E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গৌরীপুরে ইউপি সদস্য খুন, ২৪ বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা

২০১৮ ডিসেম্বর ১৪ ১৭:৫৫:১৯
গৌরীপুরে ইউপি সদস্য খুন, ২৪ বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার বোকাইনগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. মোস্তাকীম মিয়া (৩৫) খুনের ঘটনায় ২৪ বাড়ির প্রায় অর্ধশত ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্দ জনতা।

শুক্রবার (১৪ ডিসেম্বর) ভোর ৬টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বোকাইনগর ইউনিয়নের বালুচড়া, মানিকদী, নিজামাবাদ, স্বল্প পশ্চিমপাড়া ও বাসাবাড়ি এলাকায় এ অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি ঘটে। উল্লেখ্য ৬ ডিসেম্বর একই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য স্বপন মিয়া (৩৩) গংরা মোস্তাকীম মিয়ার ওপর হামলা চালিয়ে তার দু’পা ও ডান হাত ভেঙ্গে দিয়ে গুরুতর আহত করে।

আহত মোস্তাকীমকে প্রথমে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতাল এবং সর্বশেষ মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মুগদা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎিসাধীন অবস্থায় ৮দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে বৃহস্পতিবার (১৩ডিসেম্বর) রাত ৯টায় তিনি মারা যান। নিহতের ভাই আবুল বাসার সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মোস্তাকীম মেম্বারের মৃত্যুর খবরে এলাকার বিক্ষুব্দ শতশত জনতা দেশীয় অস্ত্রে সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে শুক্রবার ভোর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত খুনের ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তি ও তাদের সহযোগীদের বাড়ি-ঘরে হামলা চালায়। এসময় খুনের ঘটনার মূল হোতা স্বপন মিয়ার বাড়িসহ তাদের ২৪ সহযোগীর বাড়ির প্রায় অর্ধশত ঘর ও মালামাল অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেয়া হয়।

ঈশ্বরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার মাহফুজুর রহমান জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্য সকাল ৭ টায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এসময় আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে বিক্ষুব্দ জনতা তাদেরকে বাঁধা দেয়। ফলে স্থানীয় আবুল কাশেমের বাড়ি ছাড়া অন্যান্য ব্যক্তিদের বাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রন করতে পারেনি।

গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ এসএ নেওয়াজী।

তিনি আরো জানান, মোস্তাকীম মেম্বারের ওপর হামলার ঘটনায় তার স্ত্রী আসমা আক্তার ৮ জন কে আসামী করে ৮ ডিসেম্বর থানায় একটি মামলা করেন। এ মামলার আসামী শাহেদ আলীকে ইতিমধ্যে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। পলাতক আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, মোস্তাকীম মিয়া উপজেলার বোকাইনগর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য ও প্রতিপক্ষ হামলাকারী স্বপন মিয়া একই ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য। তাদের দু’জনের মাঝে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ও পূর্ব শত্রুতার জেরে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে ঘটনারদিন মোস্তাকীম মিয়ার ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালায় উল্লেখিত স্বপন মিয়া গংরা।

স্থানীয় আবুল বাশার জানান, উল্লেখিত স্বপন মিয়া ও শাহেদ আলীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী এবং অসামাজিক কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আদালতে ১১টি মামলা চলমান রয়েছে। স্বপন ও শাহেদ বাহিনীর অত্যাচারে বর্তমানে এলাকাবাসী অতিষ্ট ছিল।

বোকাইনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিব উল্লাহ হাবিব মোস্তাকীম মেম্বারকে খুনের ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

(এসআইএম/এসপি/ডিসেম্বর ১৪, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test