E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আশাশুনিতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তিন লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রমানিত

২০১৯ জানুয়ারি ১০ ১৪:৪৬:৩৭
আশাশুনিতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তিন লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রমানিত

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার পূর্ব কাদাকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনন্দ মোহন গাইনের বিরুদ্ধে প্রায় তিন লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশের এক বছর পরও কোন পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি।

পূর্ব কাদাকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আশাশুনি উপজেলার কাদাকাটি ইউনিয়নের পূর্ব কাদাকাটি রেজিষ্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৫ সালে বিদ্যালয়টির সরকারিকরণ করা হয়। দানকৃত এক একর আট শতক জমির মধ্যে বর্তমান মাপ জরিপে ৮৪ শতক জমি স্কুলের নামে রেকর্ড হয়েছে। বাকী জমি কৌশলে রেকর্ড করিয়ে নিয়েছে জমি দাতা গাইন পরিবার।

কাদাকাটি গ্রামের মানিক মণ্ডল, সন্তোষ মণ্ডল ও ভবতোষ কুমার মণ্ডল জানান, বিদ্যায়টির জন্ম লগ্ন থেকে জমি দাতা হওয়ায় আনন্দ মোহন গাইন প্রধান শিক্ষক ও তার বড় ভাইয়ের শ্যালক অরুণ মণ্ডল সহকারি শিক্ষক হিসেবে ওই প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করে আসছেন। একইভাবে প্রধান শিক্ষকের বড় ভাই সুভাষ গাইন ২০১৭ সাল পর্যন্ত স্কুল পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বিগত ২৭ বছরে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি দু’ ভাই মিলে স্কুল ভবনের জায়গা ব্যতিত সকল জমি ইজারা দিয়ে দু’ লাখ ৮৮ হাজার টাকা স্কুলের কোষাগারে না দিয়ে লুটপাট করেছেন।

প্রতিকার চেয়ে তারাসহ গ্রামবাসী ও অভিভাবকগন ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর অফিসার বরাবর অভিযোগ করেন। ওই বছরের ১৮ জুলাই আশাশুনি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুনির আহম্মেদ অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে আনন্দ গাইন দু’ লাখ ৮৮ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন মর্মে উল্লেখ করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করেন। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অহিদুল ইসলাম প্রধান শিক্ষক আনন্দ মোহন গাইনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাসহ প্রশাসনিক বদলীর প্রস্তাব দিয়ে ৩৮১২ নং স্মারকে ২০১৭ সালের ১২ নভেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের খুলনা বিভাগীয় উপ-পরিচালক বরাবর পাঠান। বিধি বাম বুঝতে পেরে আনন্দ মোহন গাইন দানকৃত জমির মধ্যে ৩৮ শতক জমি ফিরে পাওয়ার দাবিতে গত বছরের ৩০ জুন আশাশুনি সহকারি জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় হরিপদ মণ্ডলের ছেলে সত্যরঞ্জন মণ্ডল, বাসুদেব মণ্ডল, শঙ্কর মণ্ডল, জয়দেব মণ্ডল, লাল চাদ মণ্ডল ও লক্ষী কান্ত রায়কে বিবাদী করা হয়।

তারা আরো জানান, গত এক বছরেও আনন্দ মোহন গাইনের বিরুদ্ধে কোন বিভাগীয় ব্যবস্থা গৃহীত না হওয়ায় গত বছরের ৩০ নভেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের খুলনা বিভাগীয় উপ-পরিচালক ও দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর একটি অভিযোগ করেন। এরপরও গত বুধবার পর্যন্ত ওই প্রধান শিক্ষক ও সাবেক সভাপতির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গৃহীত হয়নি।

পূর্ব কাদাকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনন্দ মোহন গাইন বলেন, দানের শর্ত অনুযায়ি তাদের ৩৮ শতক জমি ফেরতযোগ্য । তাই তারা ওই জমি ফিরে পেতে গত বছরের ৩০ জুন আদালতে মামলা করেছেন। তবে গত ২৭ বছরে তিনি যে প্রায় তিন লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন সে টাকা কেন প্রতিষ্ঠানকে ফেরৎ দিলেন না সে কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলবো।

বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের বর্তমান সভাপতি সঞ্জয় কুমার সরকারের সঙ্গে বুধবার সন্ধ্যায় তার মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি রিসিভ করেননি।

প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের খুলনা বিভাগীয় উপ-পরিচালক মেহেরুন্নেছার কাছে বুধবার দুপুরে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, কয়েক মাস আগে তিনি এখানে যোগদান করেছেন। তাই ফাইলপত্র দেখে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

(আরকে/এসপি/জানুয়ারি ১০, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test