E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পিরোজপুরে চাঁদার টাকা না পেয়ে প্রশিকা কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা

২০১৪ জুলাই ২০ ১৭:৫৬:৫৭
পিরোজপুরে চাঁদার টাকা না পেয়ে প্রশিকা কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা

পিরোজপুর প্রতিনিধি : পিরোজপুর জিয়ানগরের উমেদপুর এলাকায় চাঁদার টাকা না পেয়ে প্রশিকা কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা এবং বাধা দিতে এলে এক নারীর উপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে মাদক সম্্রাট মানিক ও তার বাহিনী। শনিবার রাত ৮ টার দিকে উমেদপুর গ্রামে তালুকদার বাড়ীতে এ নারকিয় হত্যা যজ্ঞের ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানাগেছে, মাদক সম্্রাট মানিক তালুকদার প্রশিকা মাঠ কর্মী বিধান চন্দ্রর রায়ের কাছে শনিবার সন্ধ্য ৭ টার দিকে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। বিধান টাকা দিতে অস্বিকার করলে সাঙ্গ পাঙ্গ সহ মানিক বাহীনি বিধানের উপর চড়াও হয়। দৌড়ে বিধান দুলালী রানী হাওলাদারের ঘরে আশ্রয় নেয়। সে খান থেকে টেনে হিচড়ে বাইরে নামিয়ে বেধরক পিটাতে থাকে। বাধা দিতে এলে দুলালী রানী হাওলাদারের উপর শারিরিক ও পাশবিক নির্যাতন চালায় মানিক ও তার বাহীনি। দুলালীর ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে পড়ুয়া মেয়ে নুপুরকে লাঠির আঘাতে অচেতন করে ফেলে রাখে। এর পর তারা বীর দর্পে চলে যায়। স্থানীয়রা এবং দুলালীর স্বামী নিকুঞ্জ হাওলাদার অচেতন অবস্থায় বিধানকে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। রবিবার সকালে গুরুতর অবস্থায় বরিশাল সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে প্রশিকা কর্মী বিধানের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ ও চানচঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। নির্যাতিতা দুলালী রানী হাওলাদার (৩৮) বলেন, মানিক এক জন মাদক সেবী। সে মদ গাঁজা ফেন্সিডিলের ব্যবস্যা করে। বিধান চন্দ্র প্রশিকায় চাকুরি করে। সে আমার বাসায় মাসিক ২ হাজার টাকা এবং আমার মেয়েকে পড়ানোর শর্তে ভাড়া ছিল। ঘটনার সময় আমার চোখের সামনে লোকটাকে পিটিয়ে মেরে ফেলছে দেখে আমি এগিয়ে গেলে আমাকে মানিক ধাক্কা মারে। আমার শরিরের উপর জোর পূর্বক অমানবিক নির্যাতন চালায়। এসময় আমার ঘরে থাকা ২ হাজার টাকা এবং বিধানের কাছে থাকা ৬ হাজার টাকাসহ মোট ৮ হাজার টাকাও তারা নিয়ে যায়। আমার মেয়েকে লাঠীর আঘাতে অচেতন করে ফেলে। আমি বাচার চেষ্টা করলে আমার পায়ে মা থায় বুকে লাঠি দিয়ে প্রচন্ড আঘাত করে। এ সময় তার সঙ্গে আরও ৭-৮ জন ছিল যাদের আমি অন্ধকারে চিনতে পারিনি। গতরাত থেকে মানিক ও তার সাঙ্গ পাঙ্গরা হুমকি দিয়ে যাচ্ছে আমি যদি মামলা করি অথবা আমার সাথে যা ঘটেছে তা কাউকে বলি তা হলে পরিবার সহ হত্যা করা হবে।
এ ব্যাপারে উমেদপুর ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ মোহসিন হাওলাদার বলেন, মানিক এ এলাকার ত্রাস, মাদক ব্যবসা, নারী নির্যাতন সহ গত ৭/৮ বছর ধরে এলাকার মানুষকে জিম্মিকরে সে অপরাধ মুলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তার বাহীনিকে ভয়ে কেউ কিছু বলে না । পুলিশের নাকের ডগায় রাজকিয় ষ্টাইলে সে তার মাদক ব্যবস্যা নিয়ন্ত্রন করে। ১ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় মৃত্যু হলো বিধানের।
মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রুহুল আমিন নবিন বলেন, এদের অত্যাচারে এলাকার কেউ ভাল নাই। চাঁদা বাজি মাদক ব্যবস্যা এদের নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার ।
এদিকে এ ঘটনায় আতংক বিরাজ করছে স্থানীয় প্রশিকা অফিসে। প্রশিকা কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম এ বিষয়ে বলেন, বিধান খুবই বিনয়ি এবং আন্তরিক কর্মচারি ছিলেন। সে পটুয়াখালীর নিলগঞ্জ ইউনিয়নের ফলিমপুর গামের নদী রায় বিহারীর ছেলে। কারও সাথে তার কোন বিরোধ ছিল না। মাত্র ১ লাখ টাকা চাঁদার জন্য নির্মন ভাবে পিটিয়ে এই ভাবে হত্যা মেনে নেওয়া যায় না।
জিয়ানগর উপজেলার ইন্দুরকানি থানার ওসি মোঃ কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, বিধান চন্দ্র রায় নিকুঞ্জ হালদারের বাড়িতে থাকতেন। চাঁদার দাবিতে মানিকের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা তাকে মারপিট করে আহত করার পর তার মৃত্যু হয়। ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে নয়ন, শুভ ও খোকনকে আটক করা হয়েছে।
প্রশিকা কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল ইসলাম জানিয়েছেন মামলার প্রস্তুতি চলছে।

(এসএ/এটিআর/জুলাই ২০, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test