E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দুমকির গ্রামীণ অবকাঠামোর কাঁচা রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা

২০১৯ জানুয়ারি ০৭ ১৯:২১:২৪
দুমকির গ্রামীণ অবকাঠামোর কাঁচা রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা

দুমকি (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামোর অন্তত: দেড়শ’ কি.মিটার কাঁচা রাস্তার বে-হাল দশা হয়েছে। সংস্কার না করায় এবং যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পড়ে থাকা উপজেলা শহরের সাথে যোগাযোগের বিভিন্ন ইউনিয়ন কানেক্টিং সড়ক গুলো জনচলাচলের অযোগ্য হয়ে ৫ইউনিয়ন বাসিদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।

বর্ষা মৌসুমের বৃষ্টিপাত ও জলোচ্ছাসে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামীণ অবকাঠামোর কাঁচা রাস্তাঘাট শুকনো মৌসুমে সংস্কার না করায় জনচলাচলে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তিন দিকে বেষ্টিত পায়রা-পাতাবুনিয়া ও লোহালিয়া নদীর তীরবর্তি ওয়াপদা ভেরিবাঁধ ভেঙ্গে প্রতিবছরই উপজেলার ৫ ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় লেবুখালী, পাংগাশিয়া, মুরাদিয়া, আংগারিয়া ও শ্রীরামপুর ইউনিয়নের শতাধিক কাঁচা রাস্তার ব্যপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।

গ্রামীণ অবকাঠামের ক্ষতিগ্রস্থ কাঁচা রাস্তাঘাটগুলো বিগত কয়েকটি শুষ্ক মৌসুমে যথাযথ মেরামত না করায় জনদুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। লেবুখালী ইউনিয়নের ফকিরবাড়ি থেকে আঠারগাছিয়া নেছারিয়া মাদ্রাসা হয়ে কার্ত্তিকপাশার কাটাখালীর খাল, শ্রীরামপুর ইউনিয়নের পিরতলা বাজার থেকে দক্ষিন দিকে বাদশাবাড়ি হয়ে নাজেম মেম্বারের বাড়ির সামনে ডানিডা সড়ক পর্যন্ত, থানাব্রিজ-জামলা ডানিডা সড়কের খেজুরতলা থেকে গাবতলী বাজার হয়ে মোহাম্মদ হাওলাদার বাড়ি ভায়া তালতলির হাট, আঠারগাছিয়া মাদ্রাসা থেকে কালবার্ড বাজার, মুরাদিয়া ইউনিয়নের পঞ্চায়েত বাজার থেকে মজুমদারবাড়ি লঞ্চঘাট, দক্ষিন মুরাদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে কালে খা গ্রামের মধ্যে দিয়ে সন্তোষ মেম্বারের বাড়ি, বোর্ড অফিস বাজার থেকে সন্তোষদি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় হয়ে ঝিলনা লঞ্চঘাটের পশ্চিম পাড় পর্যন্ত, আংগারিয়া ইউনিয়নের জলিশা বোর্ড স্কুল থেকে রাজাখালী বাসস্ট্যান্ড সড়ক, রূপাসিয়ার সফের মুন্সীর পূল থেকে পশ্চিম ঝাটরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় হয়ে মাদ্রাসা ব্রিজ সড়ক, পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের রাজগঞ্জ খেয়াঘাট থেকে ধোপার হাট হয়ে চানশরীফের বাড়ি পর্যন্ত সড়কসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন কানেক্টিং কাঁচা সড়কগুলো মৌসুমী বৃষ্টিপাত ও জলোচ্ছাসে প্রভাবে প্লাবিত এবং জলাবদ্ধতায় ক্ষয়-ক্ষতি হওয়ায় এখন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

বেশীরভাগ রাস্তার মাটি ক্ষয় হয়ে ও মাঝে মাঝে অনেকাংশ জুড়ে ভেঙ্গে ফসলি জমির সাথে মিশে গেছে। এক সময়ে জনচলাচল উপযুগী রাস্তা হলেও এখন আর তাতে রাস্তার চিহ্নই নাই। দীর্ঘদিন যাবৎ সংস্কারের অভাবে এমনিতেই দেবে পার্শ্ববতি জমির সাথে প্রায় সমতল হয়ে গেছে। তার ওপর গেল বৃষ্টির মৌসুমের টানা বৃষ্টিতে হাটু কাদায় সয়লাব হওয়ায় এখন রাস্তার চেহারা একেবরেই বদলে গেছে। সরেজমিনে বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে গ্রামীণ অবকাঠামোর এসব কাঁচা রাস্তাঘাটের চরম দুরাবস্থার বাস্তব চিত্র দেখা গেছে। অধিকাংশ রাস্তা ভেঙ্গেচুড়ে একাকার হয়ে গেছে।

এসব গ্রামীণ কাঁচা রাস্তায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ছোট ছোট ছেলে-মেয়েসহ এলাকাবাসীদের নিত্য চলাচলে অসহনীয় দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, চলতি শুকনো মৌসুমে অধিকাংশ রাস্তা মেরামত করা না হলে পরবর্তি বর্ষায় রাস্তাগুলোর আরও করুণ দশায় নিপতিত হবে।

লেবুখালীর ইউনিয়নের সাবেক সদস্য মো: হাবিবুর রহমান মিয়া এ প্রসঙ্গে বলেন, টিআর কাবিখা প্রকল্পে প্রতিবছর বরাদ্ধ দেখানো হয়, কিন্ত বাস্তবে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই কাজ না হওয়ায় সড়কগুলোর এমন দুরাবস্থা হয়েছে।

শ্রীরামপুরের সাবেক ইউপি সদস্য মো: ফোরকান আলী মৃধা জানান, বৃষ্টিতে হাটু পরিমান কাদার রাস্তায় ট্রাক্টর চালানোর ফলে রাস্তার অস্তিত্ব নস্ট হয়েছে। মুরাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: জাফর উল্লাহ বলেন, মাটির রাস্তা বর্ষায় ক্ষতি হবে এটা খুবই স্বাভাবিক বিষয়। তবে গেল বছরের মাত্রাতিরিক্ত ভারিবৃষ্টি আর জলোচ্ছাসে প্লাবিত হওয়ায় প্রত্যন্ত এলাকার গ্রামীণ রাস্তা-ঘাটের অস্বাভাবিক ক্ষতি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ কাঁচা সড়ক মেরামতে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। শীঘ্রই রাস্তা মেরামতের কাজে হাত দেয়া হবে।

আংগারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সুলতান আহম্মেদ হাওলাদার জানান, বিষয়টি উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন কমিটির সভায় তোলা হয়েছে। অধিক ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তাগুলো শীঘ্রই জনচলাচলের দুর্ভোগ বিবেচনায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় বরাদ্ধ পেলে মেরামত কাজ শুরু করা হবে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: শাহজাহান সিকদার এ প্রসঙ্গে বলেন, বরাদ্ধ স্বল্পতার কারনে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও রাস্তাগুলো মেরামত করা সম্ভব হয়নি। আগামীতে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামীণ অবকাঠামোর কাঁচা, আধা পাকা ও পাকা রাস্তাগুলো সংস্কার খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্ধের চেষ্টা করা হচ্ছে। কাঙ্খিত বরাদ্ধ এলে অগ্রাধিকার বিবেচনায় উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহন ও বাস্তবায়ন করা হবে।

(এস/এসপি/জানুয়ারি ০৭, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test