E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রাণীনগরে মন্দিরের সম্পত্তি জবরদখলের অভিযোগ

২০১৯ জানুয়ারি ২৮ ১৭:৫৭:১১
রাণীনগরে মন্দিরের সম্পত্তি জবরদখলের অভিযোগ

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগরে মন্দিরের প্রায় ৩ একর ৭ শতক ফসলী জমি জোর পূর্বক দখলের অভিযোগ উঠেছে। মন্দিরের বর্তমান কমিটি দায়িত্ব গ্রহণের পর দখলীয় সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।

পুলিশের উর্ধতন কতৃপক্ষ অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্তের জন্য রাণীনগর থানা পুলিশকে নির্দেশ দিলে এসআই মোঃ শহিদুল ইসলাম ইতোমধ্যেই তদন্ত কাজ সম্পূর্ণ করেছেন বলে জানা গেছে।

দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি মন্দিরের সম্পত্তি জবর দখল করে চাষাবাদ করলেও উৎপাদিত ফসল থেকে মন্দিরের সেবায় কোন প্রকার হিস্যা না দেয়ায় অর্থাভাবে মন্দিরের অনেক অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করায় বিবাদীরা মন্দির কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকিও দিচ্ছে বলে ওই মন্দিরের সেবায়েতরা জানান।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলা সদরের খট্টেশ্বর গ্রামে অবস্থিত শ্রী শ্রী গোপিনাথ মন্দিরের নামে বর্তমানে প্রায় ৭ একর ৩৩ শতক আবাদী জমি রয়েছে। উপজেলার কাশিমপুরের জমিদার প্রসন্ন লাহিড়ী তৎকালীন ওই মন্দিরের সেবায়েত কৈলাশ চন্দ্র প্রামানিকসহ ৭ জন সেবায়েতকে সম্পত্তি পরিচালনার দায়িত্বভার প্রদান করেন। যার সিএস খতিয়ান নং ৫০৫ এবং সিএস খতিয়ান নং ৫০৬, জেএল নং ৬৯, মৌজা- খট্টেশ্বর রাণীনগর, রকম- ধানী, পরিমাণ-৭ একর ৩৩ শতক।

১৯৬২ সালে এসএ খতিয়ান উপরোক্ত সেবায়েতদের নামে রেকর্ডভূক্ত হয়। পরবর্তীতে ১৯৬৮ সালে মাঠ জরিপে ওই মন্দিরের সেবায়েত সুধীর কুমার সরকারসহ ১৫ জন সেবায়েতের নামে সম্পত্তি রেকর্ড হয় এবং ১৯৭২ সালে ওই ১৫ জন সেবায়েতের নামেই চূড়ান্ত খতিয়ান প্রস্তুত হয়। যার আরএস খতিয়ান নং- ১০১৩, জেএল নং-৩১, মৌজা: খট্টেশ্বর রাণীনগর, রকম-ধানী, পরিমাণ-৭ একর ৩৩ শতক।

এদিকে ওই মন্দিরের মোট সম্পত্তির মধ্যে প্রায় ৩ একর ৭ শতক জমি ওই গ্রামের মৃত ছকি মোল্লার ছেলে সফির উদ্দিন মোল্লা ১৬০ শতক, মৃত দশরত সরদারের ছেলে মোঃ বাছের আলী সরদার, তাছের আলী সরদার ও মৃত রহমান সরদারের ছেলে বাচ্চু সরদার ১১৫ শতক এবং মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে মোঃ সাফি প্রাং ৩২ শতক জমি জোর পূর্বক ভোগ দখল করছে। বিবাদীরা প্রভাবশালী হওয়ায় জমিতে উৎপাদিত ফসল থেকে মন্দিরের সেবায় কোন প্রকার হিস্যা না দেয়ায় অর্থাভাবে মন্দিরের অনেক অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করায় মন্দির কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে বিবাদীরা।

শ্রী শ্রী গোপিনাথ মন্দিরের সভাপতি শ্রী দিবাকর চন্দ্র সরকার বুদন জানান, লিখিত অভিযোগে উল্লেখিত ব্যক্তিরা প্রভাবশালী হওয়ায় মন্দিরের হিস্যা প্রদান তো দূরের কথা তারা এখন ওই জমির মালিক হিসেবে দাবি করছে। সম্পত্তি গুলো জোর পূর্বক দখল করার কারণে দীর্ঘদিন ধরে মন্দিরের অনেক ধর্মানুষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করায় আমাদেরকে দখলকারিরা বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। দখলকৃত সম্পত্তি দখলমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ জানান তিনি।

অপরদিকে বিবাদীদের দাবি, ১৯৬৩ সালে ওই মন্দিরের সেবায়েত সুধীর চন্দ্র শীল ও সূর্য্যকান্ত শীল মন্দিরের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য তাদের অংশ আমাদের কাছে বিক্রি করেছে। সেই থেকে আমরা ওই সম্পত্তিতে চাষাবাদ করে আসছি। ১৯৭২ সালে ভুলক্রমে মন্দিরের সেবায়েতদের নামে জমিগুলো রেকর্ড হয়েছে। আমরা খুব তারাতারি আদালতে রেকর্ড সংশোধনী মামলা দায়ের করবো এবং আদালতের মাধ্যমেই জমির যে সব জটিলতা আছে তা সমাধান করবো।

উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারি কমিশনার (ভূমি) টুকটুক তালুকদার জানান, এবিষয়ে আমার দপ্তরে এখনও কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। তবে দেবোত্তর সম্পত্তি কোন ক্রমেই সেবায়েতরা বিক্রি করার ক্ষমতা রাখে না। এবিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(বিএম/এসপি/জানুয়ারি ২৮, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test