবির বাদী হয়ে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্মচারী সংঘের সাধারণ সম্পাদক কাজী খুরশিদ আলম পল্টু ও কার্যকরী সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরীকে আসামী করে খুলনার খালিশপুর থানায় মামলা করেন।

মোংলা বন্দর জানায়, পাম্প ড্রাইভার পদে ৫ জন, গাড়ীর ড্রাইভার পদে ৮ জন, গ্রীজার কাম পাম্প ড্রাইভার ২ জন, কার্য সহকারী পদে ২ জন, জাহাজের প্রথম শ্রেণীর ড্রাইভার পদে ২ জন, দ্বিতীয় শ্রেণীর ড্রাইভার পদে ৩ জন ও ফোরম্যান পদে ১ জনসহ মোট ৪০ টি পদে নিয়োগ পরীক্ষার কথা ছিল। কিন্তু সিবিএ নেতাদের বাধার মুখে তা পন্ড হয়ে যায়। পন্ড হয়ে যাওয়া এসব পরীক্ষা পরে নেয়া হবে।

নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক মোংলা বন্দরের কয়েকজন কর্মচারী বলেন, পূর্বে মোংলা বন্দরে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৩০ভাগ পোষ্য কোঠা চালু ছিল, কিন্তু পরবর্তীতে তা বাতিল হয়। অথচ বর্তমান সিবিএ’র নেতাদের নির্বাচনী ইসতেহারও ছিল সেই পোষ্য কোঠা পুনরায় বহালের প্রতিশ্রুতি। কিন্তু সিবিএ’র নেতারা সেই দাবি বাস্তবায়ন না করে বিশেষ করে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো: খুরশিদ আলম পল্টু ও কার্যকরী সভাপতি নাছির উদ্দিন চৌধুরী ব্যক্তি স্বার্থে তাদের আত্মীয়-স্বজন ও বিভিন্নজনের কাছ থেকে সুবিধা নিলে পছন্দসই প্রার্থী নিয়োগ পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় বিশৃঙ্খলার মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি দোষীদের বিচার দাবী করছি।

এদিকে অভিযুক্ত সাধারণ সম্পাদক কাজী খুরশিদ আলম পল্টু বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার ক্ষেত্রে বন্দরের ইতিহাসে লিখিত পরীক্ষায় কোনদিন হার্ড (কঠিন) প্রশ্ন করা হয়নি, এবারের যে প্রশ্ন করা হয়েছে তাতে অনেকেই উন্নীত হতে না পারায় আমি প্রতিবাদ জানিয়ে পরীক্ষা বন্ধ করতে বলেছি। তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়ে তিনি বলেন, কোন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে আমি কোন অর্থ নেয়া হয়নি।

(এসএকে/এসপি/নভেম্বর ১৭, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test