E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মতলবে নিখোঁজ স্কুল ছাত্রের লাশ উদ্ধার, আটক ২

২০১৮ ডিসেম্বর ১০ ২২:৫২:৪৮
মতলবে নিখোঁজ স্কুল ছাত্রের লাশ উদ্ধার, আটক ২

উজ্জ্বল হোসাইন, চাঁদপুর : ভাতিজা নিখোঁজ হওয়ার পর থানায় হারানো ডায়েরী করেন জেঠা জামাল হোসেন। আর সেই জেঠাই ছোট ভাইয়ের ছেলে মাহিবকে হত্যা করে টয়লেটের সেফটি ট্যাংকিতে ফেলে রাখে। এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে মতলব দক্ষিণ উপজেলার নায়েরগাঁও উত্তর ইউনিয়নের ঘোনা গ্রামে।

গত ১০ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ২টা ৩০ মিনিটে একই গ্রামের তাজুল ইসলামের টয়লেটের সেফটি ট্যাংকি থেকে মাহিবের লাশ উদ্ধার করেছে মতলব দক্ষিণ থানা পুলিশ। পরে শিশু মাহিবের লাশ ময়না তদন্তের জন্য চাঁদপুর মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত মাহিবের জেঠা মোঃ জামাল ও প্রতিবেশী মোঃ সজীবকে আটক করা হয়েছে।

মতলব দক্ষিণ থানার এসআই জহির জানান, স্কুলছাত্র মাহিব নিখোঁজের পর পুলিশ কয়েকজনকে সন্দেহ করে তাদের মোবাইল ট্যাংকিং শুরু করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মাহিবের জেঠাকে আটক করা হয়।

পুলিশ জানায়, মাহিবের জেঠার উদ্দেশ্য ছিল মাহিবকে আটক করে মুক্তিপণ আদায় করা। বিষয়টি যখন এলোমেলো হয়ে যায়, তখনই সে ৩ ডিসেম্বর রাতে মাহিবকে হত্যা করে। হত্যার পর লাশ তার দোকানেই ছিল। ৪ ডিসেম্বর গভীর রাতে পার্শ্ববর্তী বাড়ির হাজী তাজুল ইসলামের সেফটি টাংকিতে লাশ ফেলে দেয়।

এ সময় সহকারী পুলিশ সুপার সার্কেল (মতলব) রাজন কুমার দাস, মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ একেএমএস ইকবাল, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ইব্রাহীম খলিল, এসআই মোঃ রুহুল আমিন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে শিশু মাহিবের লাশ টয়লেটের সেফটি ট্যাংকি থেকে উদ্ধার করেন।

এদিকে এলাকাবাসী শিশু মাহিবের হত্যাকারী তার জেঠা জামাল উদ্দিনের ফাঁসির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে। এছাড়াও বিক্ষুদ্ধ জনতা তার দোকান ভাংচুর করে, বাড়ি ঘেরাও করে। পরে মতলব দক্ষিণ থানার এসএই জহিরুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে পরিবেশ শান্ত করে। এ সময় তার দোকান-ঘর থেকে দেশীয় পাইপগান উদ্ধার করে পুলিশ। এদিকে পুলিশ ধারণা করছে, মাহিবের বাবা প্রবাসী ও মা শিক্ষিকা হওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্ভী। তাদের টাকা পয়সার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে এ হত্যাকা- ঘটনা ঘটেছে।

মাহিবের মাতা শাহিনা আক্তার জানান, মাহিবকে তাঁর জেঠা মোঃ জামাল হোসেন হত্যা করে টয়লেটের টাংকিতে ফেলেছে। আমি এ পাষন্ড হত্যাকারীরদের সুষ্ঠু বিচার চাই।

মতলব দক্ষিণ থানার ওসি একেএমএস ইকবাল হোসেন জানান, মোবাইল ট্যাকিংয়ের মাধ্যমে মাহিবের জেঠা জামাল ও সজিবকে আটক করা হয়। আটককৃতদের সাথে নিয়ে তাদের দেখানো স্থান থেকে শিশু মাহিবের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মাহিবের বাবা প্রবাসী মাসুদ রানা বাদী হয়ে ৯ ডিসেম্বর রাতে মামলা দায়ের করেছে। যার মামলা নং-১০। মাহিবের লাশ ময়না তদন্তের জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আসামীদেরকে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ওই এলাকার প্রধানীয়া বাড়ির প্রবাসী মাসুদ রানা ও ঘোনা ওয়াসিম উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শাহিনা আক্তারের ছেলে ১ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহিব (৭) গত ৩ ডিসেম্বর পরীক্ষা শেষে স্কুলের পাশের এক বাড়িতে খেলা করছিল। তার মা স্কুল শেষে বাড়ি ফিরার সময় ওই বাড়িতে না পেয়ে চলে আসে। বাড়িতে এসেও ছেলের কোন খোঁজ না পেয়ে চারদিকে খোঁজাখুজি শুরু করে। কিন্তু কোথাও তার খোঁজ না পেয়ে পরের দিন ৪ ডিসেম্বর মাহিবের জেঠা জামাল হোসেন মতলব দক্ষিণ থানায় একটি হারানো ডায়রী করেন।

(ইউ্এইচ/এসপি/ডিসেম্বর ১০, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test