E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সুনামগঞ্জের তিনটি আসনে প্রয়াত সাংসদ পুত্রদের শেষ ভরসা শেখ হাসিনা 

২০১৮ নভেম্বর ২৩ ২৩:০৫:৩২
সুনামগঞ্জের তিনটি আসনে প্রয়াত সাংসদ পুত্রদের শেষ ভরসা শেখ হাসিনা 

সিলেট প্রতিনিধি : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সুনামগঞ্জের ৩টি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রয়াত তিন সাংসদ পুত্ররা কী শেষ পর্য্যন্ত আদৌ নৌকার মাঝি হতে পারবেন?

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সাংগঠনিক দক্ষতা থাকলেও মহাজোট, দলীয় অন্যান্য হেভিওয়েট প্রার্থী ও নানা সমীকরণে সাংসদ পুত্রদের মনোনয়ন পাওয়া না পাওয়ার বিষয়টির এখন শেষ ভরসাস্থল দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর হাসিনার হাতেই।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চুড়ান্ত হওয়ার দিন কয়েক বাকি থাকতে এমন প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে গোটা সুনামগঞ্জ জেলার রাজনৈতিক মহলে।

জাতীর জনকের সহচর স্বাধীন বাংলার প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ। প্রভাবশালী নেতা হিসেবে দেশ-বিদেশে পরিচিতি ছিলেন তিনি। আমৃত্যু সিলেট বিভাগের রাজনীতি তার হাতের মুঠোয় ছিল। আব্দুস সামাদ আজাদের মৃত্যুর পর রাজনীতিতে পুরোপুরি সক্রিয় হন পুত্র আজিজুস সামাদ ডন। সুনামগঞ্জ -৩ (জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জ) আসনে ২০০৮-২০১৪ সালে দুই বার চেষ্টা করেও দলীয় মনোনয়ন পাননি জাতীয় নেতার এই ছেলে।

জেলা আ.লীগের সদস্য আজিসুজ সামাদ ডন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। তবে তাকে মনোনয়ন পেতে হলে বর্তমান সাংসদ অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নানকে টপকাতে হবে। ফলে তার ভাগ্য অনেকটা ঝুলে আছে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার হাতে।

অ্যাডভোকেট আব্দুর রইছ ১৯৭০ এবং ১৯৭৩ সালে সুনামগঞ্জ-৩ আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ছিলেন জেলা আ.লীগের আমৃত্যু সভাপতি। এর আগে জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদকের দ্বায়িত্ব পালন করেন। তার স্ত্রী রফিকা রইছ চৌধুরীও ছিলেন জেলা মহিলা আ.লীগের আমৃত্যু সভানেত্রী।

অ্যাড. আব্দুর রইছের দুই পুত্র জেলা আ.লীগের সহসভাপতি অ্যাড. খায়রুল কবির রুমেন ও জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল করি ইমন সুনামগঞ্জ-৪ ( সদর-বিশ্বম্ভরপুর) আসনে এবারের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। ব্যারিস্টার ইমন জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার আগে জেলা যুবলীগের আহবায়কও ছিলেন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নও পেয়েছিলেন। কিন্তু মহাজোটের কারণে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার নির্দেশে আ.লীগ আসনটি ছাড় দেয় জাপাকে। পরে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় মহাজোঠের শরীক জাপা থেকে এমপি নির্বাচিত অ্যাডভোটে পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ।

এবারো এ আসনে মহজোটের প্রার্থীতা অনেকটাই চুড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে পীর মিসবাহ’র। সেক্ষেত্রে অ্যাডভোকেট রুমেন ও ব্যারিস্টার ইমন পীর মিসবাহকে পেছনে ফেলে দলীয় মনোনয়ন আনতে হবে। এই আসনে জেলা আ.লীগের সভাপতি ও সাবেক সাংসদ মতিউর রহমানও আ.লীগের শক্তিশালী প্রার্থী। আসন্ন নির্বাচনে কোনভাবেই জাপাকে আসনটি ছাড় দিতে রাজি নয় আ,লীগ। দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা এখন একমাত্র ভরসা তাদের।

আব্দুজ জহুর ১৯৭০ সালে এমপিএ, ১৯৭৩ ও ১৯৯১ সালে সুনামগঞ্জ সদর আসনে এমপি নির্বাচিত হন। প্রথম দফায় সাধারন সম্পাদক ও পরে জেলা আ,লীগের সভাপতি দ্বায়িত্ব পান তিনি। সৎ, নিষ্ঠাবান এই নেতা আমৃত্যু জেলা আ.লীগের সভাপতি ছিলেন। তার বড় ছেলে জুনেদ আহমদ বর্তমান জেলা আ,লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-১ (তাহিরপুর-জামালগঞ্জ-ধর্মপাশা ও মধ্যনগর) এবং সুনামগঞ্জ-৪ (সদর-বিশ্বম্ভরপুর) আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। জেলার গুরুত্বপূর্ণ দুটি আসনে তিনি ছাড়াও আ.লীগের প্রভাবশলী আরো কয়েকজন নেতা দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী।

জেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জুনেদ আহমদ যুগান্তরকে বলেন, মনোনয়নের ব্যাপারে আশাবাদি, এখন বাকিটা দলীয় সভানেত্রীর হাতে।

জেলা আ.লীগের সহ সভাপতি অ্যাড. খায়রুল করির রুমেন বলেন, আশা করছি নেত্রী আমাকে নিরাশ করবেন না।
জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিষ্টার এম এনামুল কবির ইমন বললেন, দলীয় সভাপতি জাতীর জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিবেচনায় যেটি ভালো মনে হয়, তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন আমি তাই মেনে নেব।

জেলা আ,লীগ সদস্য আজিজুস সামাদ ডন বললেন, সুনামগঞ্জ-৩ নির্বাচনী এলাকার সাধারন ভোটার থেকে শুরু দলের নেতাকর্মীরাও দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের অপেক্ষার প্রহর গুনছে, উনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটিই আমি মেনে নেব।

(এই্চ/এসপি/নভেম্বর ২৩, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test