E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সুন্দরবনের বাঘ লোকালয়ে, আতংকে দুই গ্রামের মানুষের নির্ঘুম রাত 

২০১৯ জানুয়ারি ১৭ ১৮:০২:২২
সুন্দরবনের বাঘ লোকালয়ে, আতংকে দুই গ্রামের মানুষের নির্ঘুম রাত 

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট :  বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ সংলগ্ন সাউথখালী ইউনিয়নের দুটি গ্রামে রয়েল বেঙ্গল টাইগার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। 

বুধবার রাতে বগী-শরণখোলা ভারানী খাল পার হয়ে সুন্দরবন থেকে একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার লোকালয়ে ঢুকে গর্জন শুরু করলে আতংঙ্কে র্নিঘূম একটি রাত পার করেছে পানিরঘাট ও সোনতলা গ্রামের লোকজন। সকালে এই দুই গ্রামের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বাঘের পায়ের তাজা ছাপ দেখতে পেয়েছে লোকজন।

খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে সুন্দরবন বিভাগ, ওয়াইল্ড টিম, টাইগার টিম (ভিটিআরটি), কমিউনিটি পেট্রোলিং (সিপিজি) গ্রুপের সদস্যসহ কয়েক শত গ্রামবাসী অস্ত্রশস্ত্র, লাঠিসোটা নিয়ে বাঘের খোঁজে তল্লাশীতে নেমে পড়েন। বিকালে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বিকেল সাড়ে ৪টা) বাঘের কোনো সন্ধ্যান মেলেনি। তবে, লোকালয়ে সুন্দরবন বিভাগের নজরদারি অব্যাহত রেখেছে। হ্যান্ডমাইক ও মসজিদের মাইক থেকে এলাকাবসাীকে বাঘের হাত থেকে রক্ষা পেতে মুহু-মুহু সতর্ক বার্তা প্রচার করা হচ্ছে।

বাঘ তল্লাশী অভিযানে অংশগ্রহণকারীরা বলছেন, হয়তো খাল সাতরে লোকালয়ে আসা বাঘটি রাতেই আবার সুন্দরবনে ফিরে গেছে। তবে, রাতে আবার বাঘটি লোকালয়ে ফিরতে পারে। এই আশংকায় এলাকা নজরদারিতে রাখা হয়েছে। গ্রামবাসীকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

সুন্দরবনের ওয়াইল্ড টিমের শরণখোলার মাঠ কর্মকর্তা মো. আলম হাওলাদার বলেন, ভোরে গ্রামবাসীর মাধ্যমে বাঘ আসার পেয়ে ভিটিআরটি ও সিপিজি গ্রুপের সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। এসময় সুন্দরবন বিভাগকে খবর দেওয়া হলে শরণখোলার রেঞ্জ কর্মকর্তার নেতৃত্বে বন বিভাগের একটি দলও সেখানে আসেন। পরে গ্রাবসাীদের নিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। কিন্তু বাঘের কোনো সন্ধান না পেলেও বাঘের পায়ের তাজা ছাপ সবখানেই দেখা গেছে।

সোনতলা গ্রামের আ. সালাম মোল্লা, আউয়াল মাতুব্বরসহ অনেকই জানান, রাত ১টা দেড়টার দিকে বাঘের গর্জন শুনতে পেয়েছেন তারা। ভোরে তারা সুন্দরবন বিভাগসহ ওয়াইল্ড টিমের সদস্যদের খবর দেন। বর্তমানে গ্রামের মানুষের মধ্যে বাঘ আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাস্তাঘাটেও লোকজন সতর্কভাবে চলাফেরা করছে।

বাগেরহাটের পূর্ব সন্দরবনের শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) মো. শামসুল হক বলেন, ভোরে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে লোকালয়ে বাঘ আসার খবর পাই। পরে রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। তবে গ্রামের বনজঙ্গল ও পরিত্যাক্ত ঘরবাড়ি তল্লাশি করা হয়েছে। প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা নিয়ে রাতে বাঘটি বিচরণ করেছে। সবখানেই বাঘের পায়ের তাজা ছাপ পাওয়া গেছে। ধারনা করা হচ্ছে রাতেই বাঘটি সুন্দরবনে ফিরে গেছে।

তবে, রাতে আবার বাঘটি লোকালয়ে ফিরতে পারে। সেজন্য এলাকা নজরদারিতে রাখা হয়েছে। রাতে সুন্দরবনের বগী স্টেশন, তেড়াবেকা টহল ফাঁড়ি ও শরণখোলা স্টেশনের বনরক্ষীরা নদীতে টহলে থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া লোকালয়ে ওয়াইল্ড টিম, ভিটিআরটি ও সিপিজি সদস্যরাও সুন্দরবন বিভাগের সাথে টহলে থাকবে। আতঙ্কিত গ্রামবাসীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

(এসএকে/এসপি/জানুয়ারি ১৭, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test